Dev on Politics

‘রাজনীতি ছাড়ব বলে আর নাকে কাঁদব না’, টানাপড়েন নিয়ে প্রশ্নে দেব বললেন আনন্দবাজার অনলাইনকে

২০১৪ সালে প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়ে ঘাটাল থেকে জিতেছিলেন দেব। ২০১৯ সালেও তাঁর জিততে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু এ বার ভোটে দাঁড়াবেন না বলে দু’বছর আগে থেকেই প্রকাশ্যে বলে দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৪ ১১:৫০
Share:

লোকসভা ভোটের প্রচারে দেব। —ফাইল ছবি।

দু’বছর আগে থেকেই তিনি বলা শুরু করেছিলেন, আর রাজনীতিতে তিনি থাকবেন না। অর্থাৎ, ২০২৪ সালে আর ভোটে দাঁড়াবেন না। বিগত লোকসভার অন্তিম অধিবেশনে রাজনীতি ছাড়ার বিষয়টি কার্যত পাকাই করে ফেলেছিলেন। কিন্তু তার পরেও তাঁকে রাজনীতিতে থেকে যেতে হয়েছে। ঘাটল থেকে ভোটে লড়তেও হচ্ছে। সেই অভিজ্ঞতার নির্যাস কী? আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকার ভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’তে দেব জানিয়ে দিলেন, রাজনীতি ছাড়বেন বলে আর নাকে কাঁদবেন না!

Advertisement

দেবের কথায়, ‘‘রাজনীতি ছেড়ে দেব বলে আমি আর নাকে কান্না কাঁদতে পারব না! আমি এটা বুঝে গিয়েছি, এখান থেকে আর বার হওয়া সম্ভব নয়।’’ ২০১৪ সালে প্রথম বার ভোটে দাঁড়িয়ে ঘাটাল থেকে জিতেছিলেন দেব। ২০১৯ সালেও তাঁর জিততে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু এ বার ভোটে দাঁড়াবেন না বলে অনেক আগে থেকেই প্রকাশ্যে বলে দিয়েছিলেন দীপক অধিকারী। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় শেষ পর্যন্ত মতবদল করতে হয়েছে দেবকে। সেই প্রেক্ষাপটেই দেব রাজনীতিতে থেকে যাওয়ার পাকা কথা দিয়ে দিলেন আনন্দবাজার অনলাইনের একান্ত সাক্ষাৎকারে।

তৃণমূলে গান্ধীগিরি

Advertisement

বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় তাঁকে দেখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিচ্ছিলেন কয়েক জন যুবক। কাছে গিয়ে তাঁদেরই এক জনকে বুকে জড়িয়ে ধরেন দেব। বালুরঘাটে তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্রের প্রচারমঞ্চ থেকে বিজেপির সুকান্ত মজুমদারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন তিনি। বিজেপির মিঠুন চক্রবর্তী সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মিঠুনদা আমার বাবার মতো।’’ দেব কি তা হলে তৃণমূলে থেকেও ‘তৃণমূলী’ নন? তৃণমূলের অন্দরে দেব কি গান্ধীগিরি করেন? কৌতূহলী দেব প্রথমে বলেন, ‘‘তৃণমূলী হতে গেলে কী করতে হবে?’’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, তার শব্দে যখন প্রতিদিন বৈচিত্র দেখা যাচ্ছে, তখন দেব কেন সে পথে না হেঁটে উল্টো পথে হাঁটছেন? দেব বলেন, ‘‘আমি ২০১৪ থেকেই এটা করছি। প্রথম প্রার্থী হওয়ার পর সন্তোষদাকে (সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রানা) প্রণাম করেছিলাম। আর আমি মনে করি এটাই হওয়া উচিত। এটাই স্বাভাবিক। এখন স্বাভাবিক বিষযটিকেই বড় করে দেখানো হচ্ছে।’’ কিন্তু এই রাস্তায় হাঁটতে গিয়ে দেবের কি ‘একা’ লাগে না? অভিনেতার জবাব, ‘‘সত্যের পথে সব সময় একাই চলতে হয়।’’ তবে দেবের এ-ও বিশ্বাস, এখন তিনি একা হলেও ভবিষ্যতে তাঁর পাশেই অনেক লোক থাকবেন। কিন্তু গত ১০ বছরে তো অনেক লোককে তাঁর ঘরানার রাজনীতিতে দেখা গেল না! দেবের কথায়, ‘‘১০ বছরটা রাজনীতিতে অনেক সময় নয়।’’ পাশাপাশিই দেব এ-ও জানিয়েছেন, তিনি যে স্বাধীন ভাবে রাজনীতি করেন, নিজের মনের কথা বলেন, তাতে মমতা বা অভিষেক কোনও দিন বাধা দেননি। স্বগতোক্তির মতো করেই দেব বলেন, ‘‘যদি কখনও তা হয়, তা হলে আমি বলব, দিদি আমায় ছেড়ে দিন!’’

অধীর চৌধুরীর প্রশংসা

দেবের সৌজন্যবোধ বঙ্গ রাজনীতিতে বহুলচর্চিত। বিরোধী শিবিরের নেতারাও তাঁর সমালোচনা করতে পারেন না। বরং তাঁর ব্যবহারের প্রশংসাই করেন। সেই দেবের বিরোধী শিবিরের কোন কোন নেতাকে ভাল লাগে? আনন্দবাজার অনলাইনের একান্ত সাক্ষাৎকারে দেব জানিয়েছেন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বিদায়ী লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীর নাম। কেন? দেবের জবাব, ‘‘অধীরদা অনেক বার আমায় সংসদে তাঁর ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে চা খাইয়েছেন। স্পিকার যখন আমার বক্তব্যের জন্য কম সময় বরাদ্দ করেছেন, অধীরদা গিয়ে বলেছেন, দেব বাংলার সুপারস্টার। ওঁর জন্য আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক। অধীরদার কথা ফেলতে পারেননি স্পিকার।’’ অধীর এ বারও তাঁর কেন্দ্র বহরমপুরে লড়ছেন কংগ্রেসের হয়ে। যে অধীরকে প্রতিদিন বিবিধ শব্দে বিদ্ধ করছেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সেই অধীরের প্রশংসায় দরাজ হলেও অবশ্য তাঁর জয় চাইতে পারেননি তৃণমূলের প্রার্থী দেব। তিনি কি চান, বহরমপুরে অধীর জিতুন? জবাবে দেব বলেন, ‘‘আমি যে হেতু ভোটে লড়ছি। আমি চাই, আমার দলের প্রার্থী ইউসুফ পাঠান জিতুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন