নাটকের মহলায় গৌতম ও সঞ্জিতা
নব্বই দশকের গোড়ায় ‘ফেরিওয়ালার মৃত্যু’ নাটকে অভিনয় করতেন। যেখানে তিনি ছিলেন এক সেলসম্যানের ছেলে। সে অভিনয়ের যাঁরা সাক্ষি, ভোলেননি আজও।
আর এই ২০১৭-য় এসে খোদ ফেরিওয়ালারই ভূমিকায় গৌতম হালদার। তবে এ ফেরিওয়ালা, সে ফেরিওয়ালা নয়! এ হল এক স্বপ্নের সওদাগর। এ হল মনের মানুষ। সহজ মানুষ। ছায়া থেকে যে কায়া হয়, আবার কায়া ফেলে ছায়া হয়েই মিলিয়ে যায়। তারই ফাঁকে সে লোকের মনে রং ধরায়। ঢোল্লা আলখাল্লা যার পোশাক। মাথায় রঙিন পাগড়ি। ঝোলা ভর্তি নানা রঙের ওড়না, তার সওদার পসরা।
মৈনাক চক্রবর্তীর লেখা ‘পড়শি বসত করে’ নামের এই নাটকটি ভাস্কর (তীর্থঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। নির্দশনাও তাঁর) আর সুনেত্রার (সঞ্জিতা মুখোপাধ্যায়) গল্প। ভাস্কর কর্পোরেট জগতের। সুনেত্রার সঙ্গে তাঁর প্রেম সেই কলেজবেলা থেকে। মৈনাক তখন কবিতা লিখতেন। মানতেন, জীবন শুধু সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কের খেলা নয়। বরং অন্য কিছু। সেই ভাস্কর এখন ঠিক তার বিপরীত। উচ্চাকাঙ্ক্ষাই যার জীবনের একামাত্র ধারাপাত। একের পর এক সিঁড়ি টপকে যাওয়াটাকেই যে মোক্ষ মানে। ক্রমে এই মোক্ষলাভের গুহায় ঢুকে পড়া ভাস্করকে বড় দুর্ভেদ্য লাগে সুনেত্রার। কাছে থেকেও কেন এত দূরে চলে গেল মানুষটা! কী ভাবে যে এতটা বদলে গেল সে! একাকীত্ব, প্রবল একাকীত্ব ধীরে-ধীরে যেন একমাত্র সঙ্গী হয়ে ওঠে সুনেত্রার। ছেলেমেয়েও নেই যে, আঁকড়ে ধরে ঘুরে দাঁড়াবার চেষ্টা চালাবে!
তখনই সুনেত্রার জীবনে আসে আঁখি (পিয়ালী চট্টোপাধ্যায়)। কে এই আঁখি? সে এক রহস্য-মানবী! আঁখির বিদায়ে আসে ফেরিওয়ালা। প্রথম জন তাঁকে জীবনের ছন্দে ফেরায়, দ্বিতীয় জন ফিরিয়ে দেয় রং (আবহ: মুরারী রায়চৌধুরী)। সুনেত্রা হয়ে যান অন্য মানুষ!
‘কার্টেন কল’ নাট্যদলের এ নাটকটির প্রথম শো ৬ এপ্রিল, বাংলাদেশে। কলকাতায় শো সম্ভবত মে মাসে।