Lok Sabha Election 2024

আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষায় দেওয়াল লিখনে ‘না’ শান্তিনিকেতনে

লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে থেকেই শুরু হয় প্রচার। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন, রাজনৈতিক ব্যানার, পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে সর্বত্র।

Advertisement

বাসুদেব ঘোষ 

বোলপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩৮
Share:

পিয়ারসনপল্লি আদিবাসীপাড়ায় ভোটের বাজারে দেওয়াল লিখন নিষিদ্ধ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

রঘু কুলের রীতি কলি যুগেও বর্তমান! দেশজ সংস্কৃতি নিয়ে চারিদিকে যখন ‘গেল গেল’ রব উঠছে, সেখানে নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভিন্ন পথে হাঁটছেন শান্তিনিকেতনের কয়েকটি আদিবাসীপাড়ার মানুষ। নির্বাচনের প্রাক্‌লগ্নে সর্বত্র যেখানে ভোটের দেওয়াল লিখন চোখে পড়ে, সেখানে এই পাড়ার দেওয়াল ধরে রাখে আদিবাসী শিল্পের ঝলক। রাজনৈতিক দলগুলি যখন দেওয়াল দখলের মারকাটারি লড়াইয়ে মত্ত, তখন ‘প্রাণ গেলেও’ দেওয়াল ব্যবহারে দিতে অনড় এখানকার বাসিন্দারা।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে থেকেই শুরু হয় প্রচার। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন, রাজনৈতিক ব্যানার, পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে সর্বত্র। তবে এসবের মধ্যেও ব্যতিক্রমী শান্তিনিকেতনের বল্লভপুর ডাঙা, বনের পুকুরডাঙা, পিয়ারসানপল্লি, কালীগঞ্জ-সহ বেশ কয়েকটি আদিবাসীপাড়া। সেখানকার মাটির বাড়ির দেওয়ালজুড়ে রয়েছে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নানা কারুকার্য, শিল্প-সংস্কৃতির নিদর্শন, তাঁদের অঙ্কিত চিত্রকলা।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করেন, এই গ্রামগুলিতে ভোটের সময় দেওয়াল লিখন করলে তাঁদের সংস্কৃতি অনেকটাই নষ্ট হবে। নিজেদের সংস্কৃতি সযত্নে লালিত করতে গ্রামের কোনও বাড়ির দেওয়াল রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়াল লিখনের কাজে দেন না তাঁরা। চলতি বছরের লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই ধারায় বজায় রাখা হল।

Advertisement

বনের পুকুরডাঙা এলাকার বাসিন্দা রাম সরেন, কালো হেমব্রম, পিয়ারসানপল্লি এলাকার বাসিন্দা রাধামণি হাঁসদারা জানান, ভোট প্রচারে সমস্ত রাজনৈতিক দলই আসতে পারে, তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে দেওয়াল লিখন বা পোস্টার সাঁটানোর মাধ্যমে আমাদের আদিবাসী সংস্কৃতি ক্ষুণ্ণ হতে দেব না। সব রাজনৈতিক দলের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে বজায় রেখে তাঁরা যেন এই এলাকায় ভোটের প্রচার চালান।

এ বিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “আমরা কোনও ভাবেই আদিবাসীদের সংস্কৃতিকে নষ্ট করতে চাই না। ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রচার চালানো হবে।” বিজেপি বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিল্প নষ্ট করে নয়, বরং ওই এলাকায় ওঁদের সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রচার কর্মসূচি চালাব।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “ওঁদের সঙ্গে কথা বলেই ওই এলাকায় প্রচার চালানো হবে। তবে কোনও ভাবেই ওঁদের সংস্কৃতিতে আঘাত দেওয়া হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন