ভোট ব্যাঙ্ক অটুট, এ বার জোর সংগঠনে

সব অনুমান ওলটপালট করে দিয়ে এ বার বিধানসভায় তাক লাগানো ফল করেছে বিজেপি। পশ্চিম মেদিনীপুরেও ছবিটা আলাদা নয়। জঙ্গলমহলের এই জেলায় গত লোকসভার ফল ধরে রাখতে সফল হয়েছে গেরুয়া-শিবির। এ বার খড়্গপুর সদর বিধানসভায় জিতেছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৬ ০০:৫৫
Share:

সব অনুমান ওলটপালট করে দিয়ে এ বার বিধানসভায় তাক লাগানো ফল করেছে বিজেপি। পশ্চিম মেদিনীপুরেও ছবিটা আলাদা নয়। জঙ্গলমহলের এই জেলায় গত লোকসভার ফল ধরে রাখতে সফল হয়েছে গেরুয়া-শিবির।

Advertisement

এ বার খড়্গপুর সদর বিধানসভায় জিতেছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জেলার অন্যত্রও মোটের উপর লোকসভার ফল ধরে রেখেছে বিজেপি। পরিসংখ্যান বলছে, গত লোকসভায় পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি। এ বারও তাদের ঝুলিতে এসেছে প্রায় ১০ শতাংশ ভোট। দলের একাংশের ব্যাখ্যা, বামেদের ভোট কমেছে। কংগ্রেসের ভোট কমেছে। তবে জেলায় বিজেপির ভোট না বাড়লেও কমেনি। আর এই ফলের উপরে ভর করেই আগামীতে জেলায় দলকে আরও মজবুত ভিতের উপরে দাঁড় করাতে সচেষ্ট হয়েছেন নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি ধীমান কোলে বলেন, ‘‘বিধানসভায় যে সমর্থন মিলেছে তাকে ধরে রাখতে হবে। আরও বেশি সংখ্যক মানুষ যাতে আমাদের দিকে আসেন, তার চেষ্টা করতে হবে। সংগঠন আরও মজবুত হবে।’’

হিসেব বলছে, এ বার বিধানসভায় জেলায় জোট পেয়েছে ৩৪.২১ শতাংশ ভোট। তৃণমূল পেয়েছে ৫১.৫৪ শতাংশ। বামেদের একাংশ মনে করেছিল, গত লোকসভার ভোট ধরে রাখতে পারবে না গেরুয়া-শিবির। সেই ভোট তাদের অনুকূলে আসবে। কিন্তু তা হয়নি। অথচ মিশ্র ভাষাভাষির শহর খড়্গপুর-সহ হাতেগোনা কিছু এলাকা ছাড়া জেলায় বিজেপির তেমন সংগঠন নেই। মোদী হাওয়ায় ভর করে কার্যত বিনা সংগঠনেই ২০১৪-এর লোকসভায় বিজেপি ১০ শতাংশ ভোট পায়। জেলার তিনটি আসনের মধ্যে মেদিনীপুরেই ভোটপ্রাপ্তি ছিল তুলনায় বেশি, ১৪ শতাংশ। ঘাটালে ৭ শতাংশ এবং ঝাড়গ্রামে ১০ শতাংশ। লোকসভার হিসেবে জেলার ১৯টি বিধানসভার মধ্যে যেখানে একটিতেও এগিয়ে ছিল না বামেরা, সেখানে খড়্গপুর সদরে এগিয়ে ছিল বিজেপি। ঘটনা হল, এ বার বিধানসভাতেও জেলায় খাতা খুলতে পারেনি বামেরা। কিন্তু খড়্গপুর সদরে জিতেছে বিজেপি।

Advertisement

অথচ গত পুরভোটে খড়্গপুরে বিজেপির প্রত্যাশিত ফল হয়নি। তা ছাড়া, এ বার মোদী হাওয়া না থাকায় জেলায় দলের ভোট ব্যাঙ্ক অটুট থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল গেরুয়া-শিবিরে। আপাতত তাই বিজেপির লক্ষ্য, বিধানসভার এই জনসমর্থনকে সাংগঠনিক খাঁচার মধ্যে নিয়ে আসা। সোমবার বিজেপির জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে সাংগঠনিক কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দল সূত্রে খবর, এ বার জেলায় সংগঠন বাড়ানোর কাজ শুরু হবে। কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক হবে। বুথ-ভিত্তিক সংগঠনে বেশি জোর দেওয়া হবে। এখন সব ব্লকে সমান পরিকাঠামো নেই। অনেক ব্লকে দলের অফিসও নেই। তাই যেখানে যেমন পরিকাঠামো প্রয়োজন, সেখানে তা তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে জেলা থেকে সব রকম সাহায্য করা হবে। বিজেপির এক জেলা নেতা মানছেন, ‘‘দু’বছর আগের লোকসভার তুলনায় রাজ্যে দলের ভোট কমেছে। অথচ পশ্চিম মেদিনীপুরে কমেনি। এই সাফল্য ধরে রাখতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন