রাজ্যে গুন্ডারাজ চলছে, সরব অমিত

দিন দু’য়েক আগেই খড়্গপুরের সভায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার নয়াগ্রামের সভায় প্রধানমন্ত্রীর তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এ দিন অমিত জানিয়ে দিলেন, পশ্চিমবঙ্গে গুন্ডারাজ চলছে। এখানকার নেতা-মন্ত্রীরা সারাদিন বসে বসে ঘুষ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন!

Advertisement

সুমন ঘোষ

নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৬ ০০:৫৭
Share:

দুই সভাপতি। নয়াগ্রামে অমিত শাহ ও দিলীপ ঘোষ। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

দিন দু’য়েক আগেই খড়্গপুরের সভায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার নয়াগ্রামের সভায় প্রধানমন্ত্রীর তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এ দিন অমিত জানিয়ে দিলেন, পশ্চিমবঙ্গে গুন্ডারাজ চলছে। এখানকার নেতা-মন্ত্রীরা সারাদিন বসে বসে ঘুষ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন! নয়াগ্রামে দলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অমিত বলেন, ‘‘বামফ্রন্টের আমলে চিটফান্ড শুরু হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে লালন-পালন করে বড় করেছেন। মমতাজিকে প্রশ্ন করছি, আপনার কি কোনও দায়বদ্ধতা ছিল কিনা? যে চিটফান্ড জনতার এত টাকা নিয়ে গেল তারপরেও আপনি চুপ করে বসেছিলেন। কেন? কারণ, আপনার সঙ্গে যোগ ছিল।’’

Advertisement

নারদ কাণ্ডে তৃণমূলের বিঁধে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, ‘‘১০ নেতা ঘুষ নিচ্ছেন বলে টিভিতে দেখা গেল। সারাদিন এই তৃণমূলের লোকেরা ঘুষ নেওয়ার পরিকল্পনা করে যায়।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করতে চাই, ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা পড়া নেতাদের পার্টি থেকে বহিষ্কার করার বিষয়ে কি আপনার দায়বদ্ধতা নেই? কিন্তু তা করবেন না। কারণ, যাঁরা ঘুষ নিয়েছেন তাঁরা কিছু বলে দিতে পারেন।’’

বক্তব্যে রাজ্যের ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম, কিশোর কুমার, আর ডি বর্মনের জন্মভূমি। বামফ্রন্ট ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনকালে রাজ্য অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে। বিজেপি-ই একমাত্র রাজ্যের পুরনো ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে পারে।” অমিত শাহের দাবি, “উন্নয়নের জন্য বাজেটে প্রতিটি গ্রামের জন্য ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে মোদী সরকার। প্রতি ছোট শহরের জন্যও বরাদ্দ করা হয়েছে ৩১ কোটি টাকা করে। যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকে। তাহলে সেই টাকা কি এখানে
পৌঁছবে? তাই এমন সরকার তৈরি করতে হবে যাঁরা তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করবে।”

Advertisement

বিজেপি-র সভার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন অসহযোগিতা করছে বলেও তাঁর অভিযোগ। এমনকি কর্মী-সমর্থকদের সমাবেশে আসার ক্ষেত্রেও তৃণমূল বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “দূরের মাঠে সভার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।’’ অমিত শাহ বলেন, “আজ দুপুর দু’টোতেও আমাকে ফোনে দলের রাজ্য সভাপতি জানালেন যে, মাঠে লোক আনতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। আমি তখনই বললাম, যদি ৫ জন সমর্থকও থাকে তবু আমি সমাবেশে যাব। দেখি কে আমায় আটকায়।” বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলার সভাপতি সুখময় শতপথীও বলেন, “তৃণমূল বাস নিতে দেয়নি। আমাদের কর্মীরা ১০-১৫ কিলোমিটার দূর থেকে মিছিল করে এসেছে। যদিও তৃণমূল এত চেষ্টা করেও সভা ভন্ডুল করতে পারেনি।”

এ দিনের সভায় বাংলার শিল্পের বেহাল দশার কথা উল্লেখ করে অমিত শাহ বলেন, ‘‘আগে রাষ্ট্রপতি থেকে মুখ্যমন্ত্রী, জেলাশাসকেরা বাংলায় তৈরি হওয়া ঐতিহ্যশালী অ্যাম্বাসাডর চড়ে ঘুরে বেড়াতেন। সেই কারখানাও বন্ধ হয়ে গেল!’’ তারপরই তাঁর কটাক্ষ, “মমতাজি সব কারখানা বন্ধ করেননি। বোমা তৈরির কারখানা চালু রেখেছেন। যেখানেই যাবেন সেখানেই আতঙ্ক। মমতাজি, বোমা দিয়ে বাংলার মানুষকে রুখতে পারবেন না। বাংলার জনতা পরিবর্তন চাইছেন। সেই পরিবর্তন আসতে চলেছে।’’ রাজ্যে নৈরাজ্য প্রশ্নে এ দিন বামফ্রন্টকেও বিঁধেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘আগে বামফ্রন্টে যত গুন্ডা ছিল, এখন তারা মমতাদিদির দলে।’’

বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশও বন্ধ করবেন বলে দাবি করেন অমিতবাবু। তাঁর কথায়, “সারা বাংলায় বাংলাদেশিরা ঢুকছে। তা বন্ধ করবে বিজেপি। আর কেউ করবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন