Lok Sabha Election 2024

ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা অত্যন্ত জরুরি  

লোকসভা ভোট নিতে গিয়ে জেলার কোনও ভোটকর্মীর যাতে বিপদ না হয়, সে দিকে পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের বাড়তি নজর দেওয়া উচিত।

Advertisement

শুভব্রত দাস

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

আগামী, ২৬ এপ্রিল রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের ভোট। এক জন ভোটকর্মী হিসেবে আমারও ভোট নেওয়ার সরকারি ডিউটি পড়েছে। এ বার আমার চাকুলিয়ায় ভোটের ডিউটি পড়েছে। ২৫ এপ্রিল সকালেই রায়গঞ্জ থেকে ইসলামপুরে পৌঁছতে হবে। তার পর সেখান থেকে গাড়িতে করে ভোট নেওয়ার জন্য বুথে যাব। ভোটকর্মী হিসেবে ভোট নিতে গিয়ে কোনও অশান্তির মাঝে পড়তে হবে কি না, সেই প্রশ্নে আমার দুশ্চিন্তা বাড়ছে। পরিবারের লোকেরাও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

Advertisement

তবে, শুনেছি এ বারে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোট নেওয়া হবে। কিন্তু, বুথে কত জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান থাকবেন, বুথে গন্ডগোল হলে ভোট চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয় থাকবে কি না, ভোটকর্মীরা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাবেন কি না, এমন নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকেই বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি নেন। কিন্তু, এক জন সরকারি কর্মী হিসেবে ভোটের ডিউটি করা আমার কর্তব্য বলেও আমি মনে করি। কিন্তু, সে জন্য ভোটসামগ্রী বিতরণ ও ভোট গ্রহণ কেন্দ্র থেকে বুথ পর্যন্ত যাওয়া, বুথে ভোট নেওয়ার সময় ও ইভিএম মেশিন নিয়ে ভোটসামগ্রী বিতরণ ও গ্রহণ কেন্দ্রে ফেরা পর্যন্ত ভোটকর্মীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রয়োজন। এই নিরাপত্তার অভাববোধ করার কারণে অনেক সরকারি কর্মী বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে ভোটের ডিউটি থেকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য হন। ২০১৮ সালের ১৪ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ভোট চলাকালীন ইটাহারের একটি বুথ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়। রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরের বাসিন্দা রাজকুমার করণদিঘির রহটপুর হাই মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। পরের দিন, রাতে রায়গঞ্জের সোনাডাঙ্গি এলাকার রেললাইন থেকে তাঁর ‘ছিন্নভিন্ন’ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা রাজ্যের সমস্ত ভোটকর্মীকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ওই ঘটনার পর পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। সরকারি ভাবে রাজকুমার চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানানো হয়। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্যের এক দিন নিশ্চয় কিনারা হবে। কিন্তু, লোকসভা ভোট নিতে গিয়ে জেলার কোনও ভোটকর্মীর যাতে বিপদ না হয়, সে দিকে পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের বাড়তি নজর দেওয়া উচিত।

ভোটসামগ্রী বিতরণ ও গ্রহণ কেন্দ্র থেকে বুথ পর্যন্ত ভোট নিতে যাওয়া ও ভোটের পরে বুথ থেকে ভোটসামগ্রী বিতরণ ও গ্রহণ কেন্দ্রে ফেরা পর্যন্ত ভোটকর্মীদের সঙ্গে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকা জরুরি। ভোট চলার সময়ে বুথেও পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকতে হবে। তা হলেই ভোটকর্মীরা নিশ্চিন্তে ভোট নিতে যেতে পারবেন। তাঁদের পরিবারও নিশ্চিন্তে থাকবেন। কারণ, ভোটগ্রহণ বা ভোট দান দেশ বা রাজ্যের সরকার গড়ার এক গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। সুতরাং এই প্রক্রিয়া জনগণের বিপদের কারণ হোক, তা কখনওই কাম্য নয়।

Advertisement

(শিক্ষক, রায়গঞ্জের রামপুর ইন্দিরা উচ্চ বিদ্যাপীঠ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন