চিড়িয়াখানায় দেব

‘আমাজন অভিযান’-এর অভিনব প্রচারের সঙ্গী আনন্দ প্লাস‘আমাজন অভিযান’-এর অভিনব প্রচারের সঙ্গী আনন্দ প্লাস

Advertisement

ঊর্মি নাথ

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share:

দেব

তিনি আসবেন বলে, সেজে উঠেছিল শতাব্দীপ্রাচীন কলকাতার আলিপুর জুওলজিক্যাল গার্ডেন। আর জীবজন্তুদের প্রাতরাশও অন্য দিনের চেয়ে একটু আগেই দেওয়া হয়েছিল। কারণ তিনি দেব। ২২ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে ‘আমাজন অভিযান’। তাঁরই প্রোমোশনে এসেছিলেন চিড়িয়াখানায়। পরিকল্পনা ছিল, লোকজন ঢোকার আগেই দেব প্রোমোশন সেরে চলে যাবেন। কিন্তু সে প্ল্যান ধোপে টিকল না। ভিড়ের মধ্যে একজন বললেন, ‘‘দেব, ‘চাঁদের পাহাড়’-এর আগেও চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন। চিড়িয়াখানা ওঁর লাকি চার্ম!’’ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, সাদা বাঘ, জিরাফ, লেপার্ড, গন্ডার দেখার পর একটি গাছের তলায় বসে দেব আড্ডা দিলেন আনন্দ প্লাসের সঙ্গে।

Advertisement

প্র: ‘চাঁদের পাহাড়’-এর পার্ট টু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা নয়। শঙ্করকে নিয়ে পাঠক কতটা স্পর্শকাতর, জানেন নিশ্চয়!

Advertisement

উ: ‘চাঁদের পাহাড়’-এর সাফল্য সাহস জুগিয়েছে। দেখুন, এই ছবিটার জন্য আমি প্রচুর পরিশ্রম করেছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়েছি। প্রযোজকও অনেক খরচ করেছেন। দৃঢ় বিশ্বাস, সকলের ভাল লাগবে ছবিটা। আমার মতে, পার্ট ওয়ানের চেয়েও বেশি ভাল লাগবে।

প্র: ঝুঁকি নিতে ভয় করেনি?

উ: না। তবে হ্যাঁ, জলের তলায় একটা দৃশ্য শ্যুট করতে গিয়ে দমবন্ধ অবস্থা হয়েছিল। কুমির, অ্যানাকোন্ডা যে কোনও সময় আক্রমণ করতে পারত।

প্র: এই সব কীর্তিকলাপের কথা আপনার মা জানেন?

উ: (সশব্দ হেসে) মা তো এ সব কিছুই জানে না! তবে প্রমাদ গুনছি, ছবিটা দেখার পর মারাত্মক বকুনি খাব। কানমলাও জুটতে পারে!

প্র: ইংরেজিতে ডাবিং হবে না?

উ: ‘আমাজন...’-এর সংলাপের ৭০ শতাংশ ইংরেজি আর ৩০ শতাংশ বাংলা। এ ছাড়া তেলুগু, তামিল, অহমিয়া, ওডিশা ও হিন্দি... পাঁচটা ভাষায় ডাবিং হয়েছে।

প্র: ২৫ ডিসেম্বর আপনার জন্মদিন। আনন্দ প্লাসের তরফ থেকে আপনাকে আগাম শুভেচ্ছা। সে দিন তো আবার বড়দিনও। সান্তার কাছে কী চাইবেন?

উ: ‘আমাজন...’-এর সাফল্য।

প্র: সান্তা যদি গভীর অরণ্যে নিয়ে গিয়ে আপনাকে বলেন একটি পশুকে পোষ্য হিসেবে বাড়ি নিয়ে যেতে, তা হলে কাকে নেবেন?

উ: সিংহ। সব সময় সঙ্গে একটা সিংহ থাকলে মেজাজটাই আলাদা হয়ে যাবে। তবে চাইব, সান্তা যেন এমন উপহার না দেন। বন্যরা বনে সুন্দর। ওদের থাকার জায়গা ছোট হলে ওরা মোটেও ভাল থাকে না। আমরা যদি স্বাধীন ভাবে বাঁচতে পারি, ওরা কেন নয়? ছবির জন্য আমি বন্য পশুদের দু’-তিন মাস শুধু স্টাডি করেছি। বলতে পারেন, ওদের সঙ্গে ঘর করেছি। ওরা কোন গন্ধে কী রিঅ্যাক্ট করে, বুঝতে পারি। এ জন্য কখনও শ্যুটিংয়ে পারফিউম ব্যবহার করতাম না।

প্র: ‘আমাজন...’-এর পোস্টারে, কুমিরের দিকে বন্দুক তাক করে আছেন। পশুপ্রেমিকদের রোষে পড়তে হবে না তো?

উ: ছবিতে কিন্তু আ্যাকশনগুলো অ্যানিমেটেড। ‘চাঁদের পাহাড়’-এ ছিল সিংহকে গুলি করছি। তাই বলে কি তা সত্যি নাকি? বরং সিংহটা রোজ এসে প্রচুর ঘোড়ার মাংস খেয়ে বেশ ফুরফুরে থাকত। সংরক্ষণ নিয়ে ওরা যথেষ্ট কড়া।

প্র: এ ব্যাপারে ভারতের চেয়ে নিশ্চয়ই অনেক এগিয়ে?

উ: আমাদের দেশে অনেক নিয়ম আছে। বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করতে গেলে এনওসি লাগে। কিন্তু ওখানে নিয়ম আরও কড়া। একটা প্রাণীর সঙ্গে সব সময় ডাক্তার, ট্রেনার থাকেন, অবজারভার থাকেন। যাঁরা লক্ষ রাখেন, দু’-তিন ঘণ্টার বেশি কাজ করানো হচ্ছে না তো! ওঁরা যে ভাবে যত্ন নেন, তা শিক্ষণীয়। আবার আফ্রিকার জঙ্গলে শ্যুটিং করতে গিয়ে দেখেছি, শিকারিরা নির্মম ভাবে গন্ডার হত্যা করেছে শৃঙ্গের জন্য। আমি সকলকে, বিশেষ করে ছোটদের বলতে চাই, কোনও পশুকে অকারণে আঘাত করবে না। এই যে একটু আগে গন্ডারটা (চিড়িয়াখানার) দৌড়ে চলে গেল, এটা আমার ভাল লাগল না। ভিড় দেখে হয়তো ওর অস্বস্তি হয়েছে!

ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন