গ্রামে এসে ছেলেবেলায় ফিরলেন খোকাবাবু

ধুলো উড়িয়ে হেলিকপ্টার যখন নামল, তখন দুপুর সওয়া বারোটা। সভামঞ্চের সামনে থাকা ভিড়টা মুহূর্তে ছুটে গেল হেলিপ্যাডের দিকে। মঞ্চে এলেন দেব। সঙ্গে মুকুল রায়। চটজলদি ভিড়টাও মঞ্চের সামনে ফিরে এল! সবে কেশপুরের ‘ইতিহাস-ভূগোল’ নিয়ে বলতে শুরু করেছেন মুকুলবাবু। ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে এলো চিৎকার, ‘দেব দেব’। জনতার দাবি বুঝতে অসুবিধে হল না মুকুলের।

Advertisement

বরুণ দে

কেশপুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৬ ০১:৩১
Share:

ছেলেমানুষি। কেশপুরে ভিড়ের মাঝে দেব। ছবি: কিংশুক আইচ

ধুলো উড়িয়ে হেলিকপ্টার যখন নামল, তখন দুপুর সওয়া বারোটা। সভামঞ্চের সামনে থাকা ভিড়টা মুহূর্তে ছুটে গেল হেলিপ্যাডের দিকে। মঞ্চে এলেন দেব। সঙ্গে মুকুল রায়। চটজলদি ভিড়টাও মঞ্চের সামনে ফিরে এল! সবে কেশপুরের ‘ইতিহাস-ভূগোল’ নিয়ে বলতে শুরু করেছেন মুকুলবাবু। ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে এলো চিৎকার, ‘দেব দেব’। জনতার দাবি বুঝতে অসুবিধে হল না মুকুলের। বলেই ফেললেন, “জানি আপনারা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছেন দেবের কথা শুনবেন বলে। আমি আর কথা বাড়াচ্ছি না। এ বার ও-ই বলবে।” উল্লাসে তখন কান পাতা দায়! রোদ চশমাটা খুলে দেব হাত নাড়লেন। আর তারপরই ফিরে গেলেন ছেলেবেলায়।

Advertisement

তৃণমূলের এই তারকা-সাংসদের দেশের বাড়ি কেশপুরের মহিষদায়। তাঁর কথায়, “ছোটবেলাটা আমার এখানেই কেটেছে। মহিষদার বাড়িতে পৈতেও হয়েছে।” এরপর এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানান দেব। তাঁর কথায়, “শান্তিটা অনেক বড় জিনিস। পৈতের সময় তিনদিন ঘরের মধ্যে থাকতে হয়েছিল। ঘরের মধ্যে থেকে ওই সময় বোমের আওয়াজ শুনেছিলাম! আগে অনেকে রাতের বেলায় বেরোতে ভয় করতেন। আমরাও যখন গ্রামের বাড়িতে আসতাম গাড়ি চেপে আসতাম না! তবে এখন আর কারও রাতের বেলায় বেরোতে ভয় করে না। এই শান্তি বজায় রাখতে হবে।’’

স্কুলছাত্রী রূপসানা বেগম বলছিল, “টিভিতে দেবদাকে দেখেছি। এখানেও টিভির মতো লাগছে!’’ সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে আসে আওয়াজ, ‘আমরা বড় নয়, ছোট!’ যা শুনে টলিউডের ‘খোকাবাবু’র রসিকতা, “ও তোমরা ছোটো না! তাহলে এখানে থাকা ছোটদের শুভেচ্ছা-ভালবাসা।”

Advertisement

কেশপুরের তৃণমূলপ্রার্থী শিউলি সাহার সমর্থনে সোমবার মুগবসানে সভা হয়। শুকনো চৈত্রের দুপুরে অনেকেই ঘামছিলেন। তবু দেব-দর্শনের জন্য মঞ্চের সামনেটা ছাড়েননি! এক সময় ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “রাজনীতির কচকচানি তো সব দিন হয়! তাই দেবকে নিয়ে এই উচ্ছ্বাস স্বাভাবিক!’’ এ দিন ডেবরার গোলগ্রামেও সভা করেন তৃণমূলের এই তারকা-সাংসদ। সেখানে লোয়াদায় সেতু চালুর আশ্বাস দেন দেব-মুকুল। দু’টি সভাতেই দেব বলেন, “আমি ভোট চাইতে আসিনি। দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী) অত্যন্ত ভালবাসি। আমার মনে হয় দিদির হাত ধরেই বাংলার, মানুষের, রাজ্যের উন্নয়ন হবে।” সভা শেষে ধুলো উড়িয়ে চলে যায় হেলিকপ্টার। স্কুলপড়ুয়া শেখ ফিরোজ, নাসরিন বেগমদের চোখ অনেকক্ষণ থেকে যায় আকাশের দিকে! কেশপুরে এসে দেব যে তাঁর ছোটবেলাকে ছুঁয়ে গেলেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন