নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে যে দল, সেই দলের কাছ থেকে এই আচরণ কিছুতেই কাম্য নয়।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরমুহূর্ত থেকেই প্রতিহিংসার দাপাদাপি গোটা রাজ্যে। প্রতিহিংসা একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে শীর্ষ মহল পর্যন্ত।
গ্রামের বুথে বুথে, শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ‘শিক্ষা দেওয়া’র মহান ব্রত মাথায় তুলে নিয়ে উন্মত্তের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে শাসক দল। রোজ প্রতিহিংসার খবর আসছে।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের পদক্ষেপেও প্রতিহিংসার ছায়াপাত যেন। অপছন্দের আইএএস, আইপিএসদের শায়েস্তা করার পালা শুরু হয়েছে।
দুই ধরনের প্রতিহিংসার চরিত্র অবশ্য আলাদা। পাড়ায় পাড়ায় যা চলছে, তার মধ্যে রয়েছে একটা অস্বীকার। হিংসার খবর রোজ আসে, আর রোজ শোনা যায় কোথাও কোনও হিংসা নেই।
শীর্ষ পদাধিকারীর ক্ষেত্রে অস্বীকার নেই। ঘোষণা রয়েছে একটা। নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চ থেকেই উচ্চারিত হয়েছিল সেই ঘোষণা। কাজ হচ্ছে সেই অনুযায়ীই। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ঘোষণার অতিরিক্তও হচ্ছে।
তৃণমূল আত্মবিস্মৃত হচ্ছে বলে মনে হয়। ভোটের দামামা বাজার পর থেকে ১৯মে সকাল পর্যন্ত তৃণমূল শুধুমাত্র একটা পক্ষ ছিল। ভোটের ময়দানে যতগুলি পক্ষ সামিল, তাদের মধ্যে একটি পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করছিল তৃণমূল সে সময়। কিন্তু ১৯ মে দুপুরের পর থেকে তৃণমূল কোনও পক্ষের প্রতিনিধি নয়, শাসক দল হিসেবে গোটা রাজ্যের প্রতিনিধি। ১৯ মে দুপুরের পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু তৃণমূলের নন, গোটা রাজ্যের নেত্রী। এই ভূমিকার কথা বিস্মৃত হলে চলবে কী করে?
রাজধর্মে ফেরার সময় হয়েছে। এক জন নাগরিকও যদি নিজেকে প্রান্তিক মনে করেন, তা হলে তা প্রশাসকের লজ্জা। পক্ষ ত্যাগ করে রাজধর্মে ফিরুন মমতা। শপথ গ্রহণের প্রাক-মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই শপথ প্রত্যাশা করছে প্রান্তিক ওই মানুষেরা।