Lok Sabha Election 2024

ছোট বৈঠকে জোর সিপিএমের

প্রতীকের সঙ্গে লেখা হয়েছে সব ক্ষেত্রে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তৃণমূল এবং ‘দুর্নীতির’ প্রশয়দাতা বিজেপিকে পরাস্ত করুন।

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

কালনা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৫:৪৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

এক সময়ের ‘লাল দুর্গ’ বলে পরিচিত পূর্ব বর্ধমানে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রে সিপিএমের ভোট অনেকটাই কমে যায়। স্থানচ্যুত হতে হয়। তাই নিজেদের স্থান ফিরে পেতে নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা বা প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই দলের নেতা-কর্মীরা নেমে পড়েছেন মাঠে। পঞ্চায়েত স্তরে বুথগুলিকে শক্তিশালী করার জন্য ছোট ছোট বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।ভোট-ব্যাঙ্ক বাড়াতে তাঁরা জোর দিচ্ছেন তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের ভোটের দিকেও। তৃণমূল ও বিজেপি অবশ্য বিষয়টিতে আমল দেয়নি।

Advertisement

পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০১৪-য় এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র দাস পেয়েছিলেন ৪,৬০,১৮১টি ভোট। ২০১৯-এ ঈশ্বরচন্দ্র ভোট পান ১,৭৫,৯২০টি। এ বার সিপিএমকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি প্রার্থী পরেশচন্দ্র দাস। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৫,৫১,৫২৩টি।

তাই পুরনো মর্যাদা ফিরে পেতে কোথাও খামতি রাখতে চান না সিপিএম নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই কালনার ধাত্রীগ্রাম, সিমলন-আটঘোরিয়া, কাঁকুড়িয়া, বেগপুরের মতো পঞ্চায়েতগুলিতে দলীয় প্রতীক এঁকে প্রচারে নেমে পড়েছেন কর্মী-সমর্থকেরা। কোথাও প্রতীকের সঙ্গে লেখা হয়েছে সব ক্ষেত্রে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তৃণমূল এবং ‘দুর্নীতির’ প্রশয়দাতা বিজেপিকে পরাস্ত করুন। আবার কোথাও দেওয়ালে চুন দেওয়ার কাজ সেরে রাখছেন।একই সঙ্গে বুথগুলিকে শক্তিশালী করার জন্য ছোট ছোট বৈঠকে জোর দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় বৈঠকগুলিতে উপস্থিত থাকছেন জেলার নেতারা।

Advertisement

এক সিপিএম নেতার কথায়, “দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের ভোট ব্যাঙ্কের একটা বড় অংশ ছিল তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের ভোট। তার একাংশ যাতে ফিরে আসে, তার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি, চাষিদের ফসলের দাম না পাওয়া-সহ নানা বিষয় নিয়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। সব মিলিয়ে এ বার আমরা নিজেদের ভোট অনেকটা ফিরে পাব বলে আশা করছি।” পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক তথা সিপিএম নেতা প্রদীপ সাহা বলেন, “দেওয়াল চুন দেওয়া, ছোট ছোট বৈঠক-সহ নির্বাচন উপলক্ষে দল নেমে পড়েছে।” ভাল সাড়া মিলছে বলে দাবি তাঁর। দলের জেলা কমিটির সদস্য সুকুল শিকদারের দাবি, “সন্ত্রাসের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের ভোট ১০ শতাংশ বেড়েছে জেলায়। বিজেপির ভোট কমেছে।” তিনি বলেন, “তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে পঞ্চায়েত স্তরে বুথকে মজবুত করতে ছোট ছোট সভার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। আশা করি ফল ভাল হবে।”

তৃণমূল অবশ্য সিপিএমকে নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। দলের রাজ্য মুখপত্র তথা কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, “সিপিএমকে নিয়ে মানুষের আস্থা অনেকদিন আগেই চলে গিয়েছে। তা আর ফিরবে না। যে ভাবে সরকার উন্নয়ন করেছে, তাতে তৃণমূলের প্রতি সাধারণ মানুষ আস্থা রাখবে।”

বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “মানুষ জানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই এক মাত্র বিজেপি করতে পারে। তাই সিপিএম কী করছে, তা নিয়ে আমাদেরআগ্রহ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন