ফেসবুকেও ছড়াল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

চিঠিচাপাটি নালিশের পরে দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব এবার সোস্যাল মিডিয়ার দেওয়ালেও আছড়ে পড়ল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০৪:৫১
Share:

সত্যেনের পাল্টা চিঠি।

চিঠিচাপাটি নালিশের পরে দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব এবার সোস্যাল মিডিয়ার দেওয়ালেও আছড়ে পড়ল।

Advertisement

গত ১৭ এপ্রিল এ জেলায় ভোটের দিন থেকে এ যাবত তৃণমূলের বিপ্লব মিত্র বনাম সত্যেন রায় গোষ্ঠীর মধ্যে ভোটে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলে পারস্পরিক দোষারোপ চলছিল। কয়েকদিন আগে বিপ্লব মিত্র ও তাঁর গোষ্ঠীর নেতাদের বিরুদ্ধে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো সত্যেনগোষ্ঠীর নেতা অমলেন্দু সরকারের চিঠিকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে যায়। এরপরই মঙ্গলবার (৩ মে) অমলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে তৃণমূলের একাংশের তরফে সোস্যাল মিডিয়াতে পাল্টা প্রচারের জেরে দলের অন্দরে ঝড় উঠেছে।

গঙ্গারামপুরের তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন রায়ের নির্বাচনী এজেন্ট তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অমলেন্দুবাবু রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠানো ওই চিঠিতে অভিযোগ করেন, দলের প্রার্থী সত্যেনবাবুকে হারাতে বিপ্লববাবু এবং তাঁর ভাই পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র, সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা, সহকারী সভাধিপতি কালীপদ সরকারেরা জোটের কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচার করেছেন। জোড়াফুলের বদলে হাত চিহেৃ ভোট দিতে বলেছেন। ভোটের দিন প্রকাশ্যে বিরোধীদের শিবিরে বসে মদত দিয়েছেন। তোলাবাজি ও গুন্ডাবাজি রোধে দল থেকে বিপ্লববাবুদের বহিষ্কারেরও দাবি করেন অমলেন্দুবাবু।

Advertisement

এরপরই মঙ্গলবার সোস্যাল মিডিয়াতে বিপ্লব মিত্রের হয়ে জনৈক তৃণমূল কর্মীর পোস্টে অমলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে তোলাবাজি সহ নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলা হয়। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি ও বৈভব নিয়েও কটাক্ষ করে বিভিন্ন সময় বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দলবিরোধী কাজের অভিযোগ তুলে অমলেন্দুবাবুকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কারের দাবি করা হয়েছে। বিপ্লববাবুর পক্ষ নিয়ে লেখা ওই পোস্টে অমলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে গোপন কীর্তিকলাপ সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হতে জেলায় রাজনৈতিক মহলে হইচই পড়ে গিয়েছে।

বুধবার ওই পোস্টের প্রতিবাদ করে আসরে নামতে হয় গঙ্গারামপুরের প্রার্থী সত্যেনবাবুকে। এদিন তিনিও সোস্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে দাবি করেন, তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট অমলেন্দুবাবু সম্পর্কে যে কুরুচিকর মন্তব্য করা হয়েছে, তা দুঃখজনক এবং বিভ্রান্তিকর। গঙ্গারামপুরের মানুষ জানেন কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা। এ বারের গঙ্গারামপুর বিধানসভা এলাকার নির্বাচনে অনেক বাধা বিপত্তি অর্থলোভ সত্ত্বেও মানুষ ভোট দিয়েছেন। অমলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে অপপ্রচার বন্ধ হোক বলে সত্যেন রায়ের আবেদন মূলক ওই পোস্টের বিষয়ে তৃণমূলের অন্দর তো বটেই, বিরোধী জোট শিবিরেও হইচই বেধে গিয়েছে। জোটের আরএসপি প্রার্থী তথা প্রবীণ বাম নেতা বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি যা, তাতে ভোটের ফল প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এ জেলার কয়েকটি আসনে ফল খারাপের আশঙ্কা করে তৃণমূলের ওই দুই গোষ্ঠী পারস্পরিক দোষারোপের জেরে উত্তাপ বাড়ছে। দল সূত্রের খবর, তাতে তৃণমূলের একাংশ নেতাকর্মীও যারপরনাই শঙ্কিত। নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন