West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls 2021: ‘উত্তরপ্রদেশের ছক বাংলাতেও ছকছে বিজেপি’, মমতাকে অখিলেশ

গত শুক্রবার চার রাজ্য-সহ পুদুচেরিতে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে কমিশন। তার পরেই অখিলেশ প্রকাশ্য সভা থেকে মমতার পাশে থাকার বার্তা দেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২১ ১৬:০৯
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদব।

আবারও তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ালেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব। পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে মমতার অবস্থানকে সমর্থন করে তিনি আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূলনেত্রীকে বিভিন্ন ব্যাপারে বিজেপি-র ‘কৌশল’ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি মমতাকে ভোট দিয়ে তৃণমূলকে ফের ক্ষমতায় আনার বার্তাও দিয়েছেন অখিলেশ।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে আগামী বছরই বিধানসভা নির্বাচন। ‘বাইশে বাইসাইকেল’ (সমাজবাদী পার্টির প্রতীক সাইকেল) কর্মসূচি নিয়ে এখন থেকেই মাঠে-ময়দানে নেমে পড়েছেন অখিলেশ। গত শুক্রবার চার রাজ্য-সহ পুদুচেরিতে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে কমিশন। তার পরেই অখিলেশ প্রকাশ্য সভা থেকে মমতার পাশে থাকার বার্তা দেন। ওই সভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘মমতাজি ঠিকই বলেছেন, বেশি দফায় ভোট করানো বিজেপি-র পুরনো রণনীতি। যত বেশি দফায় ভোট করানো যায়, নির্বাচনে সমস্যা তৈরি করাও তত সহজ হয়ে যায়। আর বিজেপি সেটাই করতে চায়।’’ পাশাপাশি মমতার কাছে অখিলেশের আর্জি, ‘‘আট দফা ভোট নিয়ে আপনি যেমন প্রশ্ন তুলেছেন, তেমনই বুথে রাজনৈতিক দলের এজেন্টদের উপস্থিতি নিয়েও সতর্ক থাকুন। কেন্দ্রীয় বাহিনী কিন্তু এই এজেন্টদের বুথ থেকে বার করে দেবে। সে ক্ষেত্রে কোনও ভাবেই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।’’

পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। ওই সূচি নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সুবিধার্থে বানানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘অসমের মতো রাজ্যে মাত্র তিন দফায় ভোট হচ্ছে। ২৩৪ আসনের তামিলনাড়ু বিধানসভায় ভোট হবে এক দিনেই। তা হলে বাংলায় আট দফায় ভোট কেন? কার সুবিধার্থে এক একটি জেলাকে দু’ভাগে, এমনকি তিন ভাগেও ভাঙা হল?’’

Advertisement

অখিলেশ মমতাকে সমর্থন করে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ সহমত। এটা বিজেপি-র অনেক দিনের পুরনো রণনীতি— যত বেশি দফায় সম্ভব ভোট করাতে হবে, যাতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা তৈরি করা যায়।’’ এর পরেই মমতাকে সতর্ক করে অখিলেশ বলেন, ‘‘আমি ওঁকে আর একটি পরামর্শ দিতে চাই। বুথে পোলিং এজেন্টদের নিয়েও সতর্ক হোন মমতাজি। বুথে যাতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের এজেন্ট রাখা হয়, তা নিশ্চিত করুন তিনি। কারণ সব দলের এজেন্ট যদি না থাকে, তা হলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করাই বৃথা।’’

২০১৭-য় বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি-র কাছে হেরে যায় অখিলেশের দল। সেই অভিজ্ঞতাকে টেনে মমতাকে তাঁর পরামর্শ, ‘‘এই দিল্লির সরকার ও দিল্লির বাহিনী বুথ থেকে এজেন্টদের বার করে দেয়। এর আগে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটেও একই নীতি নিয়েছিল বিজেপি। কোনও বুথে এক জনও সমাজবাদী পার্টির কর্মকর্তা বা এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি।’’ অখিলেশ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার পরামর্শ, উনি যেমন ৮ দফা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তেমন বুথে এজেন্ট বসানো নিয়েও সতর্ক হোন। এজেন্ট যদি না থাকে তবে কোথাও না কোথাও ভোট নিয়ে প্রতারণার সুযোগ থেকে যাবে।’’

লোকসভা ভোটের আগে ২০১৯-এর ১৯ জানুয়ারি মমতার ডাকে কলকাতার ব্রিগেডে এক জনসভা হয়। ‘মোদী হটাও দেশ বাঁচাও’ স্লোগান তুলে সেই মঞ্চে শামিল হয়েছিলেন অখিলেশ। সে বারও মমতার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের ওই সভায় তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে মমতার হয়ে প্রচার করতে তিনি কি পশ্চিমবঙ্গে যাবেন? জবাবে সমাজবাদী পার্টির প্রধান বলেন, ‘‘আমি এখান থেকেই বলছি, আমার যত শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমর্থক আছেন, যে সব পরিচিতেরা আছেন তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিন। ওঁকে জেতান। ফের সরকারে ফিরিয়ে আনুন।’’

ভোটের আগে অখিলেশের বিশেষ সতর্কবার্তা, ‘‘আমার মতে প্রশিক্ষণ শিবির অত্যন্ত জরুরি। বিজেপি অত্যন্ত ধূর্ত। ওরা জানে কী ভাবে ভোট বাড়াতে হয়, ভোট কাটাতে হয়, জায়গা এবং প্রয়োজন বুঝে কাকে কোন পদে বসাতে হবে, কোন পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে, কাকে দিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করিয়ে নেওয়া যাবে, পুরোটাই ছকে নেওয়া থাকে ওদের। এর থেকে বাঁচতে হলে সতর্ক হতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন