অমিতাভ বচ্চন। ছবি: অমিতাভ বচ্চনের টুইটার পেজের সৌজন্যে।
সমালোচনা ও যত্ন। দু’টিই জীবনে সমান্তরাল ভাবে চলা একই পথের পথিক। সমালোচকরাই জীবনের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্খী। এই বিশ্বাস, বলিউড শাহেনশার। সম্প্রতি অমিতাভ বচ্চন তাঁর অফিশিয়াল ব্লগে লিখেছেন, ‘‘যখন কেউ আপনার সমালোচনা করেন, মনে রাখবেন তিনি আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি ভাবেন। এটা সবার উপভোগ করা উচিত। এটা আমার কথা নয়। তবে এই কথাগুলোকে আমি খুব সম্মান করি।’’
৭৪ বছর বয়সে এসে হঠাৎ ‘সমালোচনা’ নিয়ে ভাবতে বসলেন কেন বিগ বি? হঠাৎ করে কেনই বা তাঁর এমন উপলব্ধি? স্বাভাবিক ভাবে এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। সে ক্ষেত্রে একটু পিছিয়ে গিয়ে ভাবতে হবে।
অমিতাভ বচ্চন। বলিউড শাহেনশা। এই নামটা প্রায় চার দশক ধরে একই ওজন ধরে রেখেছে। অভিনয় নিয়ে কাটাছেঁড়া, ফ্লপ-হিটের পরিসংখ্যান, প্রেম-পরকীয়ার অভিযোগ, সম্পত্তি, পরিবার— এ ধরনের বহু বিষয়ের ‘গসিপ’-এই নাম জড়িয়েছে অমিতাভের। কিন্তু সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন অমিতাভ।
‘পিঙ্ক’ ছবিতে অমিতাভের পারফরম্যান্স নিয়ে তাঁকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কণ্ডেয় কাটজু। ওই বিচারপতি তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘অমিতাভের মাথায় কি কিছু আছে? আর তাঁকে নিয়েই মিডিয়া এত মাতামাতি করে। তাঁদের মাথাও ফাঁকা বোধ হয়!’’
এর জবাবে অমিতাভ বলেছিলেন, ‘‘উনি (কাটজু) ঠিকই বলেছেন, আমার মাথায় কিছুই নেই।’’
আরও পড়ুন, টুইটারে অভিভাবকদের অসম্মান, যুবককে ‘শিক্ষা’ দিলেন অমিতাভ
এটাই প্রথম বার নয়। এর আগেও তাঁর সহকর্মীদের কাছে অপমানিত হতে হয়েছে অমিতাভকে। তাঁর বিরুদ্ধে লোভ এবং শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ।
অমিতাভের সমসাময়িক অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা এবং কাদের খান তাঁকে ‘মনোযোগ আকর্ষণকারী’ বলে অভিযোগ তুলেছেন। বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছিলেন বিগ বি-র বন্ধু তথা রাজনীতিবিদ অমর সিংহও। বলেছিলেন, অমিতাভ বচ্চন লোভী। তিনি নাকি দেউলিয়া অবস্থায় অমর সিংহের কাছ থেকে বহু সাহায্য নিয়েছিলেন। অথচ অমর সিংহের প্রয়োজনে গুরুত্ব দেননি।
অভিনেত্রী তথা প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্লড সায়লি ভগত ২০১১ সালে এক বার অমিতাভের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পর সায়লি জানান, তিনি সাইবার জালিয়াতির শিকার। তাঁর নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে ইমেল করা হয়েছে। পরে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির রফা করেন অভিনেত্রী। ক্ষমাও চেয়ে নেন।
! !!
এ ছাড়া জয়া-অমিতাভের এক বাড়িতে না থাকা নিয়েও গসিপ চলেছে। সমালোচনা হয়েছে। আর রেখার সঙ্গে অমিতাভের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে ‘এভারগ্রিন’ বিতর্ক তো রয়েইছে।
কিন্তু এ সবের পরও কোনও দিন বিচলিত হননি অমিতাভ। বরং দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছেন সবটা। জীবনের বিভিন্ন ধাপে এই সমালোচনাগুলোই হয়তো তাঁকে মানসিক ভাবে এতটা শক্তিশালী করেছে। নিজের ব্লগে সেকথা লিখে যেন সেকথাই বলতে চেয়েছেন বিগ বি। হয়তো পরোক্ষ ভাবে তাঁর ‘সমালোচক’দেরই ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছেন।