Lok Sabha Election 2024

ভোটে অভিজ্ঞ অনেকে ‘দূরে’, চিন্তা শাসকদলে

সমস্যার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারছেন না শাসকদলের নেতারা। যদিও মুখে তাঁরা জিতবেন বলেই দাবি করছেন।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:৫৮
Share:

প্রতীকী চিত্র।

অভিমান করে কেউ ‘সরে’ রয়েছেন। কাউকে এতদিন ‘দূরে’ রেখেছে দল। আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের কাজে এ বার তৃণমূল নেতাদের অনেককেই এখনও দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি, বাম অথবা কংগ্রেস বা আইএসএফ— কেউ প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এই অবস্থায় তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগ প্রচারে নেমে পড়লেও আরামবাগ মহকুমায় কতটা গোছানো জোড়াফুলের সংসার? এই প্রশ্ন ঘুরছে রাজনৈতিক মহলে। কেননা, প্রচারের ময়দানে তাদের অনেক চেনা মুখ এ বার কার্যত ‘আড়ালে’।

সমস্যার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারছেন না শাসকদলের নেতারা। যদিও মুখে তাঁরা জিতবেন বলেই দাবি করছেন। তবে, ভোটে জিততে যে সবাইকে দরকার সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন নেতৃত্বের কেউ কেউ।

Advertisement

তৃণমূল শিবিরের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, এত দিন দলের যে সব নেতা ভোট পরিচালনা করতেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পেয়ে বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে তাঁদের একাংশ এ বার প্রচারের কাজ থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখছেন। কয়েক জনকে আবার দলের ‘ভাবমূর্তি’ খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় ভোটের কাজে ডাকাই হয়নি।

ওই সব নেতার ‘অনুপস্থিতিতে’ জেলা এবং ব্লক স্তরের অনেক নেতা ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। ‘গরহাজির’ নেতাদের তালিকা নেহাত ছোট নয়। যেমন গোঘাটের আতাউল হক, সাহাবুদ্দিন খান, বিকাশ চানক, পুরশুড়ার পারভেজ রহমান, গোপাল রায়, আরামবাগের সুফল চানক, অনন্ত ভট্টাচার্য, শেখ সিরাজুল, খানাকুলের ইলিয়াস চৌধুরী, সন্দীপ বর প্রমুখ।

‘ভোট করানো’য় অভিজ্ঞ, প্রবীণ আতাউলের ক্ষোভ, ‘‘দলের কাছে সম্মান পাইনি। পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট দেওয়া হয়নি। ভোটে নামব না বলে দিয়েছি।’’ সাহাবুদ্দিনের বক্তব্য, ‘‘আমাদের মতো পুরনো এবং পঞ্চায়েতে টিকিট না পাওয়া নেতাদের মধ্যে মহকুমার প্রায় ৮৫ শতাংশকেই ডাকা হয়নি। আমাদের সঙ্গে
নিলে নাকি দলের ভাবমূর্তি খারাপ হবে!’’ পুরশুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ এবং জেলা পরিষদের
প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গোপালের বক্তব্য, তাঁরাও ডাক পাননি। বিকাশ মনে করেন, পুরনো এবং বিক্ষুব্ধ নেতাদের না ডাকলে দলের ভোট-লড়াই ‘খুব কঠিন’ হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যাঁরা হাতেকলমে ভোট করিয়েছি, তাঁরা জানি দলকে ভালবেসে হয়তো ৩০ শতাংশ মানুষ ভোট দেবেন। বাকি ৩০ শতাংশ ভোট করিয়ে নিতে হয়।’’

ভোটে দলের পুরনো নেতা-কর্মীদের কাজে লাগানোর দাবি উঠছে দলীয় স্তরে। পুরশুড়ার নেতা তথা দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক অষ্ট বেরা, আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি গুণধর খাঁড়া প্রমুখের মতে, ভোটে অভিজ্ঞ নেতা-কর্মীদের শামিল করতে তাঁদের ডেকে জেলা স্তরে বৈঠকের সুপারিশ করা হচ্ছে।

জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী তথা হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না বলেন, ‘‘নির্বাচনের লড়াইয়ে সাবইকে লাগবে। সবাইকেই বলছি আমরা। বিভিন্ন এলাকায় এখন যাঁরা কাজটা করছেন তাঁরা যাতে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলেন, তা নিয়ে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। দলের পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাককেও কাজে লাগানো হচ্ছে। আমরা জিতবই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন