Lok Sabha Election 2024

বিড়ি মহল্লা দখলে মরিয়া ঘাসফুল, হাত

সাধারণ ভাবে বিড়ি মহল্লা বর্তমানে শাসক তৃণমূলের দখলে। অধিকাংশ বিড়ি মালিক রয়েছেন তাঁদের সঙ্গেই।

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নির্বাচনের মুখে এ বার বিড়ি শ্রমিকদের মহল্লা দখলে মরিয়া তৃণমূল ও কংগ্রেস। জঙ্গিপুর লোকসভা এলাকার মধ্যে পড়ে সুতির দু’টি ব্লক, সব চেয়ে বেশি বিড়ি শ্রমিকের বাস সেই দুই ব্লকেই। এই বিড়ি শিল্পাঞ্চলে বড় বিড়ি কারখানা ১২টি। মাঝারি মাপের কারখানা ৩০টির মতো। বিড়ি শিল্পাঞ্চলে দৈনিক উৎপাদন ৫০ কোটি, যা এখন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। প্রায় এক হাজার কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ রয়েছে বিড়ি শিল্পে। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ভোটারের ৯০ শতাংশই বিড়ি শ্রমিক।

Advertisement

গত তিন বছর বিড়ির মজুরি বাড়েনি তাঁদের। স্বভাবতই তা নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে কংগ্রেস ও বামেদের জোট চাইছে শ্রমিকদের ভোটকে নিজেদের দিকে টানতে। বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুতির বিড়ি শ্রমিক মহল্লায় বড় নির্বাচনী সভা করে গিয়েছেন। পাল্টা বৃহস্পতিবার রোড শো করে বিড়ি শ্রমিক মহল্লা চষে ফেললেন তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসও। কয়েকশো মোটরবাইক নিয়ে চাঁদের মোড় থেকে শুরু করে অন্তত ২০ কিলোমিটার ঘুরে প্রচার সারলেন তিনি। কংগ্রেস ও তৃণমূল দুই দলের মিছিল মিটিংয়ে লোক ছিল ভালই।

সাধারণ ভাবে বিড়ি মহল্লা বর্তমানে শাসক তৃণমূলের দখলে। অধিকাংশ বিড়ি মালিক রয়েছেন তাঁদের সঙ্গেই।খলিলুর রহমান, জাকির হোসেন, ইমানি বিশ্বাস, বাইরন বিশ্বাসের মতো বিড়ি মালিকেরা সরাসরি তৃণমূলের সাংসদ না হয় বিধায়ক। এক সময় এঁরাই ছিলেন কংগ্রেসের ভাগ্য নিয়ন্তা। এঁদের হাত ধরেই বিড়ি শ্রমিকদের ভোট টেনেছেন কংগ্রেসের প্রণব মুখোপাধ্যায় ও তাঁর ছেলে অভিজিৎ। কিন্তু বিড়ি শ্রমিকেরা যে তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছেন আজও।

Advertisement

প্রতি বছর ভোট এলেই বিড়ি শ্রমিকদের সমর্থন পেতে তাই ঝাঁপিয়ে পড়ে সব রাজনৈতিক দলই। এ বারও তার ব্যতিক্রম নেই। কিন্তু তবু কোনও নির্বাচনী তাপ-উত্তাপ নেই বিড়ি শিল্পাঞ্চলের কোথাও। অথচ ভোট দিতে কখনও কসুর করেননি বিড়ি শিল্প মহল্লার শ্রমিকেরা। ’৭২ সালে যেখানে ৬৫ শতাংশ শ্রমিক ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন, সেখানে ২০১৯ সালে ভোট দানের হার বেড়ে হয়েছে ৮০.৭২ শতাংশ। শ্রমিকেরা কখনও ভরসা করেছেন বামেদের উপরে, কখনও বা কংগ্রেসের উপর। এখন তৃণমূলে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি তাঁদের আজও। বামুহা গ্রামের মেহেরুন্নেসা বিবির কথায় ফুটে উঠল যেন তারই প্রতিধ্বনি। তাঁর কথায়, ‘‘ভোট তো এখন প্রতি বছরই আসে। ভোট দিতেও যাই। কিন্তু আমাদের অবস্থার বদল ঘটে কই? স্বামী, স্ত্রী মিলে হাজার দেড়েক বিড়ি বাঁধি। বাড়িতে ৬ জন মানুষ। আড়াইশো টাকা আয় হয়। সরকার ঘোষণা করেছিল বিড়ি বাঁধাতে সরকারি ন্যূনতম মজুরি চালু হবে। কিন্তু হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন