চাপ কোথায়, বলেও থমকে যাচ্ছেন প্রার্থী

নিজের এলাকায় ভোট মিটে গিয়েছে সেই ১১ এপ্রিল। কিন্তু ৩ মে অবধি তিনি বিশেষ অবসর পাননি। রাজ্যের অন্য নানা কেন্দ্রে দলের প্রচারেও সামিল হতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেই পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও ফলে বেরোনোর আগে বেশ খানিকটা সময়।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০১:১২
Share:

উপর থেকে, মলয় ঘটক, ইন্দ্রাণী মিশ্র ও নির্মল কর্মকার। ছবি: শৈলেন সরকার।

নিজের এলাকায় ভোট মিটে গিয়েছে সেই ১১ এপ্রিল। কিন্তু ৩ মে অবধি তিনি বিশেষ অবসর পাননি। রাজ্যের অন্য নানা কেন্দ্রে দলের প্রচারেও সামিল হতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেই পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও ফলে বেরোনোর আগে বেশ খানিকটা সময়। টেনশনটা যেন এ বার একটু হলেও টের পাচ্ছেন রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী আসানসোল উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী মলয় ঘটক। তবে শুধু তিনি নন, একই অবস্থা এই কেন্দ্রের অন্য প্রার্থীদেরও।

Advertisement

মলয়বাবুর অবশ্য দাবি, তিনি কোনও রকম টেনশনে নেই। দলের ঠাসা কর্মসুচি থাকায় টেনশন করার সময়ই পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি। নিজের কেন্দ্রের ভোট মিটতেই ছুটেছেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। বস্তুত, ৩ মে পর্যন্ত জেলায়-জেলায় দলের প্রচারে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে তাঁকে। ভোট মেটার পরে বাড়ি ফিরেছেন। আর তার পর থেকে দলের নেতা-কর্মী-অনুগামীদের ভিড় লেগে রয়েছে বাড়িতে। জানালেন, নানা সমস্যা নিয়ে আসছেন সাধারণ মানুষজনও। মলয়বাবু বলেন, ‘‘২০০৬ সালে প্রথম বার জিতেছি। তার আগে-পরে একাধিক বার হেরেছি। হার-জিত, দুই-ই আমার কাছে সমান। কাজ করেছি, মানুষই তার বিচার করবেন। বঞ্চিত হব না।’’ এ বার বাম-কংগ্রেস জোটের তরফে এই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। তাতে সিপিএমের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে বলে খবর। সেই অংশের ভোট তো তাঁর দিকে আসতে পারে? এ বার টেনশনের ছাপ মলয়বাবুর গলায়। তিনি বলেন, ‘‘ওরা যদি বিজেপিকে ভোট দিয়ে থাকে তাহলে আর কী হবে!’’

ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা আগেও হয়েছে কংগ্রেসের প্রার্থী ইন্দ্রাণী মিশ্রের। গত লোকসভা ভোটে আসানসোল কেন্দ্রেই দলের প্রার্থী ছিলেন। সে বার আসানসোল উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তিনি ১০ হাজার ভোটও পাননি। সেখানে তৃণমূল পেয়েছিল প্রায় ৫৫ হাজার ভোট। এই ব্যাবধান টপকে জয় পাওয়া কি সম্ভব? সংশয়ে দলেরই এক জেলা নেতা। তাঁর দাবি, ‘‘অসম্ভব বলেই তো মনে হচ্ছে।’’ তবে ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই।’’ তিনি দলের সর্বভারতীয় যুব নেত্রী। তাই সংগঠনের কাজে ভোট মিটতেই ছুটতে হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতে। ফল নিয়ে কতটা টেনশনে রয়েছেন? একগাল হেসে জবাব দেন, ‘‘টেনশন না করার পরামর্শ দিয়েছেন রাহুলজি (গাঁধী)। ভোটের ফলাফল নিজের গতিতে চলবে। আমাকে সংগঠনের কাজ করে যেতে হবে।’’ তবু কি কিছু মনে হচ্ছে না? কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে গেলেন নবীন প্রার্থী। বোঝা গেল, স্নায়ুর চাপ রয়েছেই।

Advertisement

এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নির্মল কর্মকার অবশ্য কোনও রাখঢাক রাখছেন না। সাফ জানাচ্ছেন, ফলাফল নিয়ে অল্প হলেও চাপ অনুভব করছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘একটু টেনশন তো হচ্ছেই। তবে আমার তো হারানোর কিছু নেই। তাই চাপ কম।’’ গত লোকসভা ভোটের ফলই তাঁর বড় ভরসা। জানালেন, সেটা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। যদিও নিশ্চিত হতে পারছেন না তাঁর দলের অনেক নেতা-কর্মী। অন্তর্ঘাতের আশঙ্কার কথা তুলে দলের এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘শুনেছি এলাকার কাউন্সিলরদের গতিবিধি খুব একটা ভাল ছিল না।’’

ফলের গতি কোন দিকে যায়, তা জানতে এখনও তিন দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন