ছবির নাম ‘বৈদেহী কা দুলহা’ হতে পারত

বাণিজ্যিক ছবির সংজ্ঞা ক্রমশ বদলাচ্ছে বলিউডে। অবাস্তব, অ্যাকশনধর্মী গল্পের গণ্ডি ছাড়িয়ে একটু মাটির কাছাকাছি আবেগজারিত গল্পের দিকে ঝুঁকছে। সেই রাস্তায় ‘বদ্রীনাথ কী দুলহনিয়া’ একটা প্রয়াস।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০১:৫১
Share:

বাণিজ্যিক ছবির সংজ্ঞা ক্রমশ বদলাচ্ছে বলিউডে। অবাস্তব, অ্যাকশনধর্মী গল্পের গণ্ডি ছাড়িয়ে একটু মাটির কাছাকাছি আবেগজারিত গল্পের দিকে ঝুঁকছে। সেই রাস্তায় ‘বদ্রীনাথ কী দুলহনিয়া’ একটা প্রয়াস।

Advertisement

গল্পের ধাঁচ ‘হাম্পটি শর্মা কী দুলহনিয়া’র মতোই। মজা আর আবেগের মিশেল। তবে সিক্যুয়েল বলা যাবে না। পরিচালক শশাঙ্ক খেতান উত্তরপ্রদেশের ছোট শহর ঝাঁসি আর কোটাকে প্রেক্ষাপটে রেখেছেন। ছোট শহরের বিত্তবান পরিবারের ছেলে বদ্রী (বরুণ ধবন)। তার বিদ্যে ক্লাস টেন পর্যন্ত। বাবার ব্যবসায় সঙ্গত করে। বাবা বেজায় কড়া। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলে না। বললে সে বুক চেপে ধরে বসে পড়ে, হার্ট অ্যাটাকের তাস খেলে! ছেলেরা এখানে অ্যাসেট। বিয়ে হলে মোটা অঙ্কের বরপণ জুটবে। মেয়ে মানেই দায়। শশাঙ্ক তাঁর গল্পে পণপ্রথার বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন। কিন্তু সেটা একেবারেই হালকা চালে।

এদিকে বৈদেহী (আলিয়া ভট্ট) নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। বা়ড়ির ছেলে হতে চায়। বিয়ে নামক চিন্তাভাবনা থেকে শতহস্ত দূরে। বদ্রীর অবশ্য দুলহনিয়া ছাড়া অন্য কিছুতে মন নেই। রাঘববোয়াল বাবাকে রাজি করিয়ে, নানা ফিকির বের করে বিয়ের মঞ্চ তৈরি করে ফেলে বদ্রী। কিন্তু ধোঁকা দেয় দুলহনিয়া। বৈদেহী তার স্বপ্নের পিছনে ছোটে। অগত্যা বদ্রীকে ছুটতে হয় দুলহনিয়ার পিছনে। তার একমাত্র স্বপ্নই যে বিয়ে করা।

Advertisement

গল্পের শেষটা মোটামুটি জানা। কিন্তু পরিচালক যেভাবে শেষ করলেন, তাতে শুরুর দিকের মজার ধুনকি কেটে যায়। গরম-গরম সংলাপ দিয়ে বাবার চেতনা জাগিয়ে সোজাসাপটা নিষ্পত্তি।

গল্প একেবারেই আহামরি নয়। আর ছবির সময় দু’ঘণ্টার মধ্যে অনায়াসে রাখা যেত। তবে যাবতীয় খামতি বরুণ-আলিয়া মিটিয়ে দিয়েছেন। মজার পারদ গল্পটা ধরে রাখে। তাঁদের কেমিস্ট্রি নিয়ে কোনও কথা হবে না। ব্যক্তিগত জীবনে যাই থাক সিদ্ধার্থ মলহোত্রের চেয়ে পরদায় আলিয়ার তালমিল কিন্তু বরুণের সঙ্গে অনেক বেশি। ছবিতে বরুণের বন্ধুর চরিত্রে সাহিল বেদ বেশ ভাল।


আরও পড়ুন: পার্শ্বচরিত্রে সুপারস্টার

আলিয়া প্রত্যেকটি ছবিতে অবাক করে চলেছেন! ‘হাইওয়ে’-র ভিরা, ‘ডিয়ার জিন্দেগি’-র কায়রা থেকে এ ছবির বৈদেহী, সব চরিত্রেই সমান সাবলীল তিনি। বরুণের কমিক টাইমিংয়ের প্রশংসা করতেই হয়। তাঁকে কখনও গোবিন্দ, কখনও সলমনের মতো লেগেছে। বরুণ-আলিয়ার মধ্যে অভিনয়ের বিচারে আলিয়াই কিন্তু এগিয়ে থাকবেন। ছবিতে বরুণের আঞ্চলিক হিন্দির মধ্যে থেকে থেকেই শহুরে হিন্দি এসে গিয়েছে। যদিও এতে তার চেয়ে অনেক বেশি দায় পরিচালকের। িতনিই তো ক্যাপ্টেন। তবে শশাঙ্কের গল্প বলার ধরনটা বেশ ভাল।

পরিচালক হালকা চালে যে বার্তাটা দিতে চেয়েছেন, সেটা দর্শক কতটা সিরিয়াসলি নেবেন তাতে সন্দেহ আছে! মজার মোড়কে সাজানো জিনিসকে অনেক সময় আমরা কম গুরুত্ব দিই। একটা জিনিসের প্রশংসা করতেই হয়। সাম্প্রতিক অতীতে মহিলা নির্ভর যে সব ছবি হয়েছে, সব জায়গাতেই মহিলা চরিত্রকে উত্তরণের জন্য পুরুষের হাত ধরতে হয়েছে। সেটা ‘পিঙ্ক’ হোক কিংবা ‘দঙ্গল’। ব্যতিক্রম ‘বদ্রীনাথ কী দুলহনিয়া’। বরুণের চরিত্রের উত্তরণ ঘটে আলিয়ার হাত ধরে। বৈদেহীর লড়াইয়ে কোনও পুরুষের সাহায্য ছিল না।

এখানেও কিন্তু একটা আক্ষেপ থেকে যায়। বিদেশের চাকরি ছেড়ে মেয়েটিকে শেষমেশ স্বামীর ঘর করতে দেশে আসতেই হল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন