অরুণাভ ঘোষ
এক জন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী হিসেবে বাসিন্দাদের কাছে তাঁর অধিক পরিচিতি। বিনামূল্যে দুঃস্থদের মামলা লড়া, বিধাননগরে সম্পত্তিকর নিয়ে মামলা অথবা বাম আমলে সল্টলেকে জমি বণ্টন নিয়ে তাঁর প্রতিবাদী মেজাজের সঙ্গেও স্থানীয়েরা পরিচিত।
তিনি বর্ষীয়ান আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। নিন্দুকেরা বলেন, টিভির পর্দায় তিনি যত সক্রিয়, পথের আন্দোলনে তত ক্রিয়াশীল নন।
সাতের দশকে প্রেসিডেন্সির আঙিনায় ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকে তাঁর উপস্থিতি প্রবল। ২০০১-এ সিপিএমের ভরা বাজারেও দমদম কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন। পরে ফেরেন কংগ্রেসে।
যদিও বিধায়ক হিসেবে বিধানসভায় তাঁর ভূমিকা অনুচ্চারিত রয়ে গিয়েছে— আক্ষেপ আইনজীবীর। ২০০৩-এ আবর্জনা নিয়ে প্রাইভেট মেম্বারস বিল উত্থাপন থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে রাতে মহিলাদের কাজ নিয়ে বিধানসভায় সোচ্চার হয়েছিলেন অরুণাভ। প্রাথমিক ভাবে বামেরা আমল না দিলেও দুই ক্ষেত্রেই তাঁরা অরুণাভবাবুর প্রস্তাব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
১০ বছর বাদে ফের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হওয়ার নেপথ্যে মুখ্য ভূমিকায় বিধাননগর পুরভোটের ‘সন্ত্রাস’। সেই ভোটের আগে ‘সন্ত্রাস’ ঠেকাতে সিটিজেন্স ফোরাম তৈরিতেও অগ্রণী ভূমিকা ছিল তাঁর। ভোটের দিন ‘সন্ত্রাস’ দমনে পথেও নামেন। সেই সূত্র ধরে তিনি কংগ্রেস ও সিপিএমের ভোট সমঝোতায় অন্যতম প্রবক্তা। সেই ভোটে ‘সন্ত্রাস’-এর ঘটনায় যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই সুজিত বসুই এ বার তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী। ভোটারদের কথায়, এ যেন রাজনীতির ময়দানে ‘জেন্টলম্যান’ আর পেশি-অর্থ শক্তির প্রতিভূর লড়াই। আর তাঁর কথায়, ‘‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নয়, বাসিন্দাদেরও পথে নামতে হবে।’’
কিন্তু ভাল আইনজীবী হলেই দক্ষ রাজনৈতিক হওয়া যায়? অরুণাভবাবুর দাবি, বিশিষ্ট আইনজীবীরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেশে অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। তৃণমূল বলছে, অরুণাভবাবুর মতো ব্যস্ত আইনজীবী বিধায়ক হলে কী করে সময় দেবেন? তাঁর জবাব, ‘‘বিধায়কের ভূমিকা গুলিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। এটা ভোটযুদ্ধের কৌশল। এই ধারণা বদলাতে হবে।’’