Lok Sabha Election 2024

রাজস্থানে ২৫ আসন ধরে রাখাই বিজেপির কাছে কঠিন চ্যালেঞ্জ

রাজস্থানে প্রথম দফায় ১২টি লোকসভা আসনে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। আজ দ্বিতীয় দফায় বাকি ১৩টি আসনে ভোটদানের হার কোনও মতে ৬০ শতাংশ পেরিয়েছে। ভোটের এই কম হার বিজেপির পক্ষে চিন্তার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।

লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফার আগে রাজস্থানের বাঁসওয়াড়া থেকে ধর্মীয় মেরুকরণকে ভোট-প্রচারের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, মরু-রাজ্যে জাতিগত স্তরের অসন্তোষ থেকে ভোটারদের মন ঘুরিয়ে দিতে কিছুটা বাধ্য হয়েই মেরুকরণের পথে ফিরেছেন তিনি। রাজস্থানে প্রথম দফায় ১২টি লোকসভা আসনে ৬০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। আজ দ্বিতীয় দফায় বাকি ১৩টি আসনে ভোটদানের হার কোনও মতে ৬০ শতাংশ পেরিয়েছে।

Advertisement

ভোটের এই কম হার বিজেপির পক্ষে চিন্তার। জাতিগত স্তরের ক্ষোভ, না কি বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি— শেষ পর্যন্ত কোনটা ভোটে বেশি প্রভাব ফেলবে, তা স্পষ্ট নয়। গত বার রাজস্থানে ‘পঁচিশে পঁচিশ’ পেয়েছিল বিজেপি। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সেই ফলাফল ধরে রাখাটাই এ বার বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির।

প্রভাবশালী এবং দাবি আদায়ে সমর্থ জাঠদের ক্ষোভ রাজস্থানে এ বারের ভোটের সবচেয়ে বড় বিষয়। কৃষক বিক্ষোভ থেকে কুস্তিগিরদের আন্দোলন— কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জাঠদের একটা বড় অংশের অসন্তোষ ছিলই। জাঠ ভোট টানতে বিজেপিতে এত দিন সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। কিন্তু দল তাঁকে কিছুটা কোণঠাসা করায় জাঠ ভোট কংগ্রেসে ফেরত আসছে বলেই মনে করা হচ্ছে। চুরু, ঝুনঝুনুরমতো কিছু আসনে সরাসরি জাঠ বনাম জাঠ প্রার্থীর লড়াই হচ্ছে। তা কংগ্রেসকেই লাভবান করবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

Advertisement

রাজস্থানের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে থাকা রাজপুত সম্প্রদায়ের সমর্থন বেশির ভাগ সময়েই বিজেপি পেয়ে এসেছে। বসুন্ধরা রাজে তাঁর জনসভা শুরুই করতেন নিজেকে ‘রাজপুতের বেটি’ এবং ‘জাঠ পরিবারের বধূ’ বলে পরিচয় দিয়ে। ২০১৮ সালে এই বসুন্ধরার উপরেই নানা কারণে ক্ষুব্ধ রাজপুতেরা বিজেপির থেকে দূরে সরে যান। রাজপুত সভা বৈঠকে বসে স্থির করে, বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে হারাতে হবে। নির্বাচনের ফলাফলে তার পূর্ণ প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল। এ বার বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াত এবং রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী দিয়া কুমারীকে দিয়ে রাজপুত সম্প্রদায়ের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি। যদিও আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা এ বার ভোটের আগে বলে বসেছেন, গুজরাতের রাজপুত ও ক্ষত্রিয় সমাজ নিজেদের স্বার্থে বহিরাগতদের সঙ্গে ‘রোটি-বেটির’ (বাণিজ্যিক-বৈবাহিক) সম্পর্ক রেখে চলত। সেই মন্তব্যের পরে রাজপুত সমাজ এমন ক্ষুব্ধ যে, বার বার ক্ষমা চেয়েও তা প্রশমন করতে পারছেন না রূপালা তথা বিজেপি নেতৃত্ব। এই ক্ষোভের খেসারত দেওয়ার আশঙ্কা থাকছে রাজস্থানেও।

গত কয়েক বছরে গুজ্জর সম্প্রদায়ের উত্থান ঘটেছে রাজস্থানে কংগ্রেসের সচিন পাইলট এবং বিজেপির কিরোরি সিংহ বৈসলার হাত ধরে। তবে গুজ্জরদের সঙ্গে বিজেপির অস্বস্তিকর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল বসুন্ধরার সরকারের আমলেই, সংরক্ষণের দাবিতে তাদের আন্দোলনের সময়ে। ২০১৯ সালে অশোক গহলৌতের সময়ে গুজ্জরদের জন্য সংরক্ষণ চালু হয়। ভোটে গুজ্জর মন জয়ে ঝাঁপিয়েছে কংগ্রেস-বিজেপি। জনজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী মীনারা অন্তত ১২টি আসনে তফাত গড়ে দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিজেপির তাস কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরোরিলাল মীনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন