কাউকেই দোষ দিয়ে লাভ নেই। উলটপুরাণের যুগে রীতিচর্চিত পথে যে হাঁটবে না স্বাভাবিক বিবেকবুদ্ধি, এটা মাথায় রেখে দিলেই আর ঝামেলা থাকে না। শিবঠাকুরের আপন দেশে আইনকানুন নিয়ে কূটতর্ক, ঠিক-বেঠিকের দ্বন্দ্ব চলে না, এই সার সত্যটুকু বুঝে নিলে এই সব লেখালেখির কাজও বন্ধ করে রাখা যায়।
না বুঝলেই সর্বনাশ, না বুঝলেই প্রশ্নগুলোর যন্ত্রণা। বেলেঘাটায় সিপিএম এজেন্ট অভিযোগ করবেন নিগ্রহের, আর তাঁকেই তুলে নিয়ে যাবে পুলিশ? শিরদাঁড়া খাড়া করেছিল যে পুলিশ এই মাত্র দিন কয়েক আগেই, পুনর্মূষিকে রূপান্তরিত হয়ে গেল তারা, এত তাড়াতাড়িই? ‘বদলা নয়, বদল চাই’ স্লোগান বেরিয়ে এসেছিল যে মুখ থেকে, সেই মুখে এখন ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার হুঙ্কার? যা কিছু হওয়ার কথা ছিল, তার উল্টো পথেরই ইঙ্গিত কেন?
কারণ, উলটপুরাণের যুগ। শাসক-বিরোধী কাউকেই ছাড় দেয় না বিপরীতবুদ্ধির ডাক। না হলে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখে যাদবপুরের ছাত্রীদের প্রসঙ্গে এহেন অশালীন মন্তব্য বেরোতে পারে? শত ধিক্কারেও কি দিলীপবাবু বুঝবেন, তাঁর কথা কেন অশালীন হল? যে ছাত্রীরা অশালীনতার অভিযোগ তুলে বিচারপ্রত্যাশী, তাঁদেরই এক লহমায় কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে বিজেপি, এই আচরণে এই ভাষায়!
বি়চার চেয়ে নাগরিক যাবে রাষ্ট্রের কাছে, রাজন্যবর্গের কাছে, এটাই রীতি সুশাসনের। রাজন্যবর্গ বা রাষ্ট্র সেই বিচারপ্রত্যাশীকেই গরাদে পুরবে দ্রুত, এটা অরাজক পরিস্থিতির রীতি। সে যুগ উলটপুরাণের। যে কথা শুরুতেই বলছিলাম।