Lok Sabha Election 2024

দেশের সীমান্তে ও রাজ্যের সীমানায় নজরদারিতে জোর

পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত ভোটের অভিজ্ঞতাকে মানদণ্ড হিসেবে দেখার কথা এ দিন কমিশন আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই প্রতিটা বুথের স্পর্শকাতরতা জরিপ হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৯
Share:

জাতীয় নির্বাচন কমিশন। — ফাইল চিত্র।

ভোট-আবহে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে চোরাই সোনা, মাদক ঢোকানোর মতো পাচার-কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সতর্ক করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সশস্ত্র সীমা বল এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আলাদা করে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত ভোটের অভিজ্ঞতাকে মানদণ্ড হিসেবে দেখার কথা এ দিন কমিশন আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই প্রতিটা বুথের স্পর্শকাতরতা জরিপ হচ্ছে।

লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে ইতিমধ্যেই নদিয়ার গেদে লাগোয়া সীমান্তে কয়েক কোটি টাকা সোনা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। কমিশনের নির্দেশ, বিশেষত ভোটের ৭২ ঘণ্টা আগে আন্তর্জাতিক সীমান্ত একেবারে আঁটোসাঁটো রাখতে হবে। বুধবার ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি রাজ্যের পুলিশ, আধা সেনা, আমলা ও সব ক্ষেত্রের শীর্ষ আধিকারিককে নিয়ে বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দেন। দুই নির্বাচন কমিশনার—জ্ঞানেশ কুমার ও সুখবীর সিংহ সান্ধুও বৈঠকে ছিলেন। চার ঘণ্টার ভিডিয়ো কনফারেন্স মারফত বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে মুখ্য সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকা এবং ডিজি সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

পাঁচ বছরে এ হল দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকগুলির একটি এবং এর সঙ্গে দেশের সম্মান জড়িয়ে বলে প্রথমেই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সবাইকে সতর্ক করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বছর ৭০টি দেশে ভোট হবে। এর মধ্যে বৃহত্তম এবং সব থেকে পুরনো গণতন্ত্র বলে সবাই ভারতের দিকে তাকিয়ে। আমরা সম্পূর্ণ দাগহীন ভোট করাতে বদ্ধপরিকর। সবার জন্য সমান খোলা জমিতে সম্পূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট করাতে চাই।’’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কমিশনের নির্দেশ, দেশের সীমান্ত এবং রাজ্যগুলির সীমানায় চেকপোস্ট স্থাপন করে কড়া নজরদারি চালাতে হবে। একই সঙ্গে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদান এবং সমন্বয়ের উপরে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকেও রাজ্যের সীমানাগুলিতে কড়া নজরদারি এবং তল্লাশি চালানোর বার্তা দিয়েছে দিল্লির নির্বাচন সদন।

কমিশনের নির্দেশ, ভুয়ো ভোটার এবং তাঁদের ভোট রুখতে নির্বাচনের দিনের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে বন্ধ রাখতে হবে আন্তঃরাজ্য সীমানাগুলি। প্রতিবেশী রাজ্যের জেলা প্রশাসনের মধ্যে নিয়মিত সমন্বয় বৈঠক করতে হবে। ভোটের দিন অন্য রাজ্যের সঙ্গে থাকা সীমানা পুরোপুরি বন্ধ (সিল) রাখার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। রাজ্যগুলির মধ্যে অথবা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নগদ, মদ, মাদক রুখতে নজরদারি এবং হানার সঙ্গে সিসি ক্যামেরা বসানোর উপর জোর দিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে, পুলিশ, আবগারি, পরিবহণ দফতর, জিএসটি ও বন দফতর একযোগে হানা দেবে সম্ভাব্য এলাকাগুলিতে। হেলিপ্যাড, বিমানবন্দর, বাস স্ট্যান্ড, রেল স্টেশনেও নজরদারি বাড়াতে
বলা হয়েছে।

মদ-মাদক কারবারের মাথাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কোন পথে সেগুলির আসাযাওয়া রয়েছে তা বুঝে সেখানে নজরদারি বাড়াতে হবে। কমিশনের নির্দেশ, মায়ানমার, নেপাল, বাংলাদেশ, চিন সীমান্তে নজরদারি শক্তপোক্ত থাকবে। সমুদ্রপথে সীমান্তের নজরদারি থাকবে উপকূল রক্ষী বাহিনীর হাতে। মণিপুর, ছত্তীসগঢ়, জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা আলোচনা হয়েছে এ দিনের বৈঠকে। মহারাষ্ট্র, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে দুর্গত এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে হেলিকপ্টারে সরানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন