Tollywood

বাড়ি থেকে শুটিংয়ে আপত্তি

এ ভাবে বাড়িতে শুটিং করার ফলে ধারাবাহিকের গল্প হয়তো এগিয়ে যায়, কিন্তু অভিনয়ের মান কি ধরে রাখা সম্ভব?

Advertisement

 ঈপ্সিতা বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২১ ০৭:৩৫
Share:

কৃষ্ণকলি

সন্ধে গড়ালেই বিনোদনের বড় ভরসা সিরিয়াল। লকডাউন জারি হওয়ায় গত ১৬ মে থেকে বন্ধ রয়েছে শুটিং। ব্যাঙ্কিং থাকায় সেই সময়ে টেলিকাস্ট নিয়ে সমস্যা হয়নি চ্যানেলগুলির। কিন্তু লকডাউন ১৫ জুন পর্যন্ত টানা হতেই সমস্যায় পড়েছে তারা।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে ‘কৃষ্ণকলি’, ‘যমুনা ঢাকি’র মতো বেশ কিছু ধারাবাহিকের অভিনেতারা বাড়ি থেকে নিজের অংশটুকু শুট করে চ্যানেলের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। নীল ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করেই শুটিং করছি। কেবল ক্লোজ় শট, মিড লেংথ নেওয়া হচ্ছে। ব্যাকগ্রাউন্ড যতটা সম্ভব ফ্যাকাশে করেই শুটিং চলছে।’’ তাঁর স্ত্রী তৃণা সাহা এখন ‘নিখিল’-এর ক্যামেরার দায়িত্বে। আবার ‘যমুনা ঢাকি’র যমুনা অর্থাৎ শ্বেতা ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘লুকটা একটু চেঞ্জ করলাম। উইগ ছেড়ে নিজের হেয়ার স্টাইলটাই রাখলাম।’’ ‘সাঁঝের বাতি’ ধারাবাহিকের আর্য রেজ়ওয়ান রব্বানি শেখ বললেন, ‘‘বাড়িতে লাইটের সেট-আপ কেনা ছিলই, এখন সেটা কাজে লাগাচ্ছি।’’

এ ভাবে বাড়িতে শুটিং করার ফলে ধারাবাহিকের গল্প হয়তো এগিয়ে যায়, কিন্তু অভিনয়ের মান কি ধরে রাখা সম্ভব? ‘‘চ্যালেঞ্জ রয়েই যায়। স্টুডিয়োয় ঝকঝকে সেট দেখে দর্শক অভ্যস্ত। কিন্তু গল্প ও চরিত্র গুরুত্ব পেলে বাকি সব ম্লান হয়ে যায়,’’ বললেন জ়ি বাংলার ক্লাস্টার হেড (ইস্ট) সম্রাট ঘোষ। আকাশ আট চ্যানেলের হেড ঈশিতা সুরানা বললেন, ‘‘করোনা আবহে দর্শককেও ফ্লেক্সিবেল হতে হবে। আমরা তাঁদের কাছে যে ভাবেই হোক নতুন গল্প পৌঁছে দিচ্ছি, পছন্দ করবেন বলেই আশা রাখি।’’

Advertisement

সাঁঝের বাতি

তবে বাড়ি থেকে এ ভাবে শুটিং করা নিয়ে প্রবল আপত্তি তুলেছে ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া। সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বললেন, ‘‘ফেডারেশনকে না জানিয়েই বাড়ি থেকে অভিনেতাদের দিয়ে শুটিং করিয়ে ‘কৃষ্ণকলি’, ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’-র টেলিকাস্ট হয়েছে। প্রযোজকরা ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্যই করেছেন। কেন করেছেন, তার জবাবদিহি চেয়ে সুশান্ত দাস ও জ়ি বাংলা প্রযোজনা সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়েছি। সদুত্তর না মিললে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বাড়ি থেকে শুটিং করার ব্যাপারটি মেনে নিয়ে সম্রাট ঘোষ বললেন, ‘‘চিঠির ব্যাপারে জানি না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্টুডিয়োয় শুটিং করতে বারণ করেছেন। বাড়ি থেকে শুটিং করা যাবে না, বলা নেই। সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে শিল্পীদের দিয়ে শুটিং করিয়ে দর্শকের কাছে পৌঁছে দিলে অসুবিধে কোথায়? রিপিট টেলিকাস্ট করলে প্রযোজনা সংস্থা, চ্যানেল বিরাট ক্ষতির মুখে পড়বে।’’ প্রযোজক সুশান্ত দাস বললেন, ‘‘শুটিং না করলে ক্ষতির মুখে পড়ব। চিঠি এলে প্রোডিউসর্স গিল্ডের মাধ্যমে জবাব দেব।’’

ঝামেলা এড়াতে একটি চ্যানেলে ইতিমধ্যেই পুরনো সিরিয়াল দেখানো হচ্ছে। আবার কিছু সিরিয়ালে স্মৃতি রোমন্থনের দৃশ্য রাখা হচ্ছে। সকলে তাকিয়ে প্রশাসনের তরফে শুটিং শুরুর নির্দেশের অপেক্ষায়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানোর কথা ভাবছে ফেডারেশন থেকে চ্যানেল সকলেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন