Lok Sabha Election 2024

প্রতিশ্রুতি নয়, এলাকায় উন্নয়ন চান বাদুড়িয়ার মানুষ

দিল্লির দৌড়ে কে কোথায়? কোন দল কী ভাবে ঘর গোছাচ্ছে? কোথায় কোন কাঁটা বেগ দিচ্ছে কাকে? লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভা ভিত্তিক খোঁজখবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাদুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৪ ০৮:২২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

একটা সময় বাদুড়িয়াতে ভোট মানেই ছিল উৎসব। কিন্তু অভিযোগ, পর পর কয়েকটি ভোটে সেই ছবি বদলে গিয়েছে। এলাকার লোকজন জানান, সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত এবং পুর নির্বাচন কার্যত প্রহসনে পরিণত হয়েছিল। বহু জায়গায় বিরোধীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। কোথাও আবার ভোট দিতে গিয়ে শুনতে হয়েছিল, ভোট হয়ে গিয়েছে। এমনকী গণনাকেন্দ্রে জয়ী হিসাবে পাওয়া শংসাপত্র কেড়ে নেওয়ায় কাঁদতে কাঁদতে ফিরতে হয়েছিল বিরোধী প্রার্থীদের। ভোট দিতে বেরিয়ে গুলি খেতে হয়েছিল বাদুড়িয়ার শ্রীরামপুরের এক বৃদ্ধাকে। পঞ্চায়েত, পুরসভায় ভোট দিতে না পারলেও এবার লোকসভায় ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন বাদুড়িয়ার মানুষ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় ভোট দেওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন তাঁরা।

Advertisement

বাদুড়িয়ার বহু মানুষের অভিযোগ, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ককে সেভাবে এলাকায় দেখা যায়নি। দলীয় কোন্দলে এলাকার কোনও সভা-সমিতি এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁকে দেখা যায় না বলেই দাবি বাদুড়িয়াবাসীর। লোকসভায় এবারের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নরুল ইসলামের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের একাংশের। বর্তমানে হাড়োয়ার বিধায়ক নরুল আগে বসিরহাটেরই সাংসদ ছিলেন। ২০০৯ সালে জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, পাঁচ বছরে একদিনও সংসদে তাঁকে সেভাবে বসিরহাটের কথা বলতে শোনা যায়নি। এলাকার উন্নয়নে তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ইতিহাসের প্রসিদ্ধ স্থান বাদুড়িয়া। এখানে স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদ তিতুমিরের জন্মভিটে রয়েছে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিচিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এলাকায়। সরকারি ভাবে আজও তার সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। বাদুড়িয়াতে ডিগ্রি কলেজ, আইটিআই কলেজ, হিমঘর তৈরি, রেলপথ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিছুই পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ। ইছামতি নদীর উপর এক যুগ ধরে সেতু তৈরির কাজ এখনও অসমাপ্ত। কৃষি প্রধান এলাকায় চাষের উন্নয়নেও তেমন পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ। গত পাঁচ বছর এলাকার সাংসদ ছিলেন অভিনেত্রী নুসরত জাহান। এই সময়কালেও বাদুড়ডিয়ার উন্নয়নে সেভাবে নজর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, উন্নয়ন তো দূরের কথা, দুর্যোগ বা মহামারিতেও সাংসদকে দেখতে পাননি বাদুড়িয়ার মানুষ।

Advertisement

মানুষের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েই বাদুড়িয়া থেকে ভোট বাড়ানোর অঙ্ক কষছে বিরোধীরা। সন্দেশখালি আন্দোলনের মুখ রেখা পাত্রকে প্রার্থী করে এবার বসিরহাট কেন্দ্রে লড়াই করছে বিজেপি। অন্যদিকে বাম-কংগ্রেসের প্রার্থী সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার। পঞ্চায়েতে ভাল ফলকে সম্বল করে লড়াইয়ে রয়েছে আইএসএফও। তাদের প্রার্থী আখতার রহমান বিশ্বাস। তবে বিরোধীদের পাত্তা দিচ্ছে না শাসক দল। বাদুড়িয়া-সহ গোটা বসিরহাট কেন্দ্রেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল।

রেখা বলেন, “গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইতে নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদ নিয়ে জল জঙ্গলের মানুষের কথা বলতে সংসদে যেতে চাই।” নিরাপদর কথায়, “যেখানেই যাচ্ছি, মানুষ আমাকে আশীর্বাদ করছেন। জয়ী হওয়ার পর, আমার প্রথম কাজ হবে বাকি থাকা কাজ শেষ করা ও এলাকার উন্নয়ন।” আখতার রহমান বিশ্বাস বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে প্রমাণ হয়েছে বসিরহাটের সর্বত্র তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষ সংগ্রামের সঙ্গী হিসেবে আইএসএফকে চাইছে।”

হাজি নুরুল ইসলাম বলেন, “মানুষ পাশে আছেন। জয়ের ব্যাপারে আমরা একরকম নিশ্চিত।” উন্নয়ন ঘিরে অবিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এলাকায় সেতুর কাজ শেষের পথে। হিমঘরের কাজও অনেকটা হয়ে গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন