Lok Sabha Election 2024

‘ইন্ডিয়া’র শরিক হিসাবেই রয়েছেন মমতা, জোট রক্ষা করার স্বার্থে ফের সমঝোতার বার্তা রাহুলের

তৃণমূল এবং তার সর্বোচ্চ নেত্রীর তরফে লাগাতার তীব্র আক্রমণের পরেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কেন ‘নরম’ অবস্থানের কৌশল বজায় রেখে চলেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন, বিস্ময় ও ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্য কংগ্রেসের অন্দরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৫:৫৮
Share:

(বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

লোকসভায় সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ঐক্য নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। তার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাহুল গান্ধী ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র ফাঁকে দাবি করলেন, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অধিকাংশ শরিক জোটের সঙ্গেই রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ‘ইন্ডিয়া’ জোটে রয়েছেন।

Advertisement

তৃণমূল নেত্রী মমতা ইতিমধ্যে একাধিক বার জানিয়েছেন, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হচ্ছে না। এ রাজ্যে তাঁরা একাই লড়বেন। তার পরে বিহারের নীতীশ কুমার ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। রাহুল অবশ্য এ দিন বলেছেন, ‘‘এমনটা মোটেই নয় যে, ‘ইন্ডিয়া’ জোট থেকে অনেক শরিক দল বেরিয়ে গিয়েছে।’’ কংগ্রেসকে গত কয়েক দিনে তীব্র আক্রমণ করেছেন মমতা। এমনকি, কংগ্রেস লোকসভা ভোটে ৪০টি আসন পাবে কি না ঠিক নেই, এমন মন্তব্যও করেছেন। যদিও তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে ঝাড়খণ্ডে এ দিন রাহুলের ব্যাখ্যা, ‘‘যদি আপনারা মমতাজি’র বিবৃতি দেখেন, তিনি ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক হিসেবে রয়েছেন। অধিকাংশ অন্য দল, যারা ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক ছিল, তারা জোটে রয়েছে। নীতীশ কুমার অবশ্যই ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। তিনি বিজেপির হাত ধরেছেন। আপনারা অনুমান করতে পারেন, এর পিছনে কারণ কী।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে ঠিক আছে। আমরা বিহারে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকেরা মিলে লড়ব। এখনও আসন সমঝোতা নিয়ে দর কষাকষি চলছে। ফলে, অনেকে অনেক রকম অবস্থান নেবে। সেটা স্বাভাবিক।’’

জোট-রক্ষার স্বার্থে রাহুল সমঝোতার বার্তা জারি রাখলেও তৃণমূল শিবিরে অবশ্য মত বদলের কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত নেই। বাংলায় রাহুলের ‘ন্যায় যাত্রা’য় শামিল হয়েছিলেন স্বরাজ্য পার্টির নেতা যোগেন্দ্র যাদব। রাহুল বাংলা ছাড়তেই যোগেন্দ্রকে দেখা গিয়েছিল রেড রোডে মমতার ধর্না-মঞ্চে। আবার তিনি ঝাড়খণ্ডে গিয়ে রাহুলের যাত্রায় যোগ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের তরফে বার্তা নিয়েই মমতার মঞ্চে এসেছিলেন যোগেন্দ্র। যদিও তাঁর দৌত্যে বিশেষ কোনও কাজ হয়েছে বলে এখনও খবর নেই। তবে যোগেন্দ্র ফিরে যাওয়ার পরে রাহুল তৃণমূলের উদ্দেশে জোটের বার্তারই পুনরাবৃত্তি করেছেন। আলোচনার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়নি বলেও মন্তব্য করেছেন। অন্য দিকে, তৃণমূলের মুখপাত্রেরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে নিশানা করে কংগ্রেসের উদ্দেশে তোপ দাগা অব্যাহত রেখেছেন।

Advertisement

বাংলার শাসক দল তৃণমূল এবং তার সর্বোচ্চ নেত্রীর তরফে লাগাতার তীব্র আক্রমণের পরেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কেন ‘নরম’ অবস্থানের কৌশল বজায় রেখে চলেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন, বিস্ময় ও ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্য কংগ্রেসের অন্দরে। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক সুমন রায় চৌধুরীর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে কেন নৈবেদ্যের থালা সাজিয়ে দিতে হবে! এখনও রাহুল গান্ধী, জয়রাম রমেশ বা সুপ্রিয়া শ্রীনেতজি’রা ভদ্রতা দেখাচ্ছেন রুচি বোধ থেকে। কিন্তু বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা তৃণমূল নামক ‘গ্যাং’-এর সঙ্গে জোট চান না।’’ আবার প্রদেশ কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতা কৌস্তভ বাগচীর মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি নরম অবস্থান বা তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার ইচ্ছা প্রকাশ মানে বাংলায় দলের সেই কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ‘অন্যায়’ করা, সব প্রতিকূলতার মধ্যেও যাঁরা কংগ্রেসের প্রতি অনুগত থেকেছেন।’’ রাহুলের ‘ন্যায় যাত্রা’র দিকে ইঙ্গিত করেই তাঁর ওই তির্যক মন্তব্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন