Lok Sabha Election 2024

‘বড়’ পরিকল্পনায় দুশ্চিন্তা নয়, বৈচিত্র বজায়েও ‘অভয়’ মোদীর

মোদীর ‘আশ্বাস’, ‘‘আমার কিছু বড় মাপের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু তা নিয়ে কারও ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কাউকে ভয় দেখানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিই না। বরং কাজ করি দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৩৩
Share:

তিরুনেলভেলিতে সভা নরেন্দ্র মোদীর। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

বিজেপি একাই ৩৭০ আর এনডিএ ৪০০। তৃতীয় বার মসনদে ফিরতে দল এবং জোটের সামনে এই বিপুল সংখ্যক আসন জয়ের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে বার বার দাবি করেছেন, এত দিন তাঁর সরকার যা যা করেছে, তা নিছকই নমুনা বা ‘ট্রেলার’। তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরলে বেশ কয়েকটি ‘বড়’ পদক্ষেপ করবেন তাঁরা। তা শুনে প্রচারে বিরোধীদের অভিযোগ, চারশো আসন পার করে ক্ষমতায় ফিরলে সংবিধানই পাল্টে দেবে মোদী সরকার। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, তাঁর লক্ষ্য দেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন। কাউকে ভয় পাইয়ে দেওয়া তাঁর সরকারের উদ্দেশ্য নয়।

Advertisement

ক্ষমতায় ফিরলে ‘বড়’ পরিকল্পনা কী, তা এ দিন স্পষ্ট না করলেও মোদীর ‘আশ্বাস’, ‘‘আমার কিছু বড় মাপের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু তা নিয়ে কারও ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কাউকে ভয় দেখানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিই না। বরং কাজ করি দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি ঠিক অভিমুখে কাজ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তার পরেও অনেক কাজ বাকি থেকে যায়। তাই বলেছি, যা কাজ হয়েছে তা নমুনা মাত্র।’’ মোদীর দশ বছরে এই কাজ এবং সাফল্যের দাবি অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছেন বিরোধীরা। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, ‘‘গত ১৫ মাসে সরকারি কাজের গতি ক্রমশ শ্লথ হয়ে পড়েছে। দেশে ১৮২১টি প্রকল্পের মধ্যে ৭৮০টিই দেরিতে চলছে।’’

দলীয় ইস্তাহারে কোথাও উল্লেখ নেই যে, কেন ৪০০ আসনের লক্ষ্যের কথা বার বার বলছেন মোদী-সহ বিজেপি নেতৃত্ব। মোদীর মুখে তৃতীয় বার ক্ষমতায় এলে ‘বড় মাপের’ একাধিক পদক্ষেপের কথা শোনা গেলেও, সেগুলি কী, তা নিয়ে ধোঁয়াশা বহাল এখনও। আবার এরই মধ্যে দক্ষিণের বিজেপি নেতা অনন্ত হেগড়ে, মিরাটে বিজেপিপ্রার্থী অরুণ গোভিলরা ৪০০ অঙ্কের চাহিদার পিছনে সংবিধান পরিবর্তনের সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, মোদী ফিরলে, এক দেশ-এক ভোট-এক পোশাক-এক খাদ্যাভ্যাসে মানুষ বাধ্য হবেন কি না। কিন্ত প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আমি বৈচিত্রকে সম্মান করি। তাই নাগাল্যান্ডে গেলে সেখানকার পোশাক পরি, আবার চেন্নাইয়ে গেলে সেখানকার। বৈচিত্রকে শ্রদ্ধা করি বলেই ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিংও আঞ্চলিক ভাষায় পড়ার সুযোগ করে দিয়েছি।’’ বিরোধীরা যদিও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, একেবারে হালেও ‘নবরাত্রির সময়ে’ আমিষ খাওয়াকে ‘মোগল সংস্কৃতি’র তকমা দিয়েছেন মোদী।

Advertisement

নির্বাচনের আগে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে ইডি-সিবিআইকে অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এ দিন সেই প্রসঙ্গে মোদীর জবাব, ‘‘কত জন বিরোধী নেতা জেলে? অথচ এঁরাই এক সময়ে দেশ শাসন করতেন।’’ মোদীর দাবি, ‘‘ইডির হাতে থাকা মামলাগুলির মধ্যে মাত্র তিন শতাংশে অভিযুক্ত রাজনৈতিক নেতারা। ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত ইডি মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল। কিন্তু আমার সময়ে তাদের বাজেয়াপ্ত করা সম্পত্তির অঙ্ক ১ লক্ষ কোটি টাকা। এই টাকা কি দেশের মানুষের টাকা নয়?’’ আগামী দিনেও ইডি-সিবিআইয়ের সক্রিয় থাকার ইঙ্গিত দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই বহাল থাকবে।’’

ডেরেকের দাবি, ‘‘২০১৪ সালের পর থেকে রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধেই ৯৫% মামলা করেছে ইডি। আর যে সব নেতার বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআইয়ের মামলা রয়েছে, তাঁদের দশ জনের মধ্যে ৯ জনই ছাড় পেয়েছেন বিজেপিতে যোগ দিয়ে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন