Mamata Banerjee

খেয়ে দেখুন, কথা দিলাম, নিজের হাতে রান্না করব! ‘মোদীবাবুকে’ মাছ খেতে আসার ‘নেমন্তন্ন’ মমতার

নবরাত্রির সময় বা শ্রাবণ মাসে মাছ-মাংস খাওয়া বা তার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করার বিষয়টিকে ‘মোগলদের মানসিকতা’ বলে বিরোধীদের আক্রমণ করেছিলেন মোদী। সেই নিয়েই মন্তব্য মমতার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৪ ১৮:১০
Share:

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

দেশে যাঁর যা ইচ্ছা, তিনি তা-ই খাবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও বরং এক বার মাছ খেয়ে দেখুন। তিনি নিজে হাতে রান্না করে খাওয়াবেন। সোমবার ব্যারাকপুরের সভায় দাঁড়িয়ে ‘মোদীবাবু’কে সেই প্রস্তাবই দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে ‘কথা’ দিলেন, মোদী রাজি হলে অন্য কাউকে দিয়ে রান্না করাবেন না। এমনকি, মোদী যদি বলেন, তা হলে তিনিও ধোকলা খেতে রাজি। কারণ, তাঁর কাছে ‘জাতপাত’ বলে কিছু নেই।

Advertisement

নবরাত্রির সময় বা শ্রাবণ মাসে মাছ-মাংস খাওয়া বা তার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করার বিষয়টিকে ‘মোগলদের মানসিকতা’ বলে বিরোধীদের আক্রমণ করেছিলেন মোদী। তার পর থেকেই বিভিন্ন সভায় এই প্রসঙ্গে মোদীকে কটাক্ষ করেছেন মমতা। দাবি করেছেন, মানুষ কী পরবেন, কী খাবেন, তা স্থির করে দিতে চাইছে মোদী সরকার। সোমবার ব্যারাকপুরেও সেই কথাই বললেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘মোদী এখন বলে বেড়াচ্ছেন, মাছ খাবেন না, মাংস খাবেন না, ডিম খাবেন না। তা হলে কি ব্যাঙের ছাতা খাবে? আপনি জোগাড় করে দিন। যার যা ইচ্ছা, খাবে। যে নিরামিষ ভালবাসে, সে নিরামিষ খাবে। যে আমিষ খায়, সে তা-ই খাবে। এ দেশ আমাদের সকলের। নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান।’’ এর পরেই একের পর এক মাছের পদের নাম করে তিনি মোদীকে মাছ খেয়ে দেখার পরামর্শ দেন। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ বিরিয়ানি ভালবাসে, কেউ চিংড়ি পটল ভালবাসে, কেউ চিংড়ির মালাইকারি ভালবাসে। মোদীবাবু, আপনি খেয়ে একটু দেখুন না স্বাদটা কেমন? খেয়ে দেখবেন? তৈরি করে দেব? কথা দিচ্ছি, কাউকে দিয়ে করাব না, নিজে রান্না করব।’’ মমতা এ-ও জানিয়েছেন, ছোট থেকে রান্না করে এসেছেন। তিনি রান্না জানেন। আবার মোদী যদি তাঁকে ধোকলা বা দোসা খেতে বলেন, তা-ও তিনি খেতে পারেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভালবেসে খাব। আমার কাছে জাতপাত বলে কিছু নেই।’’

লোকসভা ভোটের প্রচারে আমিষ বনাম নিরামিষের প্রসঙ্গ তোলেন মোদী। এপ্রিল মাসে উধমপুরের সভায় মোদী বলেন, ‘‘দেশের আইন কাউকে কিছু খেতে বাধা দেয় না। এই মোদীও কাউকে আটকায় না। সকলের স্বাধীনতা রয়েছে, নিরামিষ খান বা আমিষ খান।’’ এর পরেই নাম না করে রাহুল গান্ধী, লালুপ্রসাদ যাদব, তেজস্বী যাদবদের নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা এই সব ভিডিয়ো দেখিয়ে দেশের মানুষদের ব্যঙ্গ করেন। এঁদের মানসিকতা মোগলদের মতো।’’ গত বছর লালুপ্রসাদের সঙ্গে পাঁঠার মাংস রান্না করার ভিডিয়ো শেয়ার করেছিলেন রাহুল। মাস কয়েক আগে তেজস্বী ভোটের প্রচারে গিয়ে মাছ খাওয়ার ভিডিয়ো শেয়ার করেন। সেই প্রসঙ্গেই মোদী ওই কথা বলেন। বিরোধীরা অভিযোগ করেন, এ ভাবে আসলে মেরুকরণের চেষ্টা করছেন মোদী। এই নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি ভোট প্রচারে গিয়ে বলেন, ‘‘বিজেপি শুধু আপনাদের ভোট চায় না। আপনারা কী পরবেন, কোথায় যাবেন, কী খাবেন, কাকে ভালবাসবেন, কার সঙ্গে কথা বলবেন, ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী সেটাও ঠিক করে দিতে চান। আপনার জীবনের সিদ্ধান্ত বিজেপি নিতে চায়।’’ মমতার মুখেও শোনা গিয়েছে আক্রমণ। এ বার তিনি মোদীকে মাছ খেয়ে দেখার প্রস্তাব দিলেন। এ-ও জানালেন, মোদী খেলে তিনি নিজেই রাঁধবেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement