Lok Sabha Election 2024

বড় ফুল ছোট করার লড়াই বিধায়ক জুনের

স্থানীয় রাজনীতিতে জুনের সঙ্গে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার সম্পর্ক শীতল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ১০:২০
Share:

নাম ঘোষণার পরেই শুরু দেওয়াল লিখন। মেদিনীপুর শহরের চিড়িমারসাইতে। নিজস্ব চিত্র।

ইঙ্গিত ছিলই। রবিবাসরীয় ব্রিগেডে জনগর্জন সভায় মিলল শিলমোহর। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জুন মালিয়ার নাম ঘোষিত হল। দিদি তাঁর পছন্দের জুনকে লড়াইয়ের বড় ময়দান দিলেন। মোট ১১ জন বিধায়ককে এ বার লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে শাসকদল। জুন তাঁদেরই একজন।

Advertisement

মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদ বিজেপির দিলীপ ঘোষ। তবে এ বার এখনও এই কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি বিজেপি। দিলীপ প্রার্থী হলে লড়াই হবে পোড়খাওয়া রাজনীতিকের সঙ্গে বিধায়ক হিসেবে প্রায় তিন বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জুনের। লড়াইটা কি কঠিন? জুন বলছেন, ‘‘কঠিনের কী আছে? যুদ্ধ- যুদ্ধই, লড়াই- লড়াই-ই। যুদ্ধে নেমেছি যখন লড়াই তো করবই।’’ মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুড়ছেন, ‘‘আড়াই-তিন বছর ধরে মেদিনীপুরে কাজ করেছি। মেদিনীপুরের মানুষ নিশ্চয়ই আশীর্বাদ করবেন।’’ আজ, সোমবারই মেদিনীপুরে আসতে পারেন জুন। যেতে পারেন মন্দির, মসজিদ, গির্জায়। জুন বলছেন, ‘‘মেদিনীপুরে আসার ইচ্ছে সোমবারই।’’

স্থানীয় রাজনীতিতে জুনের সঙ্গে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার সম্পর্ক শীতল। যদি জুনের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হওয়া পর সুজয় বলছেন, ‘‘সারা রাজ্যে আমাদের ৪ কোটি সমর্থক আছেন। ৪২ জন প্রার্থী। দল যাঁকে প্রার্থী করেছে, তাঁকে সামনে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভোট করতে হবে। একটাই লক্ষ্য, এই সিটে লক্ষাধিক ভোটে দলের প্রার্থীকে জেতানো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সিটটা দেওয়া।’’

Advertisement

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করাচ্ছেন, লোকসভায় মেদিনীপুরে যে জুনই প্রার্থী হবেন, সে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভাতেও মমতার কথায় আকারে হলেও এ নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছিল। বোঝা গিয়েছিল, মেদিনীপুরে ‘দিদি’র পছন্দ জুনই। কেমন? জুন মেদিনীপুরের বিধায়ক। ওই দিন কেশিয়াড়ির সঙ্গেও তাঁকে জুড়েছিলেন মমতা। কেশিয়াড়ি এলাকা মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। কেশিয়াড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নীতকরণ হবে। এর ‘কৃতিত্ব’ স্থানীয় বিধায়কের পাশাপাশি জুনকেও দিয়েছিলেন মমতা। গত জানুয়ারিতে কালীঘাটে জেলা নেতাদের বৈঠক হোক বা সম্প্রতি মেদিনীপুরের বৈঠক—সুজয়কে মমতার নির্দেশ ছিল, জুনের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে।

দিলীপকে কি দেখা যাবে এই কেন্দ্রে? রবিবার কেশিয়াড়িতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দিলীপ বলেন, "সেটা দল ঠিক করবে। আগে অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়কে মানুষ এখানে ভোট দিয়ে জিতিয়েছিলেন। মানুষ তাঁকে কোনওদিন দেখতে পায়নি। মেদিনীপুরের মানুষ চিন্তাভাবনা করবেন কাকে ভোট দেওয়া উচিত।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘জোড়াফুলের দিন শেষ। মেদিনীপুরে ভোট এ বারও পদ্মফুলে।’’

জুনের প্রতি দিদির বরাবরই অপত্য স্নেহ। সেই স্নেহেরই প্রতিফলন বড় ময়দানে লড়াইয়ের সুযোগ। এ বার জুনের লড়াই বড় ফুলকে হারানো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন