Lok Sabha Election 2024

দুবরাজপুরে ‘লিড’, আশা তৃণমূলের

পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য খয়রাশোল ব্লকে ছবিটা বদলেছে। তৃণমূল দাপট বজায় রেখে জিতেছে। কিন্তু, তার আগে থেকে ব্লকে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার নেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ০৮:৩১
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে পিছিয়ে থাকা দুবরাজপুর বিধানসভা এলাকায় এ বার তারা ‘লিড’ পাবে বলে মনে করছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোটপর্ব মিটতেই দলের অন্দরে এই নিয়ে কাটাছেঁড়াও চলছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের এক বড় অংশ আশাবাদী। তাঁদের বক্তব্য, এই নির্বাচনে বদনাম ঘুচে যাবে। উন্নয়নে ভরসা রেখে ‘লিড’ পাবে দল। যদিও বিজেপি সেটা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, তৃণমূল দিবাস্বপ্ন দেখছে। ফল বেরোলেই সব স্পষ্ট হবে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, দুবরাজপুর বিধানসভা এলাকায় থাকা দুবরাজপুর পুরসভা এলাকায় ২০২২ সালের পুরভোটে এবং ’২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে খয়ারশোল ব্লক শাসকদলের পক্ষে গিয়েছে। যদিও, ২০১৬ সালের পর থেকে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বিজেপির থেকে পিছিয়ে থেকেছে তৃণমূল।

দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে খয়রাশোল ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা, দুবরাজপুর পুরসভা এবং দুবরাজপুর ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। জেলার ১১টি বিধানসভার মধ্যে একমাত্র দুবরাজপুরে ২০২১ সালে হেরেছিল তৃণমূল। এর জন্য দায়ী ছিল মূলত খয়রাশোল। বস্তুত, গত কয়েক বছর ধরেই খয়রাশোল ভুগিয়েছে তৃণমূলকে। লোকসভা নির্বাচনে এই ব্লকে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছিল তারা। গোটা ব্লকে ১৫ হাজারের বেশি ভোটে বিজেপি-র পিছিয়ে ছিল শাসকদল। ব্যবধান কমলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে দুবরাজপুর বিধানসভা আসনে বিজেপির কাছে হারতে হয়েছে খয়রাশোল ব্লকের জন্যই। সেবার ৬ হাজার ব্যবধানে এগিয়েছিল বিজেপি। অন্য দিকে, ‘১৯ ও ‘২১, দুই নির্বাচনেই দুবরাজপুর শহরের ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে পিছিয়েছিল তৃণমূল।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য খয়রাশোল ব্লকে ছবিটা বদলেছে। তৃণমূল দাপট বজায় রেখে জিতেছে। কিন্তু, তার আগে থেকে ব্লকে দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চূড়ান্ত আকার নেয়। এ বছর নোকসভা নির্বাচনের আগে তাই দ্বন্দ্ব মেটাতে নানা পদক্ষেপ করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শতাব্দী রায়ও একাধিক বার খয়রাশোলে এসে সাংগঠনিক বৈঠক করে সব নেতাকে এক হয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন।

সেই কারণেই এ বার দুবরাজপুর থেকে ‘লিড’ পাবেন বলে আশাবাদী তৃণমূল নেতারা। খয়রাশোলের ব্লকের দলীয় নেতাদের একাংশ বলছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিয়ে এ বারে সকলে খুব খেটেছেন। সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার নিয়ে নিবিড় প্রচার চালানো হয়েছে। ১০০ দিনের বকেয়া কিছুটা মিটিয়েছে রাজ্য সরকার। ডিসেম্বরে বাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি রয়েছে। খয়রাশোলের ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক শ্যামল গায়েনের দাবি, ‘‘দু-তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পিছিয়ে থাকতে পারি। কিন্তু সেখানেও ফল আগের থেকে ভাল হবে। মোটের উপরে বাকিগুলিতে ভাল ফল হবে। সে ক্ষেত্রে লিড না হওয়ার কারণ নেই।’’

জেলার একমাত্র বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহার উদ্দেশে শ্যামলের কটাক্ষ, ‘‘মানুষ তো গত তিন বছর বিজেপির বিধায়ককে দেখলেন। তাঁর কাজ ও উপস্থিতি কোথায়!’’ দুবরাজপুর ব্লকের তৃণমূল নেতাদেরও দাবি, আগের থেকে এ বারে পরিস্থিতি অনেক ভাল। গোষ্ঠী কোন্দলও সামাল দেওয়া গিয়েছে। দুবরাজপুর পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘শহরে তো লিড হবেই। আশা করি গ্রামীণ এলাকা থেকেও লিড পাবে দল।’’ অন্য দিকে, অনুপ সাহার দাবি, ‘‘শাসকদলের দুর্নীতি মানুষের অজানা নয়। তা ছাড়া, এটা দেশ গঠনের ভোট। যে এলাকায় মানুষ বিধানসভায় বিজেপিকে জিতিয়েছে, সেখানে কেন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ভোট দেবে? ওদের স্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন