পুনরাগমন

এককালের বলিউ়ডের প্রথম সারির নায়িকা তাঁরা।সংসারধর্ম সামলে আবার পরদায় ফিরছেনএককালের বলিউ়ডের প্রথম সারির নায়িকা তাঁরা।সংসারধর্ম সামলে আবার পরদায় ফিরছেন

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০০:৩১
Share:

শ্রীদেবী

চল্লিশ পেরনো বলিউড অভিনেত্রীদের কথা উঠলেই দুটো শব্দ খুব কমন। একটি কামব্যাক, অন্যটি সেকেন্ড ইনিংস। নায়কদের সাধারণত একটা ইনিংসই হয়। কিন্তু বিয়ে-সন্তান-সংসার-আর বয়সের জাঁতাকলের চাপে অভিনেত্রীদের ব্রেক নেওয়াটাই রেওয়াজ। রেকর্ড বলে, বেশির ভাগ অভিনেত্রীর কামব্যাক ছবি বক্স অফিসে সৌভাগ্যের মুখ দেখেনি।

Advertisement

শ্রীদেবী

Advertisement

অভিনেত্রীদের সেকেন্ড ইনিংস সফল হয় না, এই মিথকে ভেঙেছেন মিস ‘হাওয়া হাওয়াই’। ২০১২-য় মুক্তিপ্রাপ্ত গৌরী শিন্ডের ‘ইংলিশ ভিংলিশ’ ছবিটি ও শ্রীদেবীর অভিনয় দুটোরই চেটেপুটে স্বাদ নিয়েছিলেন সিনেপ্রেমীরা। পাঁচ বছর পরে আবার তিনি বড় পরদায়।
সৌজন্যে ‘মম’।

‘ইংলিশ ভিংলিশ’-এর শশী ইংরেজি বলতে গিয়ে হোঁচট খেত। সন্তান-স্বামীর তাড়নায় বিদেশের মাটিতে সে রপ্তও করে ফেলে বিদেশি ভাষাটি। সেখানে ছিল মা-সন্তানের এক রকম সমীকরণ। ‘মম’ ছবিতে দেবকীর চরিত্রে শ্রীদেবীকে দিতে হবে মাতৃত্বের অন্য পরীক্ষা। রিয়্যাল লাইফেও মাতৃত্বকেই সব দায়িত্বের মধ্যে এগিয়ে রাখেন শ্রীদেবী

‘মম’ শ্রীদেবীর কেরিয়ারের তিনশো নম্বর ছবি। তবে এখনও তিনি নিজেকে নবাগতা মনে করেন। শ্রীদেবীর দুই মেয়ে জাহ্নবী আর খুশি এখন তাঁর বেস্টফ্রেন্ড।

রবিনা টন্ডন

রবিনা

নব্বইয়ের সেক্সি সিরেন বলা হয় তাঁকে। জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত রবিনার ঝুলিতে এই বছরে রয়েছে তিন-তিনটে ছবি। তার মধ্যে ‘মাতৃ’ আর ‘হনুমান দ্য দমদার’ ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে। এ মাসের শেষে মুক্তি পাবে ‘শব্‌’।

২০১৫-য় ‘বম্বে ভেলভেট’ ছবিতে শেষ বার দেখা গিয়েছিল রবিনাকে। কাজ শুরু করেছেন ছোট পরদাতেও। একটা সময় বছরে ন’টি ছবি মুক্তি পেয়েছিল রবিনার। তবে এখন সংসার-সন্তানই তাঁর প্রথম প্রায়োরিটি।

‘মাতৃ’ ছবিটিও বক্স অফিসে সাড়া ফেলতে পারেনি। ধর্ষণ ও মেয়েদের উপর চলতে থাকা যৌন নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি এই ছবির বিষয়টি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

রবিনার কাছে সোশ্যাল মিডিয়া আশীর্বাদ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, নয়ের দশকে ইয়ালো জার্নালিজমের রমরমা ছিল খুব বেশি। বার কয়েক হেনস্থা হতে হয়েছে ‘টিপ টিপ বরসা পানি’র নায়িকাকে। রবিনা মনে করেন, এখন একটি টুইটের এত জোর, যে তার এক কোপেই সত্যিটা সামনে চলে আসে।

প্রীতি জিন্টা

প্রীতি

তাঁর টোল পড়া হাসিতে কে না মজেছে! শাহরুখ খানের সঙ্গে ডেবিউ, তার পর সলমন-আমির-সেফ-হৃতিক সকলের সঙ্গেই পর পর হিট ছবি দিয়েছেন। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে ছবির জগৎ থেকে হঠাৎই হারিয়ে গেলেন প্রীতি জিন্টা। তাঁকে শেষ কবে বড় পরদায় দেখা গিয়েছে তার স্মৃতি বড়ই আবছা। শেষ ছবি ‘ইশক ইন প্যারিস’ মোটেই চলেনি। খবরের শিরোনামে আসা গত বছর জিন গুডএনাফের সঙ্গে বিয়ের সূত্রে। সেই প্রীতি ‘ভাইয়াজি সুপারহিট’ ছবির কাজ শুরু করেছেন।

বিয়ের পরে কাজ করবেন না বলেই মন স্থির করেছিলেন প্রীতি। কিন্তু তাঁর স্বামীর ইচ্ছে তিনি কাজ করুন। ইতিমধ্যেই ছবি প্রযোজনাও করেছেন। তবে তা লাভের মুখ দেখেনি। পঞ্জাবের আইপিএল টিমের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্ত্রী প্রীতির ব্যবসাতেই এখন মন। তবে ব্যর্থতা নিয়ে এতটুকু বিচলিত নন তিনি।

বিনোদনের পাশাপাশি ছবি যদি কোনও সদর্থক বার্তা দিতে পারে, তবে সেখানেই ছবির সার্থকতা বলে মনে করেন প্রীতি।

মনীষা কৈরালা

মনীষা

ছ’বছর পর পরদায় ফিরলেন মনীষা, সঙ্গে নিয়ে ‘ডিয়ার মায়া’। বক্স অফিসে ছবিটি সাফল্যের মুখ না দেখলেও মধ্যবয়স্কা মনীষার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। এক কালে বলিউডের তাবড় তিন খানের সঙ্গেই ছবি করেছেন মনীষা। মাধুরী-জুহির পাশাপাশি নিজের জন্য আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন। কমার্শিয়াল ছবির চৌহদ্দির মধ্য থেকেও কাজ করেছেন একটু অন্য ধরনের চরিত্রে। তার পর ২০১০-এ বিয়ে, ২০১২-য় ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই শুরু। সুস্থ হওয়ার পরে ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারের পুরোভাগে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

এ-কাল আর সে-কালের বলিউড নিয়ে নয়ের দশকের বেশির ভাগ অভিনেত্রীর নস্ট্যালজিয়া হওয়াটাই স্বাভাবিক। মনীষাও ব্যতিক্রম নন। তিনি মনে করেন, এখন কাজের ধারা বদলেছে। প্রফেশনালিজম বেড়েছে। এখনকার ছবিতে বাস্তবতার ধার আগের চেয়ে অনেক বেশি।

বলিউডে কামব্যাকের অন্য অঙ্ক থাকলেও, বিয়ে-সংসার টলিউডের অভিনেত্রীদের কেরিয়ারে কখনও অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়নি। সুচিত্রা-সুপ্রিয়াদেবী থেকে শুরু করে এই প্রজন্মের ঋতুপর্ণা-শ্রাবন্তী-স্বস্তিকা সকলেই বিয়ের পরও চুটিয়ে ছবি করছেন। এবং তা-ও আবার নায়িকার চরিত্রেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন