পথে বেরিয়ে ভোগান্তির আশঙ্কা কিছু জায়গায়
TMC Jana Garjana

বাস ‘বুকিং’ কম, ব্রিগেডের পথে শাসকের ভরসা ট্রেন

শ্রীরামপুর-বীরশিবপুর ৪০ নম্বর রুটের খান পঁচিশ বাসের মধ্যে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ‘বুক’ হয়েছে গোটা আটেক। শ্রীরামপুর-সল্টলেক ২৮৫ নম্বর রুটের একটি বাসও ‘বুক’ হয়নি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪ ০৮:০৫
Share:

বাসের অপেক্ষায়। শনিবার সকালে আরামবাগে। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP

ব্রিগেডে ‘জনগর্জন সভা’য় যেতে আজ, রবিবার মূলত ট্রেনই ভরসা হাওড়া ও হুগলির তৃণমূল নেতৃত্বের। অতীতের ব্রিগেডের তুলনায় বাস যাবে অনেক কম।

Advertisement

তা হলে কি লোকে টান পড়ল? এমন জিজ্ঞাসা সপাটে উড়িয়ে দিচ্ছেন শাসকদলের নেতৃত্ব। দলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের দাবি, ‘‘এখান থেকে ৫০-৬০ হাজার লোক যাবেন। কয়েকটি এলাকা ছাড়া ট্রেনেই সুবিধা। ছুটির দিনে অফিসযাত্রীদের ব্যাপার নেই। বাসে খরচের ব্যাপারও আছে। তাই ট্রেনেই বেশি যাবেন। ম্যাটাডরও যাবে।’’

জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক দেবব্রত ভৌমিক জানান, চুঁচুড়া থেকে চারটি রুট মিলিয়ে ৫৬টি বাস চলে। গোটা 25 ‘বুক’ হয়েছে। পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনিসুল ইসলামের দাবি, পান্ডুয়া থেকে বাসের পাশাপাশি অনেকেই ট্রেনেও যাবেন।

Advertisement

শ্রীরামপুর-বীরশিবপুর ৪০ নম্বর রুটের খান পঁচিশ বাসের মধ্যে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ‘বুক’ হয়েছে গোটা আটেক। শ্রীরামপুর-সল্টলেক ২৮৫ নম্বর রুটের একটি বাসও ‘বুক’ হয়নি। এক বাসমালিক বলেন, ‘‘রুটে বাস প্রায় স্বাভাবিক থাকবে।’’ তৃণমূলের বক্তব্য, সার্বিক ভাবে অর্ধেক বাস চলবে। রবিবার রাস্তায় লোক কম থাকবেন। মানুষের তেমন সমস্যা হবে না।

তবে, আরামবাগ মহকুমায় দূরপাল্লা এবং রুটের বাস ক’টা থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। শনিবার থেকে বাস নেওয়া শুরু করেছে তৃণমূল। ফলে, সাধারণ মানুষের ভোগান্তির আশঙ্কা কমছে না। বাসমালিকরা জানান, যতগুলির ভাড়া মিটবে, ততগুলি বাস ব্রিগেডে যাবে। বাকিগুলি থাকবে। যাত্রীদের সম্ভাব্য দুর্ভোগ নিয়ে মহকুমাশাসক (আরামবাগ) সুভাষিণী ই বলেন, ‘‘বিষয়টি আরটিও দেখছেন।’’ এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য আমরা রাস্তায় থাকব।’’

শনিবার রাত থেকেই হুগলি হয়ে ব্রিগেডে যাচ্ছে বহু গাড়ি। হুগলি গ্রামীণ জেলা ও চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশের দাবি, নির্বিঘ্নে যাতায়াতে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিল্লি রোড, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে, জিটি রোড, অসম লিঙ্ক রোড, আরামবাগ-তারকেশ্বর রোড, অহল্যাবাই রোড ইত্যাদি সড়কে নজর থাকবে। সড়কপথে কলকাতা ঢোকার অন্যতম প্রবেশদ্বার ডানকুনি হয়ে পূর্ব-বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূমের বহু বাস ব্রিগেডে যাবে। ফলে, কমিশনারেটের কর্তারা ডানকুনিতে এক্সপ্রেসওয়েতে নজরদারিতে থাকবেন।

সিপি অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘সর্বত্রই যথাযথ ব্যবস্থা থাকছে। ডানকুনিতে বাড়তি পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে। পদস্থ অফিসারদের সঙ্গে আমি নিজেও ডানকুনিতে সকাল থেকেই থাকব।’’

তৃণমূলের দাবি, গ্রামীণ হাওড়া থেকে ব্রিগেডে লক্ষাধিক লোক যাবেন। পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় জানান, প্রত্যন্ত এলাকার কর্মী-সমর্থকেরা ছোট গাড়িতে রেল স্টেশনে আসবেন। ট্রেনে হাওড়ায় পৌঁছে মিছিল করে ব্রিগেডে যাবেন। তবে সব ছোট গাড়ি তোলা হচ্ছে না। কিছু থাকছে যাত্রী পরিবহণের জন্য। উলুবেড়িয়া, শ্যামপুরের কর্মী-সমর্থকেরা জলপথেও যাবেন। দলের গ্রামীণ জেলা সভাপতি অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘যাত্রীদের দুর্ভোগ এড়াতেই মূলত লোকাল ট্রেনে বেশিরভাগ কর্মী-সমর্থককে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত।’’

তবে উদয়নারায়ণপুরে বাসের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে। উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত দাস জানান, এখানকার বিভিন্ন এলাকা থেকে হাওড়া পর্যন্ত চলা ৮০টি বাসের মধ্যে ৬০টি ব্রিগেডে যাবে। জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘উদয়নারায়ণপুরে ট্রেনপথের সুবিধা না থাকায় বাস নিতেই হয়েছে। রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় নিত্যযাত্রীরা বেরোবেন না। কিছু বাস থাকছে। ট্রেকারও চলবে। মানুষের অসুবিধা হবে না।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, দুই মেদিনীপুর থেকে প্রচুর বাস ব্রিগেডে যাবে। ফলে হাওড়ায় মুম্বই রোডে চাপ থাকবে। গ্রামীণ জেলার এক পুলিশকর্তা জানান, পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল প্রয়োজনমতো নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন