Chirosakha Serial

পর্দার ছেলেকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ ‘মা’ মালবিকা! কাহিনির চিত্রনাট্য কি উস্কে দিল স্বামী চলে যাওয়ার ব্যথা?

ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যের সঙ্গে বাস্তব জীবনের অনেক মিলই খুঁজে পান দর্শক। পর্দায় এই ধরনের দৃশ্য জীবন্ত করে তুলতে কী ভাবে প্রস্তুতি নেন অভিনেতারা?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৪৪
Share:

কী ভাবে প্রস্তুতি নেন শিল্পীরা? ছবি: সংগৃহীত।

প্লুটোর নিথর দেহ আঁকড়ে হাউহাউ করে কাঁদছে অনন্যা। জীবনে এই পরিস্থিতি আসবে সে ভাবেনি। স্বতন্ত্র এবং কমলিনীর প্রতি তার রাগেরই মাসুল গুনতে হচ্ছে তাকে? এক দিকে মা-ছেলের সমীকরণ, অন্য দিকে পারিবারিক টানাপড়েন! অন্য মোড়কে ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকের কাহিনি সাজাচ্ছেন লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে এক দিকে আছে পরিণত প্রেম, অন্য দিকে রয়েছে দায়িত্ব, কর্তব্য-সহ সমাজের নানা দিক। এই মুহূর্তে গল্প যে ভাবে মোড় নিয়েছে যেখানে দেখানো হচ্ছে, জেদের বশবর্তী হয়ে ছেলের মনের কথা মা বুঝতেই পারল না।

Advertisement

সন্তান হারানোর শোক ক্যামেরার সামনে ফুটিয়ে তোলা কতটা কঠিন? ‘কাট’ বললেও কি রয়ে যায় মনখারাপের রেশ? নিজস্ব সত্তাকে সরিয়ে চরিত্র হয়ে ওঠা, তার পর আবার বেরিয়ে আসা সেটাও দক্ষ অভিনেতাদের প্রশিক্ষণের মধ্যে পড়ে, এমনই মত অভিনেত্রী মালবিকা সেনের। অনন্যার চরিত্রে যাঁকে দেখছে দর্শক। আর প্লুটোর চরিত্রে অভিনয় করছেন পার্থ বেরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের ছেলে তিনি। পড়াশোনা সেখানেই। অভিনয়ের টানেই কলকাতায় আসা। বেশ কিছু ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন। পার্থ জানিয়েছেন, বহু ধারাবাহিকে ‘জুনিয়র আর্টিস্ট’ হিসাবে কাজ করেছেন তিনি। এই প্রথম বড় চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন।

মধ্যবিত্ত বাঙালির নিত্যদিনের জীবনে এমন অনেক উদাহরণ দেখা যায়। শোনা যায়, পরিবারের চাপে জীবন শেষ করার মতো বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাড়ির ছেলে বা মেয়ে। এ সব ক্ষেত্রে প্রেমঘটিত সমস্যাই বেশি উঠে আসে। তেমনই উদাহরণ এ বার ক্যামেরার সামনে। প্লুটো ভালবাসে কমলিনীর মেয়ে মিঠিকে। এ দিকে মায়ের চাপে পড়ে মিঠির মামার মেয়ে মৌকে বিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছিল সে। কিন্তু মন থেকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। তাই ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়টুকু দেয়নি মা-বাবাকে। দেওর স্বতন্ত্র কেন কমলিনীর দায়িত্ব নেবে? কাহিনির প্রথম থেকে এই বিষয়ে অনন্যার প্রবল আপত্তি। সেখান থেকেই রাগের সূত্রপাত। সেই রাগই অনন্যার জীবনে অভিশাপ ডেকে আনল। এই ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করার সময় অভিনেতাদের মানসিক পরিস্থিতি ঠিক কেমন থাকে?

Advertisement

অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে এই ধরনের দৃশ্য করতে গিয়ে ‘কাট’ বলার পরেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেঁদেছেন মালবিকা। ‘মন ফাগুন’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে তাঁর ছোটপর্দায় আসা। সেখানে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আবেগের দৃশ্যে অভিনয় করার পরও নিজেকে ধরে রাখতে পারতেন না। মালবিকার কথায়, “যে কোনও আবেগের দৃশ্য আমায় মানসিক উদ্বেগ দেয়। দক্ষ অভিনেতাদের অবশ্য এই ভারসাম্য রাখার কায়দাও শিখতে হয়। আমি এখনও শিখছি। ‘মন ফাগুন’ ধারাবাহিকে অভিনয় করার দু’বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছিলাম আমি। তাই আবেগের দৃশ্য এলেই সেই মনটা চিনচিন করে উঠত।” অভিনেত্রী যোগ করেন, চিত্রনাট্য পড়ে, সেই দৃশ্য ফুটিয়ে তুলতে গেলে প্রস্তুতির দরকার। সেই সময় তাঁরা পান না। তবে ১৪ ঘণ্টা একই সেটে একসঙ্গে কাটাতে গিয়ে অজান্তেই তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে অজানা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পার্থ বলেন, “শট কাটলেও মালবিকা ম্যামকে আমি ‘মা’ বলেই ডাকি।” দৃশ্যকে জীবন্ত করতে এগুলোই বেশি সাহায্য করে অভিনেতাদের, মত দু’জনেরই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement