কনিষ্ঠতম বাম বিধায়ক পূর্ব পাঁশকুড়ার

সকালের দিকে প্রথম কয়েক দফা গণনায় খানিকটা এগিয়েই ছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বিপ্লব রায়চৌধুরী। কিন্তু তারপর উল্টো গুনতি শুরু। এগোতে এগোতে শেষ পর্যন্ত জিতেই গেলেন রাজ্যের অন্যতম কনিষ্ঠ প্রার্থী। সিপিএমের ইব্রাহিম আলি।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০১:১৪
Share:

ইব্রাহিম আলি ও অশোক দিন্দা। নিজস্ব চিত্র।

সকালের দিকে প্রথম কয়েক দফা গণনায় খানিকটা এগিয়েই ছিলেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বিপ্লব রায়চৌধুরী। কিন্তু তারপর উল্টো গুনতি শুরু। এগোতে এগোতে শেষ পর্যন্ত জিতেই গেলেন রাজ্যের অন্যতম কনিষ্ঠ প্রার্থী। সিপিএমের ইব্রাহিম আলি।

Advertisement

ভোটের লড়াই শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে। সে বার তমলুক কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেস নেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। দু’বছরের ব্যবধানে ফের বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছেন ২৭ বছরের যুবনেতা। এ বার বিপক্ষ পূর্ব পাঁশকুড়ার তিনবারের বিধায়ক, প্রবীণ তৃণমূল নেতা বিপ্লব রায়চৌধুরী। কিন্তু এ বার আর বিফল হননি ইব্রাহিম।

পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগর এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিমের রাজনীতি শুরু কলেজে। এসএফআইয়ের নেতা পরবর্তী সময়ে সংগঠনের জেলা সভাপতি পদ পান। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকে সরিয়ে দল প্রার্থী করে ইব্রাহিমকে। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পরাজয়েও হার মানেননি এই ছাত্র নেতা। দলের তরফে তাঁকে কোলাঘাট জোনাল কমিটির সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়।

Advertisement

দু’বছরের মধ্যেই বিধানসভায় যাওয়া নিশ্চিত করলেন ইব্রাহিম। ঘটনাচক্রে এ বারই তমলুক লোকসভা ছেড়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। জয়ীও হয়েছেন। ফলে এ বার বিধানসভায় মুখোমুখি শুভেন্দু-ইব্রাহিম।

তবে কি কিছুটা হলেও লোকসভা ভোটে হারের আক্ষেপ মিটলো? বৃহস্পতিবার কোলাঘাটের ভোট গণনাকেন্দ্রের সামনে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের কাঁধে চেপেই ইব্রাহিম বলেন, ‘‘ভোটে জয়-পরাজয় আছে। মানুষ যাকে চাইবে সেই জয়ী হবে। তাই লোকসভার ভোটে হারের পরও আমি ভেঙে পড়িনি। তৃণমূলের নীতি ও তাঁদের নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম।’’

অন্য দিকে ৬৭ বছর বয়সে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন সিপিআই প্রার্থী অশোক দিন্দা। তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বেদ রায়ে বিরুদ্ধে লড়েই বাজিমাত করেছেন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন করে রাজনীতিতে আসা অশোকবাবু। পেশায় আইনজীবী, অশোকবাবু সিপিআই জেলা সম্পাদক পদে রয়েছেন। ভোটের ব্যবধানে কম হলেও তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থীর জয়ী হয়ে সফল হয়েছেন। এবার বিধানসভা ভোটে তমলুক বিধানসভা কেন্দ্রে অন্যতম ‘ফ্যাক্টর’ ছিলেন তমলুক কেন্দ্রের বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র। এ বার তাঁকে সরিয়ে দেওয়া ওই কেন্দ্র থেকে। আর এতেই ক্ষুব্ধ ছিলেন সৌমেন-অনুগামীরা। তাঁরা প্রকাশ্যে নির্বেদ রায়ের বিরুদ্ধে প্রচার না করলেও, গোষ্ঠী কোন্দল ছিলই। রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের মত, কোন্দলের জেরেই তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে গিয়েছেন নির্বেদ রায়। তবে অশোক দিন্দার দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষ তৃণমূল সরকারের নীতি ও কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ ছিল। তমলুকের মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন