নির্বাচন কমিশন সব দেখছে। সব জানে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে কমিশনকে হুমকি দিয়ে তাদের উপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টায় নেমেছেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নসীম জৈদীদের দ্বারস্থ হচ্ছে কংগ্রেস।
শুক্রবার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির সভা থেকে প্রকারান্তরে নির্বাচন কমিশন তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। রাজ্যে বিপুল সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত কটাক্ষ করে এও বলেন, এ বার কি আমেরিকা থেকে পুলিশ আনা হবে! কংগ্রেস নেতাদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী এ কথা বলে একে তো কমিশনের ওপর চাপ তৈরি করতে চাইছেন। সেই সঙ্গে দলের নিচু তলাকে চাঙ্গা করতে চাইছেন। তাদের এ-ও বোঝাতে চাইছেন, কমিশনকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তা ছাড়া জেলাস্তরে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের ‘আমাদের লোক’ বলে মন্তব্য করে বিরোধী মানুষের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়াও মমতার লক্ষ্য।
সেই প্রসঙ্গ টেনেই শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘মমতা নিজেকে রাজনৈতিক জোকারের পর্যায়ে নামিয়ে এনেছেন! এক জন সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে অন্য একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় বা আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বাংলার সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিেয়ছেন। এটা লজ্জার।’’ অধীরের মতে, কমিশনকে এ ভাবে যাঁরা হুমকি দেন, তাঁরা বিরোধী দলের কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী আচরণ করতে পারেন তা বোধগম্য! আমরা চাইব কমিশন দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিক। প্রথম পর্যায়ের ভোট শুরুর আগেই এ ধরনের হুঁশিয়ারি বন্ধ করতে পদক্ষেপ করুক কমিশন।
অধীরদের অভিযোগ পাওয়ার আগেই দিল্লিতে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে এক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জৈদী এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভোট প্রচারে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা বা রাজনৈতিক আক্রমণের মান নীচে নামিয়ে আনার বিরুদ্ধে তাঁরাও এ বার কেমন কঠোর মনোভাব নিয়ে চলছেন। বৈঠকের পর জৈদী বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলিকে এ ব্যাপারে সংযত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তারাও সহযোগিতা করে চলারই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’’
এ দিনই কমিশনের শো-কজের জবাব দিয়েছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। বারাসত বিধানসভা এলাকায় একটি কর্মিসভা করার আগে কেন অনুমতি নেওয়া হয়নি, তা সেলিমের কাছে জানতে চেয়েছিল কমিশন। সেলিম জবাবে জানিয়েছেন, কোথাও কর্মিসভা হলে বক্তা তার অনুমতি নেন না। এটা আয়োজকদের দায়িত্ব।