Firdausi Basu In Bollywood Film

‘ভারতীয় সেনা’র প্রেমে পড়েছেন ফিরদৌসি! সেই টানেই মুম্বইয়ে উড়ে গেলেন ‘ডাকাত দলের মেয়ে’?

কী ভাবে পরিচয় হল ‘ভারতীয় সেনা’র সঙ্গে? মুম্বইয়ে গিয়ে কী দেখলেন তিনি? জানালেন আনন্দবাজার ডট কম-কে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৩০
Share:

দেবের হাত ছাড়িয়ে বলিউডে ফিরদৌসি বসু? ছবি: ফেসবুক।

রুক্মিণী মৈত্রের ‘নটী বিনোদিনী’র ‘ক্ষেত্রমণি’ তিনি। দেবের ‘রঘু ডাকাত’-এর দলের ‘ডাকাত মেয়ে’ও তিনিই। ফের চমকে দিতে চলেছেন ফিরদৌসি বসু। পরিচালক ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায় তাঁর হিন্দি ছবি ‘ইকোস অফ ভেলোর’-এ এক বাঙালি সেনা অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়ের জীবন দেখিয়েছেন। ফিরদৌসি ওই প্রয়াত সেনার বাগদত্তা ‘শ্রীতমা’র চরিত্রে। নায়কের ভূমিকায় রোহন ভট্টাচার্য। ফিরদৌসিকে ঘিরে দিব্যা দত্ত, নীরজ কবীর, ঋষভ সাহানি।

Advertisement

‘ইকোস অফ ভেলোর’ ছবির শুটিংয়ে নীরজ কবীর, ফিরদৌসি বসু, দিব্যা দত্ত। ছবি: সংগৃহীত।

পর্দা, মঞ্চের চেনামুখ ফিরদৌসিকে ইন্দিরা এর আগেও তাঁর ছবিতে অভিনয়ের জন্য ডেকেছিলেন। অভিনেত্রী সে সময় পরিচালককে সময় দিয়ে পারেননি। “সেই আক্ষেপ ছিলই। ফলে, এ বার দিদি ডাকতেই সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দিই”, আনন্দবাজার ডট কম-এর কাছে বক্তব্য তাঁর। তিনি জানতে পারেন, রোহনের বিপরীতে দেখা যাবে তাঁকে। যুদ্ধে সৈনিকদের মৃত্যুর পর তাঁদের পরিবার কোন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায়, পরিচালক সে দিকটাই দেখাতে চলেছেন। ছবিতে রোহনের মা-বাবা দিব্যা এবং নীরজ। ছবির ট্রেলারমুক্তি ঘটেছে কান চলচ্চিত্র উৎসবে। ছবিটি দেখানো হয়েছে ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে।

একদিনে লুক টেস্ট, বিদেশি প্রযোজকদের মুখোমুখি। পরের দিন থেকে কালীঘাট অঞ্চলের একটি বাড়িতে শুটিং শুরু। তার আগে কাশ্মীর অংশের শুটিং হয়ে গিয়েছে। ফিরদৌসির বুক ঢিপঢিপ, তাঁকে দিব্যা-নীরজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করতে হবে। রোহন মুখচেনা হলেও আলাপ নেই তাঁর সঙ্গে। তার পর? “ইন্দিরাদি আগাম বলে দিয়েছিলেন, দিব্যাজি খুব গম্ভীর। কাজের ব্যাপারে ভীষণ নিয়মনিষ্ঠ। আগে থেকে সংলাপ মুখস্থ করে আসিস।” ফিরদৌসি সেটে গিয়ে দেখেন, পরিচালক যেমন বলেছিলেন দিব্যা ঠিক তেমনই। গম্ভীর, কাজের বাইরে কিছুই বোঝেন না। মহড়ার সময়েও ভীষণ সিরিয়াস। কেউ টুঁ শব্দ করলে প্রচণ্ড রেগে যান!

Advertisement

ফিরদৌসি বসু আর রোহন ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।

“অথচ এই মানুষটিই আমায় কিউ দিয়েছিলেন! দিব্যাজির অংশের শুটিং হয়ে গিয়েছে। তিনি পাশের ঘরে। আমার ক্লোজ় শট নেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ে দেখি দিব্যাজি এসে দাঁড়ালেন ক্যামেরার বাইরে থেকে ওঁর সংলাপ বলে গেলেন। যাতে আমার অভিনয় নিখুঁত হয়”, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন ফিরদৌসি। নীরজ কবির সম্পর্কেও তাঁর বক্তব্য একই। অভিনেতা ভীষণ শান্ত, ঠান্ডা মাথার মানুষ। কম কথা বলেন, কম হাসেন। নিজের মধ্যে থাকতে পছন্দ করেন। আর রোহন? “আমার নায়ক মাটির কাছাকাছি— রোহন সম্পর্কে এটাও যেন কম বলা হয়। কী যে ভাল অভিনেতা! মৃত্যুর দৃশ্যে একটানা অনেক ক্ষণ দমবন্ধ করে শুয়েছিল ও। শুনতে যত সহজ, বাস্তবে কিন্তু তত নয়। ওই সময় এক মুহূর্তের জন্য রোহনের পেট কাঁপেনি!”

টলিউড আর বলিউডের মধ্যে এখনও অনেক তফাত? অনেকটাই, দাবি অভিনেত্রীর। উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন, “তাবড় অভিনেতাদের পাশাপাশি রূপটানশিল্পী, অ্যাকশন মাস্টারও খ্যাতনামী। কর্ণ জোহরের মেকআপশিল্পী অভিষেক স্যর আমায় সাজিয়েছেন। এঁরা প্রত্যেকে ভীষণ বিনয়ী। উঁচু গলায় কথা পর্যন্ত বলেন না! সারা ক্ষণ সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত।” একই সঙ্গে তিনি আশাতীত সাম্মানিক পেয়েছেন! ফিরদৌসির আক্ষেপ, “বাংলায় যখনই সাম্মানিকের কথা ওঠে, প্রত্যেক বার শুনতে হয়, আমাদের এ বারের বাজেট কম। ফলে, আমার যা পাওনা সেটাই পাই না।” এই ছবিতে কাজ করে তিনি না চেয়েই আশাতীত বেশি সাম্মানিক পেয়েছেন!

কাজের সুযোগ, সাম্মানিক— দুটোই বাংলার থেকে বলিউডে বেশি। টলিউডের এই প্রজন্মের অভিনেতারা কি তা হলে মুম্বইবাসী হয়ে যাবেন?

প্রশ্ন শুনে একটু কি থমকে গেলেন ফিরদৌসি? জবাব দেওয়ার আগে একটু সময় নিলেন। তার পর বললেন, “বরাবর বাংলায় কাজ করতে চেয়েছি। এখনও তাই-ই চাই। কিন্তু কাজ না পেলে বলিউডের কথা তো ভাবতেই হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement