Lok Sabha Election 2024

বকেয়া অর্ধেক গ্রেফতারি পরোয়ানা 

জেলায় এখনও পড়ে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানার মধ্যে ১৪০টি ছ’মাসের বেশি পুরনো। যার মধ্যে ১৩৪টি ক্ষেত্রে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ০৯:৩৩
Share:

বিষ্ণুপুরে বৃহস্পতিবার সকালে আধাসেনার টহল। নিজস্ব চিত্র।

নির্বাচন সন্ত্রাসমুক্ত করতে জেলায় জেলায় বকেয়া জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা দ্রুত কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যদিও বাঁকুড়া জেলা পুলিশ গত আড়াই মাসে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা ৪৮ শতাংশ কার্যকর করতে পেরেছে। কিন্তু নির্বাচন ঘোষণার সময় চলে এলেও কেন এখনও বাকি ৫২ শতাংশ অধরা, সেই প্রশ্ন তুলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।

Advertisement

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, গত ডিসেম্বরে নির্বাচন কমিশনের তরফে জেলায় জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে সময় জেলায় এমন ৪৭২টি গ্রেফতারি পরোয়ানা বকেয়া ছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪৯।

জেলায় এখনও পড়ে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানার মধ্যে ১৪০টি ছ’মাসের বেশি পুরনো। যার মধ্যে ১৩৪টি ক্ষেত্রে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। ইতিমধ্যে সেগুলির ৬৬টি গ্রেফতারি পরোয়ানায় আদালতের তরফে পলাতক বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বাকিগুলির ক্ষেত্রেও আদালতের নির্দেশিকা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Advertisement

বাঁকুড়ার জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের পরেই গ্রেফতারি যোগ্য পরোয়ানা কার্যকর করার বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে থানায় থানায়। ইতিমধ্যেই জেলায় বকেয়া প্রায় অর্ধেক গ্রেফতারিযোগ্য পরোয়ানা কার্যকর করা বা আইনানুগ পদক্ষেপ করা হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত গতিতে শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।” পুলিশ কর্তাদের একাংশের কথায়, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে দাগি অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করে কমিশন। সে জন্য জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় জড়িত অথবা খুন, ধর্ষণের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জোর দেয় কমিশন।

কাগজে-কলমে পুলিশ সেই কাজে গতি দেখালেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছে না। তারা গত পঞ্চায়েত নির্বাচন ও অতীতের লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে জেলায় নানা সন্ত্রাসের ঘটনার কথা তুলে ধরেছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা।

সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইন্দাস, পাত্রসায়রের মতো বিভিন্ন এলাকায় যাঁরা আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দিয়েছিল বলে আমরা অভিযোগ দিয়েছিলাম, তাঁরা এখনও বহাল তবিয়তেই ঘুরছে। পুলিশ কাগজে কলমে কাজ দেখালেও বাস্তবে উল্টো ছবিই দেখছি আমরা।”

বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখারও অভিযোগ, “অতীতে নির্বাচনে বা বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনায় যাঁদের হিংসাত্মক ভূমিকায় দেখা গিয়েছে, তারা নিয়মিত থানায় গিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করছেন। দুষ্কৃতীদের সত্যিই যদি গ্রেফতার করে থাকে, তাহলে থানায় থানায় তালিকা প্রকাশ করা হোক। আমরা সেই তালিকা মিলিয়ে দেখব।”

তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ মানতে চায়নি। তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার দলীয় প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “সিপিএম, বিজেপিই একজোট হয়ে নানা এলাকায় উস্কানি দিয়ে অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করে। দুষ্কৃতীরা তো সব ওই দু’টি দলের হয়েই কাজ করে। তাই ওদের এ সব বলা মানায় না।।

জেলা পুলিশের দাবি, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে যা যা করণীয় সবই করা হচ্ছে। কোথাও কোনও রকম ফাঁক রাখা হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন