সৌম্যা
অভিনয় যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনই উপস্থাপনাও বেশ কঠিন। ছবির মতো হিট-ফ্লপের ভাবনা বা চাপ না থাকলেও শোয়ের উপস্থাপকদের রীতিমতো টানাপড়েনের মধ্যে কাটাতে হয়। তবে সব কিছু ভিতরে লুকিয়ে রেখে হাসিমুখে মঞ্চে নিজেকে হাজির করাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটাই মানছেন ভারতীয় টেলিভিশনের অন্যতম সফল উপস্থাপক সৌম্যা টন্ডন।
বেশ কয়েক বছর ধরে ‘ভাবীজি ঘর পর হ্যায়’ ধারাবাহিকে অভিনয় করলেও সৌম্যার পরিচিতি কিন্তু শো সঞ্চালনা করেই। নিজেই বলছেন, ‘‘একটা সময় ছিল, যখন সঞ্চালক হিসেবে প্রধানত ছেলেদেরই দেখা যেত। তবে এখন মেয়েরাও তাল মিলিয়ে কাজ করছে।’’ সঞ্চালনা মানেই চিত্রনাট্যে লিখে রাখা লাইন ক’টা আউড়ে যাওয়া নয়। বরং তার বাইরে বেরিয়ে প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলে নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরা। যেটা সৌম্যা পেরেছেন। তার জন্য ছাড়তেও হয়েছে অনেক। ‘‘এমনও দিন গিয়েছে, এ শহর থেকে সে শহরে যেতে হয়েছে। একই সঙ্গে টানা সঞ্চালনা। দিনের শেষে মনে হয় যে, প্রাণশক্তি নিংড়ে বার করে নেওয়া হয়েছে। এত ক্লান্ত লাগে অনর্গল কথা বলার পর,’’ বলছেন সৌম্যা। আর সেই ক্লান্তি সৌম্যা দূর করেন পরিবারের কাছ থেকে। তাই কাজ শেষ হলে কোথাও না গিয়ে সোজা বাড়ি ফিরে নিজের বিছানাটাই বেশি পছন্দ তাঁর।
ইমতিয়াজ় আলির ‘জব উই মেট’-এর রূপ ছোট চরিত্রেও দর্শকের নজর কেড়েছিল। কিন্তু তার পর সে ভাবে বড় পর্দায় দেখা যায়নি সৌম্যাকে। কেন? ‘‘যে সময়ে ছবিটা হয়েছিল, তখনও নন-ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষ সিনেমায় বড় চরিত্র খুব একটা পেতেন না। চরিত্র ছোট হওয়া সত্ত্বেও আমি ছবিটা নিয়েছিলাম। তার কারণ একমাত্র চিত্রনাট্য। আর আমার কাছে কী করছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। কোন মাধ্যমে করছি, সেটা নয়। এ ছাড়াও, টিভির কাজের চাপে সময়ও হতো না। এবং বড় পর্দা থেকে এমন কোনও অফার আসেনি যার জন্য টিভি ছেড়ে যেতে পারি,’’ স্পষ্ট জবাব অভিনেত্রীর।
সঞ্চালনা করতে গিয়ে কখনও কোনও অপ্রস্তুত মুহূর্তের সম্মুখীন হননি? ‘‘একটি নাচের রিয়্যালিটি শোয়ের ফিনালে ছিল। মঞ্চে আমার সামনে প্রায় ২৫ হাজার দর্শক। অতিথির আসনে সলমন খান, প্রভু দেবার মতো মানুষ। মঞ্চের জোরালো নীল আলোয় সব ধাঁধিয়ে গেল। কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। অথচ কাজটা করে যেতে হবে। সে দিন আমার ঠোঁটে হাসি ছিল বটে, কিন্তু ভিতরে ধুকপুকানি বেড়েই চলছিল,’’ স্মৃতি রোমন্থন সৌম্যার।
আর তাঁর এই চোখধাঁধানো সৌন্দর্যের রহস্য? ‘‘পুরোটাই মা-বাবার অবদান। তবে আমি যত্নও নিই। ময়দা, দুধ বা চিনি খাই না। আর বিশ্বাস করি যে, এমন ডায়েট মেনে চলা দরকার, যা আপনি জিইয়ে রাখতে পারবেন।’’ ঝোঁকের মাথায় শুরু করে খেই হারিয়ে ফেলা না-পসন্দ সৌম্যার। ‘লেস ইজ় মোর’ তাঁর ফ্যাশন মন্ত্র। এমনই পোশাক পরতে পছন্দ করেন যাতে নিজের পজ়িটিভ সত্তা ফুটে ওঠে।
আদ্যোপান্ত প্রাইভেট সৌম্যা বিয়ে করেছিলেন মিডিয়ার ঝলকানির আড়ালে। সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকলেও সৌম্যার বক্তব্য, ‘‘আমি খুবই সাধারণ মেয়ে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনটা আমারই। সে ব্যাপারে কিছু জানাতে চাই না।’’