Anandaplus News

একঘেয়েমির ‘ব্ল্যাকমেল’

ছবিটির বড় সমস্যা হল ঘটনার পুনরাবৃত্তি। দেবের খুন করার স্বপ্ন বারবার ফিরে এসেছে। ব্ল্যাকমেলের গোলকধাঁধায় চার-পাঁচটি চরিত্রের কানামাছি খেলাও বিরক্তি জাগায়।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০০:০১
Share:

পরিচালক অভিনয় দেওর প্রথম ছবি ‘দিল্লি বেলি’ ছিল ‘টয়লেট কমেডি’। সেই ছবির রেশ এখনও বোধহয় কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তাই চতুর্থ ছবি ‘ব্ল্যাকমেল’-এর ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে ‘দিল্লি বেলি’ সিনড্রোম। ছবিতে দেব (ইরফান) টয়লেট-পেপার সেলস এগজিকিউটিভের ভূমিকায়। তবে ছবির প্লটের সঙ্গে দেবের পেশা ও দৈনন্দিন অভ্যেসের (সহকর্মীর ডেস্ক থেকে তার স্ত্রীর ছবি চুরি করা, অফিসের শৌচাগারের দরজায় তা লাগিয়ে হস্তমৈথুন করা) যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া একটু দুষ্কর।

Advertisement

দেনায় ডুবে থাকা দেব এক দিন অফিস থেকে ফিরে আবিষ্কার করে, তার স্ত্রী রিনার (কীর্তি) বিছানায় অন্য এক পুরুষ। অহিংসায় বিশ্বাসী দেব সেই মুহূর্তে হিংসাত্মক কিছু করে ফেলার দিবাস্বপ্ন দেখে। তবে শেষমেশ কিছু করে না। তার বদলে সে অজ্ঞাতপরিচয়ে স্ত্রীর প্রেমিক রঞ্জিতকে (অরুণোদয়) হুমকি দিতে শুরু করে। রঞ্জিতের মদ্যপ স্ত্রী ডলির (দিব্যা) বাবার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য রঞ্জিত ব্ল্যাকমেল করে রিনাকে। সে হাত পাতে দেবের কাছে। আর দেবের হাতের পাঁচ তো ছিলই রঞ্জিত!

ছবিটির বড় সমস্যা হল ঘটনার পুনরাবৃত্তি। দেবের খুন করার স্বপ্ন বারবার ফিরে এসেছে। ব্ল্যাকমেলের গোলকধাঁধায় চার-পাঁচটি চরিত্রের কানামাছি খেলাও বিরক্তি জাগায়। ছবির প্লট ব্ল্যাকমেল করা। তাই খুন, রক্ত এসেছে নিয়মমাফিক। তবে আলগা বুনোটের গল্পে কোনও উপাদানই ছবির উত্তরণে সাহায্য করেনি। এমনকী ইরফানের ত্রুটিহীন অভিনয়ও নয়! অনেক বছর পরে উর্মিলা মাতন্ডকরের যৌন-আবেদনপূর্ণ নাচও সহায় হয়নি। ছবির গতি বেশ মন্থর।

Advertisement

ব্ল্যাকমেল

পরিচালনা: অভিনয় দেও

অভিনয়: ইরফান খান, কীর্তি কুলহারি, অরুণোদয় সিংহ

৪.৫/১০

ছবিতে কীর্তি কুলহারি প্রায় নেই বললেই চলে, যা ছবির জন্য খুব একটা সুখকর নয়। ছবির অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছেন অরুণোদয় সিংহ। পুরুষালি চেহারার অরুণোদয়ের দুর্বল অভিনয় ছবির বিপদকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। দেবের বসের ভূমিকায় ওমি বৈদ্য ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর ‘চতুরের’ খোলসেই আটকে রয়েছেন। তাঁর সংলাপ বলার সেই এক ধরন হাসির উদ্রেক করে না। দিব্যা দত্তর চরিত্রটিও তেমন বলিষ্ঠ নয়।

ইরফানের সহকর্মীর চরিত্রে প্রধুমান সিংহ এই ছবির সংলাপ লিখেছেন। তবে ‘ব্ল্যাক কমেডি’তে মনে রাখার মতো সংলাপ কই? ছবিতে উপাদানের অভাব ছিল না। তবে আগের ছবির হিট ফর্মুলা এই ছবিতে ব্যবহার করতে গিয়েই বিপত্তি বাধিয়েছেন পরিচালক অভিনয়। অন্য পুরুষের শয্যাসঙ্গী রূপে স্ত্রীকে দেখার পর ইরফানের দৌড় ‘ভাগ ভাগ ডিকে বোস’-এর স্মৃতিও উস্কে দেয়।

‘ব্ল্যাক কমেডি’র প্রাণভোমরা তার হাস্যরস, পরিস্থিতির বৈপরীত্য এবং ছকভাঙা চরিত্র। এই ‘ব্ল্যাকমেল’-এ না আছে ভয়, কৌতুক, উত্তেজনা, না চরিত্রের অচেনা রং। এমন ‘ব্ল্যাকমেল’-এ থোরাই ডরায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন