—প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতীয় সেনা নিয়োগে অগ্নিপথ যোজনা নিয়ে আজ মাঠে নামল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, এই নিয়োগের নাম করে আসলে দেশের দু’লাখ যুবকে ঠকাচ্ছে মোদী সরকার। আজ এক দিকে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে চিঠি লিখেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে। তার পরই দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সচিন পাইলট দাবি করলেন, ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস সরকার সেনায় নিয়োগে ‘অগ্নিপথ’ ব্যবস্থা তুলে দেবে। এখানেই না থেমে রাষ্ট্রপতিকে লেখা দলের সভাপতির চিঠি ট্যাগ করে নিজেদের এক্স হ্যান্ডল-এ পোস্ট করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা বঢরা। রাহুলের কথায়, “আমরা সব সময় সেনার পাশে আছি।” প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, “শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা সেনাবাহিনী দেশের জন্য লড়াই করে। তাঁদের স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে বৈষম্যমূলক নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য।”
পদাধিকার বলে রাষ্ট্রপতি হলেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান। কংগ্রেস সভাপতি তাই রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেছেন, ‘সেনায় নিয়োগের এই ব্যবস্থায় বাহিনীর মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে। এই ব্যবস্থা তুলে দেওয়া বাঞ্ছনীয়।’ প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ভারত সরকার সেনায় অগ্নিবীর যোজনা চালু করে। এই ব্যবস্থায় ১৭ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত যুবক-যুবতীদের চার বছরের জন্য নিয়োগ করা হয়। এই যোজনায় চার বছর পর ২৫ শতাংশকে রেখে বাকিদের বসিয়ে দেওয়া হবে। সার্ভিসে থেকে যাওয়া ২৫ শতাংশ সেনা আরও এগারো বছর চাকরি করতে পারবেন। খড়্গের বক্তব্য, “এই ব্যবস্থা অমানবিক এবং সেনাবাহিনীর জন্য ক্ষতিকর। এই ভাবে দু’লাখ যুবকে ঠকানো হয়েছে।” যদিও সরকার ও সেনা কর্তাদের বক্তব্য, বাহিনীতে বিপুল শূন্যপদ পূরণ এবং সেনার বেতন খাতে ব্যয় সংকোচের লক্ষ্যেই অগ্নিবীর যোজনা চালু করা হয়েছে।
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে সচিন পাইলট এই যুবদের ভবিষ্যতের কথা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, “যাঁরা চার বছর চাকরি করার পর অবসর নেবেন, তাঁরা তখনও যুবই থাকবেন। কিন্তু তাঁদের ভবিষ্যৎ ঘোর অনিশ্চিত। তাঁরা পেনশন পাবেন না এবং ১১ লক্ষ টাকার গ্র্যাচুইটির অর্ধেক তাঁদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে। সুতরাং, খরচ কমানোর নামে, আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে খেলছি।” তাঁর কথায়, “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব ও কঠোর পরিশ্রমের কোনও তুলনা হয় না। আমরা বিশ্বের সেরা যোদ্ধা বাহিনী। আমাদের সেনাবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী কারও পিছনে নেই। কিন্তু তাঁদের বীরত্ব, শক্তি, দেশের জন্য আত্মত্যাগ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা বিবেচনা করা উচিত এবং সম্মান করা উচিত। আমি মনে করি, সরকার তাড়াহুড়ো করে এটি করেছে এবং আমরা এর বিরোধিতা করছি। আমাদের দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধী গোড়া থেকেই এই ব্যবস্থার বিরোধিতা করে আসছেন। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত বহু সেনাকর্তাও এই ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। আজ খড়্গের দাবি, অগ্নিপথ স্কিমেও দু’লাখের বেশি প্রার্থী পরীক্ষায় পাশ করে বসে আছেন। তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না। সম্প্রতি এমনই কয়েক জন প্রার্থী তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা বলেছেন বলে এ দিন জানান খড়্গে।