‘গোটা ছবিতে পরিষ্কার বাংলায় কথা বলিনি’

আক্ষেপ দু’জনের। কিন্তু আনন্দ প্লাসকে বাকি শুটিংয়ের গল্প বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত দুই নবাগতা সৌরসেনী ও বিবৃতি আক্ষেপ দু’জনের। কিন্তু আনন্দ প্লাসকে বাকি শুটিংয়ের গল্প বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত দুই নবাগতা সৌরসেনী ও বিবৃতি

Advertisement

নবনীতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

সৌরসেনী ও বিবৃতি।ছবি: শুভদীপ ধর

তন্বী, সুন্দরী ও আত্মবিশ্বাসী... হ্যাঁ দু’জনের জন্যই এই বিশেষণ। মডেলিং দিয়ে কেরিয়ার শুরু, তার পরে অভিনয় জগতে। স্কুল বালিগঞ্জ শিক্ষা সদন, স্নাতকস্তরে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা। বিশেষণের মতো এই তথ্যগুলোও দু’জনের সম্পর্কে এক। সৌরসেনী ও বিবৃতির মধ্যে এতটাই মিল। তবুও এত বছর সময় লাগল একসঙ্গে কাজ করতে! সৌরসেনীর ঠোঁটে হাসি, ‘‘একই সময়ে মডেলিং করলেও একসঙ্গে খুব একটা কাজ করিনি। মুসৌরিতে গিয়ে যখন রুম শেয়ার করলাম, তখন ওকে কাছ থেকে চিনলাম আর দেখলাম যে পুরো আমারই মতো।’’ বিবৃতির গলাতেও একই সুর, ‘‘আমাদের সব কিছু সেম। আমাদের মানসিকতাও অনেকটা এক।’’

Advertisement

শুধু খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে বিবৃতি কড়া। ‘‘ও খুব হেল্‌থ কনশাস। শুটিং চলাকালীন বিবৃতিই আমার ডায়েট মেনটেন করেছে বলতে গেলে...’’ বন্ধুত্বের আমেজ ধরা দিল সৌরসেনীর কথায়।

দুই বঙ্গতনয়াই কর্মক্ষেত্রে সফল। কাজের সূত্রে বিবৃতি পাড়ি দিয়েছেন মুম্বইয়ে। অন্য দিকে সৌরসেনীও ব্যস্ত তাঁর ছবির কাজে। এর মাঝেই দু’জনের জীবনে এসে পড়ল ‘ব্যোমকেশ গোত্র’। এটাও কি কাকতালীয়? বিবৃতির মতে, ‘‘অনেকটাই। আমি তো মুম্বইয়ে থাকি। রাজস্থানে একটা ছবির শুটিং করছিলাম। অরিন্দমদা (শীল) যোগাযোগ করে বললেন যে, ‘১০ মে সকাল দশটায় আমরা দেখা করছি’। সে দিন দেখা হল আর তার ঠিক এক মাস পরে ১০ জুন মুসৌরিতে, সোজা সেটে!’’ এ দিকে সৌরসেনী অঞ্জন দত্তর ছবির শুটিংয়ের মাঝেই পেলেন প্রস্তাব।

Advertisement

ছবিতে চুমকির চরিত্রে দেখা যাবে সৌরসেনীকে। চুমকি কুমিল্লার মানুষ। দেশভাগের সময়ে এ পার বাংলায় আসে এবং সত্যকামের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এই চরিত্রের জন্য তাঁকে পরিশ্রমও করতে হয়েছে প্রচুর। ‘‘সবচেয়ে কঠিন ছিল ভাষাটা। কুমিল্লার ভাষায় কথা বলতে হয়েছে। এই ছবি করার আগে ভাষাটার সঙ্গে তেমন পরিচয়ই ছিল না। ফলে ভাষার টানটা ধরতে খুব খাটতে হয়েছে। তার উপর ছবির অন্য চরিত্ররা যেখানে স্বাভাবিক বাংলায় কথা বলছে, আমার ভাষা অন্য। ফলে কারও সঙ্গে কথা বলে যে প্র্যাকটিস করব, তারও সুযোগ ছিল না। ছবিতে স্বাভাবিক বাংলায় কথাই বলিনি।’’ বিবৃতিরও এক আক্ষেপ, ‘‘আমি মীরা নামে এক বিহারি মেয়ের চরিত্রে। আমিও গোটা ছবিতে ‘জি পরনাম’ বলে চালিয়েছি।’’

চরিত্রের ভাষা নিয়ে সমস্যা থাকলেও পরিচালকের নাম নিতেই উচ্ছ্বসিত দু’জনে। সৌরসেনীর মতে, ‘‘অভিনেতাদের এত ভাল বোঝেন অরিন্দমদা! আর মানুষটা এত ভাল যে, আট থেকে আশি সকলেই ওঁর সঙ্গে সমান কমফর্টেবল।’’ বিবৃতিও সহমত, ‘‘অরিন্দমদা আমাদের সব কিছুর খেয়াল রাখতেন।’’

একে গোয়েন্দা ছবির শুটিং, তায় আবার মুসৌরির মতো লোকেশন... শুটিং চলাকালীন খুব মজা করেছেন এই দুই মডেল কন্যে। সঙ্গে ছিলেন আবীর, রাহুল, অর্জুনের মতো সব জনপ্রিয় তারকা। তবে সেই চাপ অনুভবই করেননি দুই নবাগতা। পুরো টিম জমিয়ে মজা করেছে মুসৌরিতে। সেই উচ্ছ্বাস ধরা দিল বিবৃতির গল্পে, ‘‘আমরা যখন শুট করছি, তখন ওয়র্ল্ডকাপ চলছে। যে দিন আর্জেন্টিনার ম্যাচ, সে দিন জার্সি পরে তৈরি থাকত রাহুলদা। আর যে দিন জার্মানির ম্যাচ, সে দিন আবার অর্জুনের ছুটি থাকত। ম্যাচ দেখতে দেখতে কমেন্ট্রি করত। আর আবীরদা...’’ বিবৃতির মুখের কথা কেড়ে নিলেন সৌরসেনী, ‘‘আবীরদা তো সব কিছু নিয়েই আমার লেগ পুল করত। নিজে এত প্রতিষ্ঠিত তারকা, বুঝতেই দেয়নি। প্রত্যেক দিনই শুটের পরে আমরা একসঙ্গে ম্যাচ দেখতাম, খেতাম, আড্ডা দিতাম।’’

শুধু কলকাতাই নয়, কলকাতার বাইরেও অভিনয় করছেন দু’জনে। তবুও কলকাতাই তাঁদের প্রিয় শহর। ‘‘বাইরের ইন্ডাস্ট্রিতে সকলে এত প্রফেশনাল যে, কাজ শেষ মানে সেখানেই সব শেষ। এখানে শুটিংয়ের পরেও সম্পর্ক থেকে যায়। সেলিব্রেশন চলতেই থাকে। আমাদের হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপও আছে, যেখানে আড্ডা চলে। তবে দুটো ইন্ডাস্ট্রিতে পার্থক্যও আছে। সেটা হল পে স্কেল,’’ সৌরসেনীর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি। বিবৃতি অবশ্য তেমন কোনও পার্থক্য অনুভব করেন না। মুম্বইয়ে থাকতে শুরু করার পরে ফাঁক পেলেই কলকাতায় চলে আসেন। এ শহরের সঙ্গে যে নাড়ির টান...

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন