পাশাপাশি। ভোটের প্রচারে চেতলা থেকে ভবানীপুরের পথে (বাঁ দিক থেকে) প্রদীপ ভট্টাচার্য, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপা দাশমুন্সি, মানব মুখোপাধ্যায় এবং অন্য নেতানেত্রীরা। মঙ্গলবার দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।
লেখা হয়েছিল, জোটের ভোট আর দিদির ভোট সমান সমান। সমীক্ষায় দেখা গেল ঠিক তাই। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেসের মিলিত ভোটের সঙ্গে দিদির ভোটের প্রায় কোনও ফারাক ছিল না। এ বারও সম্ভবত থাকবে না। এ-ও বলা হয়েছিল, নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, মেরুকরণের সম্ভাবনা তত বাড়বে। ভোটের মূল স্বর হয়ে দাঁড়াবে, ‘হ্যাঁ-দিদি’, ‘না-দিদি’। সমীক্ষাও সেই মতে সায় দিল। দেখা যাচ্ছে, এই বিধানসভার ভোটে মোদী উচ্ছ্বাস নেই। ‘পুনর্মুষিক ভব’-র মতো বিজেপি ভোট নেমে আসতে পারে গত বিধানসভা ভোটের কাছাকাছি।
এবিপি আনন্দ-র হয়ে সমীক্ষাটি করেছে নিয়েলসেন। তাদের মতে, দিদির বাক্সে যেতে পারে ৪৫ শতাংশ ভোট। জোটের বাক্সে ৪৪ শতাংশ। বিজেপি পেতে পারে ৫ শতাংশ ভোট।
এই ছবিটা অবশ্য সম্পূর্ণ নয়। কারণ, সমীক্ষার জন্য যখন নমুনা সংগ্রহ করা হয়, তখন নারদ-পর্ব হয়নি। জোটের আসন সমঝোতাও চূড়ান্ত আকার নেয়নি। অন্য দিকে প্রার্থী ঘোষণা করে জেলা সফরে বেরিয়ে পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে সমীক্ষার সময়কালে মমতা যতটা লড়াইতে ছিলেন, জোট ততটা ছিল না। কিন্তু গত কয়েক দিনে ছবিটা অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে। এখন রাজ্যের সর্বত্র যৌথ প্রচারে নেমে পড়েছে জোট বাহিনী। সময় যত এগোবে জোটের প্রচার আরও বাড়বে। ফারাক কমবে দিদির সঙ্গে।
এ বার নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে সমীক্ষকদের একটা অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে। গ্রাম বাংলায় ত্রাসের পরিস্থিতি। মানুষ তাঁদের কাছে সহজে মুখ খুলছেন না। খুললেও ভয়ের কারণে অনেকেই শাসকদের দিকে ঝোল টেনে কথা বলছেন। ভোটের বাক্সে এর ভিন্ন প্রতিফলন হতে বাধ্য।
এই সব বিষয়গুলোর প্রভাব যদি ঠিক মতো পড়ে, তা হলে দু’পক্ষের ভোট সমান সমান থাকবে না। ফারাক তৈরি হবে। তা মোকাবিলার জন্য ভূতের সাহায্যের দরকার হবে। অর্থাৎ ভোটের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে ভূতের ভবিষ্যতের ওপর।
কিন্তু আসন কে কত পাবে? এই ধরনের সমীক্ষা থেকে প্রত্যক্ষ ভাবে আসন সংখ্যায় পৌঁছনো যায় না। কারণ, সমীক্ষাটা করা হয় ভোটের হিসাব জানার জন্য। সেই ভোট থেকে আসন সংখ্যা বের করাটা সহজ নয়। নানা রকম জটিলতা রয়েছে। সমীক্ষার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল ভোটের সংখ্যা জানা। আসন সংখ্যা বের করার উদ্দেশ্য ছিল গৌণ। তবু সমীক্ষা জানিয়েছে, দিদি পেতে পারে ১৭৮টি আসন। জোট ১১০টি। তবে এই সংখ্যা কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন থেকে যায়।