হেলেন তু অব তো আজা...

চল্লিশ? পঞ্চাশ? নাকি পঁয়ষট্টি বছর আগের? গত রোববারের কলকাতা-দুপুর ফিরিয়ে এনেছিল মায়াবী আবেশ। বোঝাই যাচ্ছিল না হেলেন-আশা একসঙ্গে থেকেও ‘মোনিকা মাই ডার্লিং’-এর সময় নয়। এটা যে ঘোর ২০১৪। সাক্ষী থাকল আনন্দplus। ১৯৭২। ‘আপনা দেশ’য়ের সেই বিখ্যাত ক্যাবারে দৃশ্যের সঙ্গে নাচছেন হেলেন। গাইছেন আশা ভোঁশলে। ‘পিয়া তু...’। কিন্তু আজ ২০১৪-তে দু’জনেই খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটেন। দু’জনের পায়েই ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা বিশেষ জুতো।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০০:১৫
Share:

১৯৭২। ‘আপনা দেশ’য়ের সেই বিখ্যাত ক্যাবারে দৃশ্যের সঙ্গে নাচছেন হেলেন। গাইছেন আশা ভোঁশলে। ‘পিয়া তু...’। কিন্তু আজ ২০১৪-তে দু’জনেই খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটেন। দু’জনের পায়েই ডাক্তারের প্রেসক্রাইব করা বিশেষ জুতো। কিন্তু বন্ধুত্ব অটুট। আজও আশাকে দেখলে মনে অদ্ভুত শক্তি পান হেলেন। “আশাজি আমার দেখা অন্যতম সেরা লড়াকু মহিলা।

Advertisement

সারা জীবন যা কষ্ট উনি দেখেছেন, তার পরও তার সঙ্গে যুঝে যে এই রকম একটা কেরিয়ারও করা যায়, সেটা আশাজিকে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না”, বলেন ‘মোনিকা’।

Advertisement

ছেলে হলে হেলেনের প্রেমে পড়তাম: কথা বলতে সে দিন অসুবিধে হচ্ছিল আশা ভোঁশলের। অনুষ্ঠানের মধ্যেই গলার জন্য অ্যান্টি-বায়োটিক খেলেন। তার মধ্যেই পাশে বসা হেলেনকে দেখে বললেন “হেলেনকে এত ভাল দেখতে যে আমি যদি ছেলে হতাম তা হলে নিশ্চিত ভাবে ওর প্রেমে পড়তাম। আর ওকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম।”

মনখারাপ হলে ফোনে কথা হয়: কথা বলে বোঝা গেল দু’জনেই আর পুরনো কথা বলতে চান না। “আমি আর আশাজি অনেক দিনের বন্ধু, দু’জনেই কলকাতাকে খুব ভালবাসি, এই কথাগুলো অনেক বার বলেছি। যা বলিনি তা হল, আশাজি আমাকে বাঁচার রসদ জোগান। আজও মুম্বইতে মনখারাপ হলেই আশাজিকে ফোন করি। ছেলেমেয়ে, সংসার, পুরনো কথা সব নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা মারি দু’জনে”। এর মধ্যেই আশা তাঁর ফেরার টিকিট এগিয়ে আনতে বললেন তাঁর কলকাতার বন্ধু মহুয়া লাহিড়িকে। “শরীরটা একদম ভাল নেই, আমি তাড়াতাড়ি মুম্বই ফিরে যেতে চাই। আজকাল মুম্বইয়ের বাইরে শরীর খারাপ হলে ভয় লাগে,” বলছিলেন আশা। তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মেয়ে বর্ষার মৃত্যুর পর শরীর একদমই ভাল যাচ্ছে না। এবং বেশি দিন পেডার রোডের ‘প্রভুকুঞ্জ’ ছেড়ে আশা কোথাও থাকতেও চান না।

দিলীপকুমারের জন্য চিন্তিত দুজনেই: শ্যুটিংয়ে যাওয়ার আগে হেলেনের কানের দুল ঠিক করে দিলেন আশা। তার মধ্যেই হেলেন জিজ্ঞাসা করলেন, “আশাজি! সেদিন আপনাকে দিলীপ সাবের ( কুমার) ওখানে দেখলাম না!” প্রশ্ন করেন হেলেন। হেলেনের চুড়িতে তখন হাত বোলাতে বোলাতে আশা বলেন, “আমার শরীরটা খারাপ ছিল সেদিন।”

“ও আচ্ছা আচ্ছা। দিলীপ সাবকে দেখে খুবই কষ্ট হল। শরীরটা একেবারে ভেঙে গিয়েছে,” কথা বলতে বলতেই দেখা গেল দু’জনের চোখেই তখন জল।

দিদি কা গানা বজ রহা হ্যায়: আশা তখন ঘরে রেডি হচ্ছেন। রেডি হয়ে যখন বেরোচ্ছেন, তখন পার্পল মুভি টাউন-এ অলকা যাজ্ঞিকের ঘর থেকে ভেসে আসছে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’র সেই বিখ্যাত গান ‘দিল দিওয়ানা....’।

ঘর থেকে বেরিয়ে লিফ্টে উঠতে উঠতে ধীরে ধীরে হেলেনকে আশা বলেন, “দিদি কা গানা বজ রহা হ্যায় না...।” কথাটা বলার পরেই চারিদিকে নেমে আসে নিস্তব্ধতা। গানও বন্ধ হয়ে যায়।

ভাষ্য: ইন্দ্রনীল রায়; ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন