রাজনীতিতে বাজিমাত করতে চেয়েই তহলকা কাণ্ডের পরে ইস্তফা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জর্জ ফার্নান্ডেজ সে দিনই ইস্তফা দেবেন— এ কথা জেনেও তড়িঘড়ি পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ পনেরো বছর পরে মমতার বিরুদ্ধে এ ভাবেই বোমা ফাটালেন জর্জের ঘনিষ্ঠ নেত্রী জয়া জেটলি।
সমতা পার্টির প্রাক্তন সভাপতি আজ এক সাক্ষাৎকারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ইতিহাস ঘুরে গিয়ে আজ তৃণমূল নেত্রীকেই আঘাত করেছে। সে সময়ে তিনি বিধানসভা ভোটের কথা ভেবে আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন নৈতিকতার দোহাই দিয়ে।’’ ঘুষকাণ্ডে তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের জড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে জয়ার ব্যাখ্যা, ‘‘আজ যখন সেই একই ব্যক্তি মমতার দলের নেতাদের টাকা নেওয়ার ছবি তুলল, তখন তিনিই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন!’’
মমতার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী মুকুল রায় অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ রকম কোনও কথা কখনও শুনিনি। সেই সময় কোনও রাজনৈতিক দল কোনও বিবৃতিও দেয়নি। জয়া জেটলি কী দেখেছেন বলতে পারব না। কিন্তু এত দিন পরে এই সব কথা অপ্রাসঙ্গিক।’’
ঘটনাচক্রে দেড় দশক আগে এই ম্যাথু স্যামুয়েলের নেতৃত্বে স্টিং অপারেশনের জেরেই পদত্যাগ করতে হয়েছিল জর্জকে। দলের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় জয়াকেও। জেটলি জানাচ্ছেন, তহলকা কাণ্ডের পরে মমতা দীনেশ ত্রিবেদীর মাধ্যমে কয়েক দফা দাবি প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর কাছে পাঠান। বঙ্গারু লক্ষণ ও ফার্নান্ডেজের ইস্তফার দাবি করেছিলেন তিনি। বলা হয়েছিল, দাবি না মানলে সেদিন বিকেলেই ইস্তফা দেবেন মমতা।
জয়ার কথায, ‘‘বাজপেয়ীজি দীনেশের মাধ্যমে মমতাকে ইস্তফা না দিতে অনুরোধ করেন। কারণ ফার্নান্ডেজ সে দিনই বিকেল পাঁচটায় ইস্তফা দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে পাকা সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেটা জানা থাকা সত্ত্বেও মমতা তড়িঘড়ি বিকেল চারটেয় সাংবাদিকদের ডেকে ইস্তফার কথা জানিয়ে দেন। জয়ার দাবি, ‘‘পরে এই মমতাই জর্জের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিলেন।’’