Lok Sabha Election 2024

রবি-শরণ মোদীর, নিশানায় ‘দুর্নীতি’

আজ সেই অনুব্রত তিহাড় জেলে। এ দিন নিজের বক্তৃতায় কোথাও অনুব্রতের নাম নেননি মোদী। কিন্তু, প্রতিপদে বিঁধেছেন অনুব্রতের দলকে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

আমোদপুর শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৪ ১০:১০
Share:

আমোদপুরের সভায় নরেন্দ্র মোদী। নিজস্ব চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বীরভূমে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

শুক্রবার আমোদপুরের নেতাজীপল্লির মেলার মাঠে নির্বাচনী জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটের প্রচারে বীরভূমে শেষবার মোদী এসেছিলেন ২০১৯ সালে। সে-বার তাঁর সভা ছিল ইলামবাজারে। পাঁচ বছরে অবশ্য অজয় দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। পাঁচ বছর আগে যখন তিনি এসেছিলেন, তখন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল স্বমহিমায়। আজ সেই অনুব্রত তিহাড় জেলে। এ দিন নিজের বক্তৃতায় কোথাও অনুব্রতের নাম নেননি মোদী। কিন্তু, প্রতিপদে বিঁধেছেন অনুব্রতের দলকে।

বক্ততার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বোলপুরে এসে আলাদা করে ভাল লাগছে। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের কর্মভূমি এই বীরভূম। এ ছাড়া পাঁচ সতীপীঠও আছে। ঐতিহাসিক বিশ্বভারতীর আচার্য হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’’ ঠিক পরক্ষণেই রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে তোপ দেগেছেন দুর্নীতির প্রশ্নে। মোদী বলেন, ‘‘কবিগুরুর কর্মভূমির জায়গা বীরভূমকে কলুষিত করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের গুণ্ডা-মাফিয়ারা কব্জা করে রেখে কলুষিত করছে।’’ তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য আবেদন জানান মোদী।

Advertisement

বীরভূমে বোলপুর এবং বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী পিয়া সাহা ও দেবতনু ভট্টাচার্যের সমর্থনে এই সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি। দলের বোলপুর এবং বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতিরা ছাড়াও ছিলেন জেলার বিধায়ক ও রাজ্য নেতারা। দুপুর দুটো চল্লিশ মিনিটে সভাস্থলে মোদী পৌঁছন। মোদী সভার শুরুর ঘণ্টা তিনেক আগে থেকেই সভাস্থলে ভিড় জমতে শুরু করে। তীব্র গরম উপেক্ষা করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস, অটো, ট্রেকার, টোটো এবং গাড়ি ভাড়া করে প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। বিকেল তিনটে বিশালাকার জার্মান শেডের নীচে তো বটেই, ছাউনি পেরিয়েও কাতারে কাতারে লোক। ভিড় দেখে দেখে উচ্ছ্বসিত মোদীকে বলতে শোনা গেল, ‘‘সভায় যত লোক উপস্থিত হয়েছেন, হেলিপ্যাডে তার চেয়েও বেশি লোক উপস্থিত হয়েছেন।’’ উল্লেখযোগ্য মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মহিলারা উলুধ্বনি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। সভা শুরুর আগে দলের রাজ্য সহ-সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল অভিযোগ করেন, সভাস্থলে আসা শতাধিক বাস আমোদপুর-সাঁইথিয়া রাস্তার উপরে পুলিশ আটকে রেখেছে। এর ফলে অনেক কর্মী-সমর্থক সভাস্থলে আসতে পারছে না।

এ দিন মঞ্চ থেকে কর্মী-সমর্থকদের আঁকা নিজের ছবি চেয়ে নেন প্রধানমন্ত্রী। সভামঞ্চে আসার পরেই বড় মাপের কাঠের ফ্রেমে মোদীর ছবি উপহার তুলে দেন রাজ্য এবং জেলা নেতারা। বক্তব্য শুরু করার পরেই সভাস্থলের সামনে মূল মঞ্চ থেকে ৩০-৪০ মিটার দূরত্বে থাকা কয়েক জনের হাতে তাঁর ছবি লক্ষ্য করেন মোদী। মঞ্চ থেকেই তিনি ছবিগুলি সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশ দেন। নিরাপত্তাকর্মীরা ছবি সংগ্রহ করেন। মোদী তখন বক্তব্য থামিয়ে বিষয়টি উপভোগ করেন।

মোদীর মুখের ছবি এঁকে বাবা গোপাল মজুমদারের সঙ্গে এসেছিলেন লাভপুরের দশ বছরের বালক অনুরাগ। মোদীর নির্দেশে নিরাপত্তারীক্ষরা আরও অনেকের পাশাপাশি অনুরাগের আঁকা ছবিও সংগ্রহ করেন। এর পরেই মোদীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কী খুশি তো?’’ সভাস্থলে উপস্থিত কর্মী-সমর্থকরা সমস্বরে চিৎকার করে বললেন, ‘‘হ্যাঁ’’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন