Lok Sabha Election 2024

বিদ্রোহী বিধায়ক, নিরাপত্তা প্রত্যাহার কেন্দ্রের! আক্রান্ত হলে দায় শাহ-রাজুর, তোপ বিষ্ণুর

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কার্শিয়াং থেকে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মাকে প্রার্থী করে পদ্মশিবির। জয়ী হলে তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছিল এক্স ক্যাটেগরির নিরাপত্তা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৪২
Share:

(বাঁ দিক থেকে) অমিত শাহ, রাজু বিস্তা, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। —ফাইল চিত্র।

দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ফলস্বরূপ নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হল বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মার। শুক্রবার গভীর রাতে কার্শিয়াং বিধায়কের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর পর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য ক্ষুব্ধ বিষ্ণুপ্রসাদ দায়ী করছেন বিজেপি নেতৃত্বকে। তাঁর বক্তব্য, নিরাপত্তা তোলার পর তিনি আক্রান্ত হলে দায়ী থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। শনিবার গভীর রাতে বিষ্ণুপ্রসাদ তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহারের কথা জানতে পারেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কার্শিয়াং থেকে তাঁকে প্রার্থী করে পদ্মশিবির। জয়ী হলে তাঁকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেওয়া হয়েছিল ‘এক্স’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা। বিষ্ণুপ্রসাদের দাবি, এখনও তাঁর উপরে আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তাই তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। বিষ্ণুপ্রসাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিজেপির পার্টি অফিসের মতো আচরণ করছে। তিনি আক্রান্ত হলে ঘটনার জন্য দায়ী থাকবেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দার্জিলিংয়ের বিদায়ী সংসদ-সদস্য।

Advertisement

প্রসঙ্গত, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী সাংসদ রাজু। তাঁর মনোনয়নের বিরোধিতা করে ওই কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন বিষ্ণুপ্রসাদ। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি-সহ ভূমিপুত্রকে সাংসদ করার দাবিতে এই অবস্থান নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। পাহাড়ের সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতারা অনেক বুঝেও নিরস্ত করতে পারেননি বিষ্ণুপ্রসাদকে। অগত্যা হাল ছেড়ে দিয়ে বিদ্রোহী বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বিজেপি। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, লোকসভা ভোট মিটে গেলেই সাংগঠনিক ভাবে বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে বিজেপি। তার ইঙ্গিত হিসেবেই বিষ্ণুপ্রসাদের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সেফটি পিন প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করছেন বিষ্ণুপ্রসাদ। সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের যে রাজনৈতিক শক্তিই পৃথক রাজ্যের দাবিতে ভোট চাইবে, তাদের হয়েই প্রচারে নামবেন তিনি। বিদ্রোহী বিধায়কের এমন কথা জানার পরেই তাঁর সঙ্গে দূরত্ব রচনা শুরু করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

তবে এ প্রসঙ্গে বাংলার রাজনীতির কারবারিদের মত, আপাতদৃষ্টিতে বিষ্ণুপ্রসাদের অবস্থান বিজেপির পক্ষে অস্বস্তির হলেও, আখেরে তাতে পদ্মের সুবিধাই হয়েছে। কারণ, বাংলার শাসকদল তৃণমূল প্রায়শই অভিযোগ করে, বাংলা ভাগ করতে চাইছে বিজেপি। এ ক্ষেত্রে দলের প্রতীকে জয়ী বিধায়ক পৃথক রাজ্যের দাবিতে ভোটে দাঁড়ানোয় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বিজেপি। তাই কৌশলগত ভাবে বিজেপি যে বাংলা ভাগের পক্ষে নয়, তা বিষ্ণুপ্রসাদের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে পদ্মশিবির। উত্তরবঙ্গের এক বিজেপি বিধায়কের কথায়, “বিজেপি বিধায়ক হিসেবে সুযোগ-সুবিধা নেব। আবার বিজেপি প্রার্থীর বিরোধিতা করে ভোটে দাঁড়িয়ে দলকে অস্বস্তিতে ফেলব, দু’টি একসঙ্গে হতে পারে না। যদি বিষ্ণুপ্রসাদ নিজের বিধায়ক পদ ছেড়ে ভোটের লড়াই করতেন, তা হলে আমাদের কিছু বলার থাকত না।” তিনি আরও বলেন, “বিষ্ণু কেন্দ্রের নিরাপত্তা পেয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক হিসেবেই। তিনি যখন দলের বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়ে বিরোধিতায় নেমে পড়েছেন, তখন দলও আর তাঁর প্রতি নরম মনোভাব দেখাতে রাজি নয়।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন