চাপ এড়াতে কারও বেড়েছে পুজোর সময়, কেউ দলীয় অফিসে আড্ডায়

মাস দুয়েক ধরে ঝোড়ো ব্যাটিং করে নিজের কাজটুকু করে দিয়েছেন। এখন ১৯ মে পর্যন্ত শুধু ম্যাচ শেষের টেনশনের প্রতীক্ষা। সেদিনই জানা যাবে তাঁর ব্যাটিং দলকে লড়াইয়ে উতরে দিতে পারল, না কি বিপক্ষের দাপটে কোনও কাজেই এল না তাঁর ব্যাটিং।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০১:৩২
Share:

জোনাল অফিসে কর্মীদের সঙ্গে অসিত মালিক (মাঝে)।ছবি:মোহন দাস।

মাস দুয়েক ধরে ঝোড়ো ব্যাটিং করে নিজের কাজটুকু করে দিয়েছেন। এখন ১৯ মে পর্যন্ত শুধু ম্যাচ শেষের টেনশনের প্রতীক্ষা। সেদিনই জানা যাবে তাঁর ব্যাটিং দলকে লড়াইয়ে উতরে দিতে পারল, না কি বিপক্ষের দাপটে কোনও কাজেই এল না তাঁর ব্যাটিং।

Advertisement

মার্চের ৪ তারিখ। দলনেত্রীর মুখে আরামবাগের প্রার্থী হিসাবে নিজের নাম শোনামাত্রই ভোটের প্রচার ও অন্যান্য কাজের পরিকল্পনা করতে অনুগামীদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তৃণমূল প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। প্রতিদিন সকালে বেরিয়ে নিজের কেন্দ্রে গ্রামে গ্রামে ঘোরা, কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাপটে হতদ্যোম হয়ে পড়া কর্মীদের চাঙ্গা করে ফের কাজে নামানো। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত দম ফেলার ফুরসত পাননি কৃষ্ণবাবু। মা মনসার ভক্ত তিনি। রোজ সকালে স্নান সেরে আধঘণ্টা মনসাপুজো করা তাঁর রুটিন। কিন্তু ভোটের চাপে সেই রুটিনেও ব্যাঘাত ঘটেছে। নিয়মিত পুজো হলেও সময়ে ঘাটতি হয়েছে। মায়ের কাছে অবশ্য সে জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। ৩০ এপ্রিল জেলায় ভোট পর্ব চুকে গিয়েছে। অতঃপর ফুরফুরে মেজাজে তিনি। না, ভুল হলো। জানালেন, তখন ভোটের জন্য মাকে পুজোয় একেক দিন পুরো সময় দিতে পারেননি। এখন তাই বাড়তি পনেরো মিনিট ধরে মায়ের পুজো করছেন।

মায়ের কাছে জয় চাইছেন? বললেন, “উন্নয়নের নিরিখে আমাদের জয় নিশ্চিত। তা সত্ত্বেও কি হয়, কি হয় একটা উচাটন থাকছে মনে। সেটা কাটাতে বেশিক্ষণ ধ্যান করছি।”

Advertisement

সকালে পুজো সেরে গ্রামের দলীয় কার্যালয়ে বুড়িছোঁয়া করে অন্যান্য অঞ্চলের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মেরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে বিকেল ৩টে। মাঝের সময়টায় ২০ থেকে ২৫ কাপ চা। বাড়ি ফিরে দুপুরের খাওয়া সেরে খানিকটা জিরিয়ে নেওয়া। সন্ধ্যায় একটু এদিক ওদিক ঘুরে এসেই টিভির সামনে। বলেন, ‘‘ভোটের জন্য আইপিএলটা ঠিকঠাক দেখতে পারিনি। এখন দেখছি।’’ ফল নিয়ে কোনও টেনশন? উত্তর এল, ‘‘সমস্যা হলো যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই প্রশ্ন, ভোটের ফল তৃণমূলের অনুকূলে থাকবে কিনা! শাসকদলে থাকায় একটা গুরুদায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে আমাকে। ফল ঘোষণার পর এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা যাতে বজায় রাখা যায় তা নিয়ে সজাগ থাকতে হচ্ছে।’’

প্রতিপক্ষ জোটের সিপিএম প্রার্থী কী করছেন?

পুরশুড়া জঙ্গলপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অসিত মালিকের কথায়, ‘‘ভোটের রাত থেকে তৃণমূলের হাতে মার খাওয়া দলের কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছি। কাউকে হাসপাতালে ভর্তি করছি। সন্ত্রস্ত গ্রামগুলোতে যাচ্ছি, থানায় অভিযোগ জানাচ্ছি। এই করেই দিনের অনেকটা সময় কেটে যাচ্ছে। তবে তার মধ্যে সকালে বাড়ির বাজারটা করতে হচ্ছে। বুধবার থেকে স্কুলে যাওয়াও শুরু করেছি।”

নির্বাচনের ফল নিয়ে কোনও টেনশন?

‘‘ও সব নিয়ে টেনশনের মানে হয় না। আমিই জিতব।’’ আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ল অসিতবাবুর গলায়। ফের জানান, ও সব নিয়ে চিন্তা না করে বিভিন্ন গ্রামের গরিব পাড়াগুলির তালিকা করছেন। কোথায় কি উন্নয়ন দরকার। চলছে তার পরিকল্পনা তৈরি। সবই চলছে দলের জোনাল অফিসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে। তবে যেখানেই থাকুন, টিভিতে খবর এবং রাজনৈতিক আলোচনা দেখতে ছাড়ছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন