বাঙালি আর কিছু না পড়লেও সত্যজিৎ রায়ের লেখা পড়ে। আড্ডা বা আলোচনা সভার জমাটি আসরে ‘ডাক্তার হাজরা’, ‘সেপ্টোপাস’, ‘র্যাটল স্নেক’, ‘বাদশাহি আংটি’... এই নামগুলি বলায় আর ‘ইউরেকা’ বলার মধ্যে বোধহয় একই ‘অ্যাড্রিনালিন রাশ’ কাজ করে। তাতে দোষ নেই। কিন্তু সেই সব অনুষঙ্গ জোর করে একটি গল্পে এনে তা নিয়ে ছবি বানালে সিনেপ্রেমীদের মনে বিরক্তি জাগে, রাগও হয়। পরিচালক রিংগোর ‘রে’ এমন একটি ছবি যেখানে নির্দেশকের ফোকাস বোঝার জন্য পুরো ছবিটি কষ্ট করে দেখতে হবে। ছবির শেষে যে সত্যির উদঘাটন হয়, তা প্রতিষ্ঠার জন্য কি এত আয়োজন-আড়ম্বরের প্রয়োজন ছিল, সেই প্রশ্ন মনে এলেও আসতে পারে।
ছবিটির সমস্যা অনেকগুলি। তবে খুঁটিনাটির চুলচেরা বিশ্লেষণ বাদ দিলেও পরিচালকের গল্প দেখানোর ভঙ্গি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। স্কিৎজোফ্রেনিয়ার মতো জটিল মনস্তাত্ত্বিক রোগ দেখানোর জন্য সস্তা থ্রিল, যৌনতা নিয়ে সুড়সুড়ি, ক্যামেরার স্লো মোশন, রোমাঞ্চকর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, অরুণাচলের নৈসর্গিক সৌন্দর্য... এত কিছুর বন্দোবস্তের পরও ছবির শেষে দর্শক যদি তাচ্ছিল্যের হাসি হাসেন, তবে কি পরিচালকের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়? আসলে পরিচালক দেখাতে চাইছিলেন ‘ভালবাসা’, ‘আশা’র মতো বেঁচে থাকার বেসিক ভার্চুগুলি। তার সঙ্গে জুড়েছেন মনের অবদমিত ইচ্ছের ‘ভাইস’। কিন্তু এই মেলবন্ধনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিচালকের দূরদর্শিতা ও সংবেদনশীলতার অভাব, দুর্বল চিত্রনাট্য, হাস্যকর সংলাপ।
রে
পরিচালনা: রিংগো
অভিনয়: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়,
কৌশিক চক্রবর্তী, টিনা
৩/১০
বিরতির পর দ্বিতীয়ার্ধ অনর্থক মনে হচ্ছিল, যতক্ষণ না ছবির শেষে অভাবনীয় সত্যের আবিষ্কার হল। ছবির অভিনেতাদের কাছেও কোনও অভিযোগ নেই। তবে সৃষ্টিশীল কাজের পিছনে দুর্লভ ‘অনুপ্রেরণা’র প্রসঙ্গ উঠলেও পরিচালককে একটা কথা বলব, এমন ধাঁচের প্লট আগেও কম-বেশি আমরা দেখেছি।