Lok Sabha Election 2024

উত্তম-অখিল শিবিরের ঐক্য! সমাধান বৈঠকে

কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কয়েক বার রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে যান তৃণমূল প্রার্থী। যদিও তাঁর সঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক প্রথা রাজ্যের মন্ত্রীকে অধিকাংশ সময়ে দেখা যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

'উত্তম-অখিল' শিবিরে দ্বন্দ্বের ইতি! ঘাসফুল শিবিরের তরফে অন্তত এমনই দাবি করা হচ্ছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার এক মঞ্চে হাজির ছিলেন কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিক, রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি এবং যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। এ দিন বিকেলে কাঁথি শহরের বীরেন্দ্র স্মৃতি সৌধে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে একটি প্রস্তুতি সভা আয়োজন করে শহর তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচনী কমিটি। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিকের সঙ্গে একই মঞ্চে হাজির ছিলেন রামনগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি।

কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কয়েক বার রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে যান তৃণমূল প্রার্থী। যদিও তাঁর সঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক প্রথা রাজ্যের মন্ত্রীকে অধিকাংশ সময়ে দেখা যায়নি। যা নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা চলছিল। এ দিন অবশ্য শুধু অখিল একা নন, যারা উত্তমের বিরোধী শিবিরের নেতা হিসাবে পরিচিত তাঁদের অনেকেই এ দিন উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, উত্তমকে জয়যুক্ত করার জন্য কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকায় পৃথক নির্বাচনী কমিটি তৈরি করা হয়। দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান হন সুপ্রকাশ, রামনগরের দায়িত্ব পেয়েছেন অখিল আর উত্তর কাঁথি বিধানসভা এলাকায় নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন তরুণ। সুপ্রকাশকে তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচনী বৈঠকে দেখা গেলেও তরুণ আর অখিলকে উত্তমের সঙ্গে প্রচারে দেখা যায়নি। এর ফলে প্রার্থীর প্রচার কিছুটা হলেও বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল।

Advertisement

এ দিকে কাঁথিতে বরাবর অধিকারী পরিবারের দাপট রয়েছে। উত্তমের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির সৌমেন্দু অধিকারী। গত বিধানসভা ভোটে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে চারটিতে জয়ী হন পদ্ম প্রার্থীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও গত বছর গেরুয়া দাপট দেখেছে কাঁথি। এ হেন পরিস্থিতিতে এ বার লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে যথেষ্ট কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সে ক্ষেত্রে গত বিধানসভা ভোটের মতো দলের গোষ্ঠী কোন্দল ঘিরে আশঙ্কা রয়েছে তৃণমূলে।

সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র কাঁথি এবং তমলুকের পর্যবেক্ষক হিসেবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ করেছে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। তমলুকের পাশাপাশি কাঁথিতেও বিক্ষুব্ধ শিবিরের নেতাদের নিয়ে পৃথক ভাবে বৈঠক করেন রাজীব। সংশ্লিষ্ট ব্লকের তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার শীট বলছেন,"উত্তম এবং তরুণ দু’জনেই দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এঁদের মানসিক দূরত্ব রয়েছে। তা দূর করতেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করেছেন।"

তা হলে কি শেষ পর্যন্ত অখিল এবং উত্তম শিবিরের দ্বন্দ্ব ঘুচেছে? এ বার কি একসঙ্গে উত্তমের সমর্থনে প্রচারে দেখা যাবে তরুণ, সুপ্রকাশ এবং অখিলকে? এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ কান্তি পণ্ডা বলেন," ডানপন্থী দলে মতানৈক্য থাকে। নির্বাচন এলে সেই মতানৈক্য মিটে যায়। সকলে কাঁধে কাঁধ রেখে প্রচার করা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।"

যদিও, শাসক দলকে কটাক্ষ করে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন,"দ্বন্দ্ব আসলে কাটমানির ভাগ নিয়ে। লোকসভা নির্বাচনের আগে লোক দেখানো একতা দাবি করছে তৃণমূল। মানুষ বুঝে গিয়েছে তৃণমূল মানে চোর। চোরেদের বিরুদ্ধে মানুষ ভোট দেবে।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন