কর্ণ সিংহ গ্রোভার
তাঁদের পিডিএ (পাবলিক ডিসপ্লে অব অ্যাফেকশন) দেখলেই বোঝা যায়, টিনসেল টাউনের অন্যতম হ্যাপেনিং জুটি কর্ণ সিংহ গ্রোভার এবং বিপাশা বসু। বিয়ের পরে তাঁদের দু’জনকে একসঙ্গে সিনেমা করতে দেখা না গেলেও, বিজ্ঞাপন করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের পোস্ট দেখলে বোঝা যায়, বিয়ের দু’বছর পরেও কর্ণ-বিপাশার হানিমুন পিরিয়ড কাটেনি।
প্র: আপনাদের বিয়ের তো দু’বছর হল। কতটা বদল এল জীবনে?
উ: ভালবাসার প্রকৃত অর্থ আমি বিপাশার সঙ্গে বিয়ের পরেই বুঝেছি। আমরা দু’জনে প্রত্যেক দিন, প্রতিটি মুহূর্ত উদ্যাপন করি। জীবনে এমন অনেক সময় আসে যখন আমাদের মনে হয়, প্রকৃত ভালবাসা পাওয়া মুশকিল। তখন অনেকে হাল ছেড়ে দেয়। অনেকে আবার আশায় থাকে প্রকৃত ভালবাসার। আমার আর বিপাশার ক্ষেত্রে ঠিক সেটাই হয়েছে। এই সম্পর্কটা আমাদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।
প্র: নিজেদের অনেক ব্যক্তিগত মুহূর্তই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন...
উ: হ্যাঁ, রাখঢাক করার তো কিছু নেই। আমাদের ভালবাসার কিছু মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতেই পারি। আমি আর বিপাশা নিজেদের ভালবাসার দূত মনে করি।
প্র: আপনি নাকি বাড়িতে রোজ পুজো করেন?
উ: হ্যাঁ, বিয়ের পর বিপাশার মা আমাকে পুজো নিয়ে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। শাঁখ বাজানো থেকে ধূপ জ্বালানো, সব কিছুই আমি পারি। আর এর পুরো ক্রেডিট আমার শাশুড়ির। উনি আমাকে এই সব কিছুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে বুঝিয়েছিলেন। আমাদের বাড়িতে সব ঠাকুরের মূর্তিই আছে। আর একটা কথা, বিপাশার চেয়ে আমিই বেশি পুজো করি কিন্তু!
প্র: আপনি বাংলা বলতে পারেন?
উ: খুব ভাল বলতেও পারি, বুঝতেও পারি। বাঙালি খাবার আমার খুব প্রিয়। ভাল চরিত্র পেলে বাংলা ছবিতে কাজ করব।
প্র: শোনা যায়, আপনি আর বিপাশা এ বার থেকে একসঙ্গেই কাজ করবেন। আলাদা কাজের সব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কথাটা কতটা সত্যি?
উ: একদমই অবাস্তব! যারা এ রকম গুজব রটিয়েছে, তারা মূর্খ। এ রকম কোনও শর্ত আমরা কেউ রাখিনি। কোনও পেশাদার এগুলো করে না। একটা ওয়েব সিরিজ়ে কাজ করতে চলেছি। সেখানে আমি একটি বাঙালি চরিত্রে অভিনয় করব। বিপাশা কিন্তু সেখানে নেই।
প্র: খুব তাড়াতা়ড়ি আপনাদের বড় পর্দায় একসঙ্গে দেখা যাবে, এমনও তো শোনা যাচ্ছে...
উ: এখন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারব না। ঠিক সময়ে জানতে পারবেন।
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে যত সেলেবদের বিয়ে হয়, বিয়ে ভাঙার ঘটনাও কম নয়। আপনার এই বিষয়ে কী মত?
উ: আমার মতে, বিয়ের প্রকৃত অর্থ, দু’জনে দু’জনকে ভালবেসে এক ছাদের তলায় থাকবে। অনেক ক্ষেত্রে ভালবাসা না থাকা সত্ত্বেও স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকে। স্রেফ চক্ষুলজ্জার খাতিরে। আমার কাছে সেটা অবাঞ্ছনীয় মনে হয়। যে বিয়েতে ভালবাসা নেই, সেখানে থাকার কি কোনও দরকার আছে? ভালবাসাহীন বিয়ে অনেকটা বিষের মতো! সেটা শুধু স্বামী-স্ত্রীর জন্য নয়, পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও ক্ষতিকারক।
প্র: মাঝে মধ্যেই শোনা যায়, বিপাশা মা হতে চলেছেন...
উ: আমাকে আর বিপাশাকে হাসপাতালে যেতে দেখলেই সকলে এটা ভেবে বসেন! মাঝে আমার শরীর খারাপ হয়েছিল, তাই আমার সঙ্গে বিপাশাও গিয়েছিল হাসপাতালে। আর সেটাই তো স্বাভাবিক। এর বেশি আমি কিছু বলব না।
বিপাশার সঙ্গে
প্র: খুব বেশি কাজ করছেন না এখন। ক্যামেরা, মেকআপ, লাইমলাইট কতটা মিস করছেন?
উ: আসলে আমি বাড়িতেও ক্যামেরার সামনেই থাকি (হেসে)! আমার স্ত্রী সব সময়ে আমার ছবি তুলতেই থাকে। আমি ওর বাধ্য মডেল! অভিনয় বাদে আমার একটা আলাদা দিক আছে। ছবি আঁকা, গান করা, লেখা এবং সুর দেওয়া। আমি অ্যাবস্ট্রাক্ট পেন্টিং করি। অনেক দিন ধরে আমার পেন্টিংয়ের সংগ্রহ তৈরি করেছি। সুযোগ পেলে এ বছর একটা প্রদর্শনী করব।
প্র: টেলিভিশনে আপনি ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন। সিনেমায় সেই জায়গাটা এখনও তৈরি হয়নি। খারাপ লাগে?
উ: দেখুন, ছবির প্রস্তাব আসতেই থাকে। কিন্তু আমাকে বিচার করতে হয় কোনটা করব, কোনটা ছাড়ব।
এমন কোনও কাজ আমি করতে চাই না, যা আমার উপর কোনও প্রভাব ফেলবে না। তা হলে দর্শকের উপরও কোনও প্রভাব ফেলতে পারব না। আমি ভাল চরিত্রের খোঁজে থাকি। সেটা ছবি, টিভি বা থিয়েটার যে কোনও মাধ্যমেই হোক না কেন।
প্র: সামনেই মুক্তি পাবে আপনার ছবি ‘থ্রি দেব’। ছবির পোস্টার বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছে। আপনার কী মত?
উ: আমাদের দেশে লোকজন ছবি না দেখেই সমালোচনা শুরু করে দেন। আমি শুধু পজ়িটিভ জিনিসে মন দিই। নেগেটিভ বিষয়গুলো নিজের ধারেকাছে আসতে দিই না।