সেই ছবির পোস্টার
স্বামী বিবেকানন্দের বই পড়ে একটি প্রশ্নই তাড়া করে বেড়াচ্ছে ছোট নারুকে।
‘‘আমরা কার জন্য বাঁচি?’’
ধোঁয়ার মধ্যে মা যখন ভাই-বোনদের জন্য রান্না করছেন কিংবা অন্যের বাড়িতে বাসন মেজে ফিরছেন, অথবা বাবা যখন স্টেশনে চা বেচে বাড়ি আসছেন— এই প্রশ্নটিই করত বালকটি। নারুকে ধমকে দিতেন বাবা। বলতেন, গুরুজিকে জিজ্ঞেস করতে। মা-র কাছে নারু অনুযোগ করত, বাবা যেন তাকে ‘নারু’ না বলে ‘নরেন্দ্র’ই বলেন।
বত্রিশ মিনিটের ফিল্মে শেষ পর্যন্ত উত্তর খুঁজে পেল বালকটি। আসল বাঁচা তখনই, যখন অন্যের জন্য বাঁচা যায়। তার পরে এক গরিব দলিত পরিবারকে নিয়ে বঞ্চনার নাটক লিখে কুড়ি টাকা উপহার পেয়ে সহপাঠীকে পোশাক কিনে দেয় নারু। পোশাক না থাকায় ইচ্ছে থাকলেও স্কুলে যেতে পারছিল না যে ওই ছেলেটি। ছোট সেই নারুই আজকের নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন: যেখানে মোদী সেখানে মেহুল, সরব কংগ্রেস
এই মুহূর্তে তিনি বিদেশে। কিন্তু তাঁর সৈনিকরা তাঁর উপরে তৈরি ছবিটি নিয়ে ভোটের বাদ্যি বাজাচ্ছেন।
গত কাল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ছবিটি দেখেছেন। কাল দেখবেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। আজ সংসদ ভবন থেকে পায়ে হেঁটে পাশের অডিটোরিয়ামে ফিল্মটি দেখতে যান উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। দর্শক আসনে বিজয় গয়াল থেকে অরুণ জেটলির স্ত্রী, মায় লকেট চট্টোপাধ্যায়। উপরাষ্ট্রপতি থেকে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা ৩২ মিনিটের ফিল্মটির পরতে পরতে খুঁজে পেলেন মোদীর ‘উদারতা’কে। এক নরেন্দ্রে খুঁজলেন অন্য নরেন্দ্রকে। দাবি করলেন, মানব সেবাতেই ঈশ্বরসেবা করছেন নরেন্দ্র মোদীও। লড়াই করে বড় হওয়া নরেন্দ্র মোদী কী ভাবে অন্যের জন্য জীবন সমর্পণ করেছেন— পীযূষ গয়াল শোনালেন সেই কথা। ‘চলো জীতে হ্যায়’ ছবিটি কালও দেখানো হবে সংসদ চত্বরে। তার পর গোটা দেশে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হবে মোদীর উদারতার। পরিচালক মঙ্গেশ হাড়াওয়ালে আগেও দু’টি ছবি বানিয়েছেন। একটি কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে, অন্যটির বিষয় গণতন্ত্র। দু’টিই রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে। তৃতীয় ফিল্মটি করার জন্য পরিচালক ঘাঁটি গেড়ে বসেছিলেন আমদাবাদে, মোদীর জন্মস্থল বডনগরে। ছবি শ্যুটিং করেছেন মোদীর পাড়াতেই। যে বাড়িতে মোদী ছোটবেলায় থাকতেন, তার দু’টি বাড়ি পরেই। মোদী যে স্কুলে পড়তেন, এমনকি ঠিক যে বেঞ্চটিতে বসতেন, সেখানেই ক্যামেরাবন্দি করেছেন ছোট্ট নারুকে।
আরও পড়ুন: সিনেমার ফ্লেভার টিভিতে, আসছে ‘ভূমিকন্যা’
নারুর ভূমিকায় যে অভিনয় করেছে, তার নাম ধৈর্য্য। মুম্বইয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রটি বলছে, ‘‘মোদীর ভূমিকায় অভিনয় করে আমি গর্বিত।’’ ছবির শেষে আসল মোদীকে সামনে না পেলেও ছোট মোদীকে কোলে তুলেই সাধ মেটাল ভক্তকুল।