কান ভালবেসে কান

সেকেলে বাঙালির ‘কান’ গয়না এখন রীতিমতো আন্তর্জাতিক। ইয়ার কাফ নিয়ে লিখছেন পরমা দাশগুপ্তকানে একটাই দুল? সে তো কবেকার কথা। দুলের সংখ্যাবৃদ্ধিও হয়েছে কত বছর হল। সেই সংখ্যাই বাড়তে বাড়তে গোটা কান। এবং এখন? কান জোড়া কান।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৬ ০০:০৮
Share:

কান টানতে সাবধান।

Advertisement

নাঃ, মাথা আসবে না। বরং কানটাই খুলে আসতে পারে হাতে।

জেল হবে না বটে। তবে খানিক মুখঝামটা জুটবেই গ্যারান্টি সহকারে।

Advertisement

কারণ আপনার হাতে তখন জ্বলজ্বল করছে একখানা কান। মানে ‘ইয়ার কাফ’। কানের দুলের ফ্যাশনে ‘দ্য লেটেস্ট শো স্টপার’। ‘তিনি’ মর্মাহত। এবং আপনি? বজ্রাহত হলেন বলে!

কানে-কানে

কানে একটাই দুল? সে তো কবেকার কথা। দুলের সংখ্যাবৃদ্ধিও হয়েছে কত বছর হল। সেই সংখ্যাই বাড়তে বাড়তে গোটা কান। এবং এখন? কান জোড়া কান। মানে একেবারে কানের এ মাথা থেকে ও মাথা গলিয়ে নেওয়া দুল। তা সে অনেকগুলো দুল এক লাইনে জোড়াই হোক অথবা একটানা একটাই দুল। দু’পাশে লাগানো ক্লিপ গলিয়ে ঝটপট পরে ফেললেই হল। কান ‘বন্দি’। নামটাও বোধহয় সেই কারণেই। ‘ইয়ার কাফ’।

...এসেছে ফিরিয়া

কান ছিল। মানে ‘ইয়ার কাফ’ নামটা নতুন হলেও কান-জোড়া দুলের এই ফ্যাশনটা কিন্তু মোটেও নতুন নয়। গয়নার বাঙালিয়ানায় দিব্যি চেনা। সেকেলে বাঙালি ‘কান’ই বলত তাকে। বিয়ের কনে মানেই কানের ধার বরাবর পুরোটা জুড়ে নিখুঁত ডিজাইনের টানা সোনার দুল। এক ধার থেকে দেখলে যাকে মনে হয়, আসল কানটাই যেন সোনায় বাঁধানো। বনেদি বাড়ির বিয়েতে কনে তো বটেই, নানা বয়সের মহিলাদের কানেও শোভা পেত সেই ‘কান’।

সোনা-রুপোর দুল, টপ, ঝুমকো, কানবালা, জাঙ্ক জুয়েলারির হরেক জিনিসে তৈরি হাজারো ডিজাইনার দুল পেরিয়ে গয়নার দুনিয়া কাঁপাতে ফিরে এল সেই ‘কান’ই। শুধু বাঙালির সাজে নয়, রীতিমতো আন্তর্জাতিক ফ্যাশনেও। দু’কানে হোক বা এক কানে, ‘ইয়ার কাফ’ অতঃপর দুনিয়া জোড়া নারীর ভূষণ।

তিন ‘ইয়ারি’ কথা

১) ইয়ার কাফ পরার ইচ্ছে? বেশ তো! বিয়েবাড়ির জমকালো সাজের সঙ্গে দু’কানে থাক সোনার ঝলমলে এক জোড়া কাফ। ব্যস! জমে ক্ষীর!

২) পার্টিতে যাচ্ছেন। স্ত্রী বা গার্লফ্রেন্ডের ট্রেন্ডি গাউনের সঙ্গে এগিয়ে দিন একটাই ফ্যাশনেবল ডিজাইনের রুপোর ইয়ারকাফ। এক কান জোড়া সেই দুলের দ্যুতিতেই আপনার ‘তিনি’ পার্টির মধ্যমণি।

৩) কান জুড়ে থাকা ইয়ার কাফ দেখতে এমনিতেই ভারী। ডিজাইনাররা বলছেন, এক কানে হোক বা দু’কানে, এই দুল পরলে গলা খালি রাখাই ভাল। কিংবা পরলেও এক্কেবারে স্লিক কিছু। যাতে আপনার সাজে নজর কাড়ে কানই। তা ছাড়া সাজে গয়নার ভাগ বেশি হয়ে গেলে এমনিতেই বড্ড জবরজং হয়ে ওঠে।

কানে টান

আশ মিটিয়ে ইয়ার কাফ পরাই যায়। তবে সাবধান। পোশাকে আটকে যাওয়াই হোক বা ভিড়ের গুঁতো, খেয়াল রাখুন কানে যেন টান না লাগে! ক্লিপ খুলে পুরোটাই বেরিয়ে এলে এক রকম। তা না হলে রক্তারক্তি হতে কতক্ষণ!

কানাকানি

ইয়ার কাফেই যদি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠার প্ল্যান থাকে, একটু মাথা খাটানো প্রয়োজন। দোকান, ব্যুটিক, অনলাইন— সর্বত্রই হাজারো ডিজাইনের ইয়ারকাফের ছড়াছড়ি। সোনা-রুপো, তামা, জাঙ্ক জুয়েলারি, সবেতেই সে বিরাজমান। কোনও-কোনওটায় বসানো হিরে, মুক্তো বা অন্য পাথর। খানিক রিসার্চ করে দু’তিনটে ডিজাইন মিলিয়ে নিজেই অর্ডার দিয়ে তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। কিংবা হ্যান্ডমেড জুয়েলারির রমরমার যুগে শখ করে ছোটখাটো জিনিস দিয়ে নিজেই বানিয়ে নিন ট্রেন্ডি জাঙ্ক ইয়ার কাফ। যে দেখবে, সে বলবেই, ‘সিক্রেটটা কী?’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন